ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

ই-কমার্সের সঙ্গে যুক্তদের নিবন্ধন করতে হবে

প্রকাশিত: ২৩:০৫, ২৯ অক্টোবর ২০২১

ই-কমার্সের সঙ্গে যুক্তদের নিবন্ধন করতে হবে

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ দেশে ই-কমার্সের সঙ্গে যুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোকে আগামী দুই মাসের মধ্যে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে রেজিস্ট্রেশন (নিবন্ধন) নিতে হবে এবং বাংলাদেশ ব্যাংকে একটি ডিপোজিট রাখতে হবে। এ বিষয়ে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এছাড়া ‘কপিরাইট আইন, ২০২১’-এর খসড়ায় নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে এই নির্দেশ ও অনুমোদন দেয়া হয়। প্রধানমন্ত্রী ভার্চুয়ালি সভায় অংশ নেন। বৈঠক শেষে সচিবালয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, আজকের বৈঠকে ইভ্যালি বা ই-কমার্স নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এ বিষয়ে মন্ত্রিসভা সিদ্ধান্ত নিয়ে নিয়েছে, আমরা নিজেরাও বসেছিলাম এবং নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। আগামী দুই মাসের মধ্যে একটি প্রিসাইড প্রোগ্রাম করে যারা যারা এ জাতীয় ই-কমার্সের সঙ্গে যুক্ত থাকবে তাদের সবাইকে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। দুই মাসের মধ্যে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। পাশাপাশি বাংলাদেশ ব্যাংকে তাদের একটি ডিপোজিট রাখতে হবে। যাতে কোন রকমের কিছু হলে সেই ডিপোজিট থেকে সবাইকে টাকা ফেরত দেয়া যায়। খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, বিএফআইইউ (বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট) ও অন্যান্য যে ডিজিটাল মনিটরিং প্লাটফর্ম এবং ইন্টেলিজেন্স সংস্থাগুলো রয়েছে তাদের নির্দেশনা দিয়ে দেয়া হয়েছে, তারাও এগুলো পরীক্ষা করে দেখবে যাতে কেউ ফলস কিছু করতে না পারে। পাশাপাশি ব্যাপক ক্যাম্পেনের নির্দেশনা দিয়ে দেয়া হয়েছে। সেখানে মানুষকে বোঝানোর জন্য ব্যাপকভাবে প্রচার চালানোর নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এই যে আমরা তালিকা দিয়ে দিচ্ছি ডিজিটাল প্লাটফর্মে এই প্রতিষ্ঠানগুলো হলো সরকারের অনুমোদিত, সুতরাং কেউ এর বাইরে আর্থিক লেনদেন করবেন না। যদি করেন সেটা আপনার নিজ দায়িত্ব। সেটার দায়িত্ব সরকার নেবে না। কপিরাইট আইনের খসড়ার অনুমোদন ॥ ‘কপিরাইট আইন, ২০২১’-এর খসড়ার নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, মন্ত্রিসভা বৈঠকে ‘কপিরাইট আইন, ২০২১’-এর খসড়ার নীতিগত অনুমোদন দেয়া হয়েছে। প্রস্তাবিত আইনে অনেক সংজ্ঞা দেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, প্রথম প্রকাশ হওয়ার পর ৬০ বছর পর্যন্ত কপিরাইট থাকবে। এক্ষেত্রে স্বত্বাধিকারী যদি মারাও যান, তাহলে প্রথম দিন থেকে ৬০ বছর পর্যন্ত স্বত্বাধিকার পাবেন। ৬০ বছর পর স্বত্বাধিকারের কী হবে- এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ৬০ বছর পর সবার জন্য উন্মুক্ত হয়ে যাবে। ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, ধরুন একজন গান গাইল। সে গানের স্বত্বাধিকার তার। ৬০ বছর আগে যদি অন্য কেউ সে গান গায় তাহলে তাকে আইন অনুযায়ী টাকা দিতে হবে। যদি তিনি আপনাকে অনুমতি না দিয়ে থাকেন। খসড়া আইনে শাস্তির ব্যবস্থা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, শাস্তির জন্য তিনটি ধারা রয়েছে। এখানে অনেক বিষয়ে শাস্তি আছে। প্রতিটি বিষয়ের জন্য আলাদা-আলাদা শাস্তির বর্ণনা রয়েছে। উদাহরণ টেনে খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, যদি কেউ ইচ্ছাকৃতভাবে কপিরাইট বিদ্যমান রয়েছে, এমন কোন কর্মের অধিকার লঙ্ঘনকারীর অনুলিপি তৈরি করেন, তাহলে সর্বনিম্ন ২ লাখ টাকা অথবা ২ বছরের কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে। মন্ত্রিসভা বৈঠকের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের হার ৬১ শতাংশ ॥ চলতি বছরের ১ জুলাই থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তিন মাসে মন্ত্রিসভা বৈঠকে নেয়া সিদ্ধান্তের বাস্তবায়নের হার ৬১ দশমিক ৫৪ শতাংশ। যা ২০২০ সালের এ সময়ে ছিল ৪৫ দশমিক ৭১ শতাংশ। বৃহস্পতিবার মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, চলতি বছরের ১ জুলাই থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তিন মাসে মন্ত্রিসভার ৪টি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এসব বৈঠকে মোট ২৬টি সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এর মধ্যে ১৬টি সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন হয়েছে এবং ১০টি সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নাধীন রয়েছে। এ সময়ের মধ্যে একটি চুক্তি অনুমোদন করা হয়েছে। এছাড়া ১০টি আইন সংসদে পাস হয়েছে। খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ২০২০ সালের একই সময়ে (১ জুলাই থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর) মন্ত্রিসভার ৯টি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এর মধ্যে ৭০টি সিদ্ধান্ত নেয়া হয়, আর বাস্তবায়ন হয় ৩২টি। বাস্তবায়নাধীন রয়েছে ৩৮টি সিদ্ধান্ত। তিনি আরও জানান, এ সময়ের মধ্যে ৩টি নীতি বা কর্মকৌশল ও ৬টি চুক্তির অনুমোদন দেয়া হয়। সংসদে পাস হয় ৮টি আইনের।
×