ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

ভোগান্তির ভিন্ন নাম

প্রকাশিত: ২১:১৮, ২৮ অক্টোবর ২০২১

ভোগান্তির ভিন্ন নাম

রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন শহরে অন্যান্য যানবাহনের মতো মোটরসাইকেলও দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। মূলত অনলাইন এ্যাপভিত্তিক রাইড শেয়ারিং-এর জন্যই মোটরসাইকেলের ব্যবহার বৃদ্ধি পাচ্ছে। নগরীতে প্রচ- যানজট এড়াতে বর্তমান সময়ে যাত্রীরা এই সুবিধা নিয়ে থাকেন। কিন্তু চালকরা ট্রাফিক আইন না মেনে বেপরোয়া গতিতে মোটরসাইকেল চালানো, ভুয়া আইডি, ভুয়া ঠিকানা ব্যবহার, অতিরিক্ত ভাড়া দাবি এবং যাত্রীদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণসহ নানা রকমের সমস্যা করে থাকেন। ফলে মোটরসাইকেল চালকদের এসব সমস্যার প্রেক্ষিতে পথচারী এবং নগরবাসীদের জন্য এটি একটি আতঙ্কের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে এই পরিবহন সেবায় যাত্রীরা বিভিন্ন ধরনের ভোগান্তির স্বীকার হচ্ছেন। পথচারী ও যাত্রীদের এসব ভোগান্তির কারণ হচ্ছে অপ্রাপ্তবয়স্ক বা অদক্ষ চালক এবং মাতাল অবস্থায় মোটরসাইকেল চালানো। এতে যেমন সড়কে পথচারী এবং যাত্রীদের চলাচল বিঘিœত হচ্ছে তেমনিভাবে নিরাপদ সড়ক আইনের প্রয়োগও ব্যাহত হচ্ছে। দ-বিধির ৩৩৮ ক ধারা অনুযায়ী, কেউ যদি বেপরোয়া গতিতে বা অবহেলা করে জনপথে গাড়ি চালিয়ে কোন ব্যক্তিকে গুরুতর আহত করেন, তাহলে দায়ী ব্যক্তি দুই বছর কারাদণ্ড বা অর্থদ- কিংবা উভয় দ-ে দ-িত হবেন। দ-বিধির ৩০৪ খ ধারায় বলা হয়েছে, যদি বেপরোয়া যান চালিয়ে জনপথে কারও মৃত্যু হয় তাহলে দায়ী চালক তিন বছর কারাদণ্ড বা অর্থদ- অথবা উভয় দ-ে দ-িত হবেন। কেউ যদি উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে কোন ব্যক্তিকে হত্যা করেন তাহলে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে মৃত্যুদ-ের শাস্তির বিধান রয়েছে। মোটরযান আইন অনুযায়ী, বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালানোর শাস্তি হলো ছয় মাসের কারাদণ্ড বা ৫০০ টাকা জরিমানা কিংবা উভয় দ-। কারাদণ্ড, অর্থদ- এবং মৃত্যুদ- থাকলেও বেপরোয়া গতিতে মোটরসাইকেল চালানো যেন থামছেই না! অদক্ষতা, অপ্রাপ্ত বয়স্ক এবং ট্রাফিক আইন না মেনে চলার কারণেই বেপরোয়া গতিতে মোটরসাইকেল চালানো বন্ধ হচ্ছে না। বেপরোয়া মোটরসাইকেল চালিয়ে আহত ও নিহত হলেও শাস্তির নজির নেই বলেই এই সমস্যা সমাধান করা সম্ভব হচ্ছে না। এক্ষেত্রে ট্রাফিক আইন অমান্যকারী এবং বেপরোয়া গতিতে মোটরসাইকেল চালানো চালকদের বিরুদ্ধে যদি সঠিক সময়ে শাস্তি প্রদান করা যেত তাহলে এই সমস্যা সমাধানের পথ সুগম হয়ে যেত। বেপরোয়া গতি, জাল ড্রাইভিং লাইসেন্স, ভুয়া সনদ এবং ট্রাফিক আইন অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে ট্রাফিক পুলিশকে সততার সঙ্গে জিরো টলারেন্স নীতি অবলম্বন করতে হবে। আইন প্রয়োগের ক্ষেত্রে ট্রাফিক পুলিশকে আরও কঠোরভাবে পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। ড্রাইভিং লাইসেন্স দেওয়ার ক্ষেত্রে বিআরটিএ- কে দক্ষতা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে লাইসেন্স প্রদানের জন্য সততার সঙ্গে কাজ করে যেতে হবে। যোগ্যতা ও দক্ষতার ভিত্তিতে লাইসেন্স প্রদান করলে বেপরোয়া মোটরসাইকেল চালানো নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে। অন্যদিকে, বেপরোয়া মোটরসাইকেল চালানোর কারণে চালক প্রয়োজনে-অপ্রয়োজনে হর্ন বাজিয়ে চলেছে, ফলে নগরীতে অনেক শব্দদূষণ হচ্ছে এতে মানুষের স্বাস্থ্য এবং আমাদের পরিবেশকে মারাত্মক ঝুঁকিতে ফেলে দিয়েছে। বেপরোয়া মোটরসাইকেল, কারণে-অকারণে হর্ন বাজানো এবং মোটরসাইকেলের দ্রুততম বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণ করা না হলে দেশের অর্থনৈতিক এবং সামাজিক ক্ষেত্রে মারাত্মক প্রভাব ফেলবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে
×