ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

ওসিসহ ৫ জনকে বরখাস্তের নির্দেশ হাইকোর্টের

প্রকাশিত: ২৩:০৭, ২৯ অক্টোবর ২০২১

ওসিসহ ৫ জনকে বরখাস্তের নির্দেশ হাইকোর্টের

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বেগমগঞ্জে নারী নির্যাতনের ঘটনায় ওসিসহ ৫ জনকে বরখাস্ত করে বিভাগীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। যাদের বরখাস্তের নির্দেশ দেয়া হয়েছে তারা হলেন, বেগমগঞ্জ থানার তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুজ্জামান শিকদার, উপপরিদর্শক (এসআই) হাবিবুর রহমান, সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) মফিজুল ইসলাম, স্থানীয় ইউপি সদস্য মোয়াজ্জেম হোসেন সোহাগ ও চৌকিদার আলী আসগর। বিচারপতি মোঃ মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মোঃ কামরুল হোসেন মোল্লার হাইকোর্ট বেঞ্চ এ নির্দেশ দেন। ঘটনাটি আদালতের নজরে আনেন আইনজীবী জেড আই খান পান্না, অনীক আর হক ও আব্দুল্লাহ আল মামুন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি এ্যাটর্নি জেনারেল নওরোজ মোঃ রাসেল চৌধুরী। হাইকোর্টের রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রাষ্ট্রপক্ষের ডেপুটি এ্যাটর্নি জেনারেল নওরোজ রাসেল চৌধুরী। তিনি বলেন, নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে নারীকে বিবস্ত্র করে অবমাননার ঘটনায় সেই সময়ের ওসি ও এএসআইকে বরখাস্তের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। এছাড়া ওই ওয়ার্ডের গ্রাম পুলিশ ও ইউপি সদস্যকে বহিষ্কার ও ভুক্তভোগীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করার কথা বলেছেন আদালত। সে সময়ের ওসি, এসআই ও এএসআইকে সাসপেন্ড করে বিভাগীয় ব্যবস্থা নিতে স্বরাষ্ট্র সচিবকে নির্দেশ দিয়েছেন। এছাড়াও স্থানীয় ইউপি মেম্বার মোয়াজ্জেম হোসেন সোহাগ ও চৌকিদার আলী আসগর সাসপেন্ড করে বিভাগীয় ব্যবস্থা নিতে এলজিআরডি সচিবকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। গত বছরের ২ সেপ্টেম্বর ঘরে ঢুকে স্বামীকে বেঁধে রেখে ৩৭ বছরের নারীকে বিবস্ত্র করে ধর্ষণের চেষ্টা করেন বেগমগঞ্জ উপজেলার একলাশপুর এলাকার দেলোয়ার বাহিনীর সদস্যরা। তারা ওই নারীকে বিবস্ত্র করে নির্মম নির্যাতনের ভিডিও চিত্র ধারণ করে রাখেন। পরে ওই নারীকে হামলাকারীরা কুপ্রস্তাব দেন। তিনি তাতে রাজি না হওয়ায় তারা ধারণ করা ভিডিও চিত্র ৪ অক্টোবর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আপলোড করলে তা ভাইরাল হয়। এতে ঘটনাটি জানাজানি হয় এবং সারাদেশে প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। এর আগে গত বছরের ৫ অক্টোবর ঘটনাটি আদালতের নজরে আনার পর ফুটেজ সরাতে নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। সিডি বা পেনড্র্রাইভে কপি রেখে ভিডিও ফুটেজ সরাতে বিটিআরসির চেয়ারম্যানকে এ নির্দেশ দেয়া হয়। এছাড়া ওই নারীর পরিবারকে সব ধরনের নিরাপত্তা দিতে নোয়াখালীর পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দেয়া হয়। একইসঙ্গে ঘটনার বিষয়ে ভিকটিমের বক্তব্য নিতে পুলিশের কোন অবহেলা আছে কিনা তা অনুসন্ধান করতে একটি কমিটি করে দিয়েছিলেন আদালত। কমিটিকে এ বিষয়ে অনুসন্ধান করে ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে হাইকোর্টের রেজিস্ট্রারের কাছে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়। পরে আদালতের নির্দেশে কমিটির প্রধান ছিলেন চৌমুহনী সরকারী এস এ কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মোঃ আবুল বাশার। সদস্য ছিলেন নোয়াখালীর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) ইসরাত সাদমীন এবং জেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম চৌধুরী। আদালতে ওই কমিটির দেয়া প্রতিবেদনে অবহেলা পাওয়ায় জনপ্রতিনিধি, পুলিশ কর্মকর্তা ও স্থানীয় চৌকিদারের বিষয়ে আদালত যৌক্তিক ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশনা দিতে পারে বলে মত দেয়া হয়। এরপর সেই প্রতিবেদনের ওপর শুনানি শেষে বৃহস্পতিবার রায় দিলেন হাইকোর্ট।
×