ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

হামলা করে সার্বভৌমত্ব হুমকির মধ্যে ফেলে দেয়া হয়েছে

প্রকাশিত: ২৩:৩১, ২৮ অক্টোবর ২০২১

হামলা করে সার্বভৌমত্ব হুমকির মধ্যে ফেলে দেয়া হয়েছে

বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার ॥ গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে কুমিল্লাসহ সারাদেশের বিভিন্ন জায়গায় সাম্প্রদায়িক হামলা ঘটেছে। রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিলের উদ্দেশে হামলা করে দেশের সার্বভৌমত্বকে হুমকির মধ্যে ফেলে দেয়া হয়েছে। দেশবিরোধী কুচক্রী মহলের ইশারায় হামলা হলেও তা রুখতে প্রশাসন এবং সরকার ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। নৈতিক সমাজ প্রতিষ্ঠা ছাড়া সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা প্রতিহত করার কোন পথ নেই। কুমিল্লায় কোরান অবমাননা ও সাম্প্রদায়িক হামলার প্রতিবাদে বুধবার সকালে রাজধানীর শাহবাগ জাতীয় জাদুঘরের সামনে ‘নৈতিক সমাজ’ এর ব্যানারে আয়োজিত এক মানববন্ধনে বক্তারা এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রীস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি ড. নিম চন্দ্র ভৌমিক বলেন, কুমিল্লার পবিত্র কোরান অবমাননাকে কেন্দ্র করে যে সহিংসতা শুরু হয়েছিল তা ছড়িয়ে পড়ে দেশের বিভিন্ন জায়গায়। একটি গভীর ষড়যন্ত্র এর পেছনে ছিল। বঙ্গবন্ধু হত্যার পরে ৭২ এর সংবিধানকে পাল্টে বৈষম্যমূলক করা হয়েছে। সাম্প্রদায়িকতা, ধর্মান্ধতাকে উস্কে দেয়া হয়েছে। গণতান্ত্রিক দেশ হিসেবে স্বীকৃত দেশগুলোতে প্রধান প্রধান দলগুলো সংবিধান, ইতিহাস-ঐতিহ্যকে মেনে নেয়। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতেও সেটা আছে। কিন্তু এদেশে সন্ত্রাসবাদ, জঙ্গীবাদকে আশ্রয় দেয়া পক্ষগুলো এসব মেনে নেয়নি। ড. সাইদুর রহমান সেলিম বলেন, এটি শুধু সাম্প্রদায়িক সহিংসতাই নয়, এর মধ্যে একটা গভীর ষড়যন্ত্র রয়েছে। কেউ কেউ হয়তো রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিল করার জন্য ঘটনাটি ঘটিয়েছেন। আবার কেউ হয়তো এই দেশের সার্বভৌমত্বকে হুমকির মুখে ফেলে দেয়ার জন্য ঘটনাটি ঘটিয়েছেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে বিনীত অনুরোধ জানাই, যারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে তাদের যেন দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হয় এবং ভবিষ্যতে যেন তারা আর কখনই এরকম সাম্প্রদায়িক ঘটনা ঘটনোর চিন্তাও না করে। প্রধান অতিথির বক্তব্যে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডাঃ জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেছেন, সম্প্রতি দেশের বিভিন্ন জায়গায় ঘটে যাওয়া সাম্প্রদায়িক হামলাগুলো সম্পূর্ণ প্রশাসন ও সরকারের ব্যর্থতার কারণে ঘটেছে। আমরা নৈতিক পন্থা অনুসরণ করিনি বলে এ ঘটনাগুলো ঘটেছে। নৈতিক সমাজ প্রতিষ্ঠা ছাড়া সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা বন্ধ করার আর কোন পথ নেই। আমাদের সম্মিলিতভাবে রাজনীতিকে সবার জন্য উন্মুক্ত করে দিয়ে একটি নৈতিক সমাজ বিনির্মাণ করতে হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, আপনি যদি না নামেন তাহলে এই সহিংসতা বন্ধ হবে না। তাই আমার একটা অনুরোধ- আপনি বায়তুল মোকাররমে একটা মিটিং ডাকুন। সেখানে হিন্দু পুরোহিত, আলেম ও খ্রীস্টান সম্প্রদায়ের নেতারাও থাকবেন। সবার সঙ্গে আলাপ করেন। আপনি মাদ্রাসার দরজা খুলে দেন; সেখানে সব ধর্মের ছাত্রদের সহাবস্থান তৈরি করুন। সেখানে হিন্দু, মুসলমান, বৌদ্ধ, খ্রীস্টান সকল ধর্মের মানুষ পড়াশোনা করবে। সংগঠনের আহ্বায়ক সাবেক মেজর জেনারেল আমসআ আমিনের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে আরও বক্তব্য দেন সাবেক এডিশনাল সেক্রেটারি ড. সাইদুর রহমান সেলিম, বীর মুক্তিযোদ্ধা মোজাম্মেল হক, বাংলা বিপ্লবের সভাপতি সাকিব আলী প্রমুখ। সাম্প্রদায়িক হামলার প্রতিবাদে স্বাচিপের মানববন্ধন ॥ দেশজুড়ে সাম্প্রদায়িক হামলা, ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগের প্রতিবাদে মানববন্ধন ও সম্প্রীতি সমাবেশ করেছে স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিপ)। বুধবার রাজধানীর শাহবাগ জাতীয় জাদুঘরের সামনে এ মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনটির সহ-সভাপতি অধ্যাপক ডাঃ আব্দুর রউফ সরদার।
×