ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

বন্ধুকে বিয়ে করলেন জাপানের রাজকুমারী মাকো

প্রকাশিত: ২৩:২৪, ২৭ অক্টোবর ২০২১

বন্ধুকে বিয়ে করলেন জাপানের রাজকুমারী মাকো

জনকণ্ঠ ডেস্ক ॥ অবশেষে জাপানের রাজকুমারীর বিয়ে নিয়ে চলা কয়েক বছরের বিতর্কের অবসান হলো। বিয়ের পিঁড়িতে বসলেন রাজকুমারী মাকো ও সাধারণ পরিবারে জন্ম নেয়া তার সহপাঠী ও দীর্ঘদিনের বন্ধু কেই কোমুরো। স্থানীয় সময় মঙ্গলবার তারা বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। বিয়ের সঙ্গে সঙ্গে প্রিন্সেস মাকো বঞ্চিত হলেন রাজকীয় সব অধিকার থেকে। খবর বিবিসির। স্থানীয় গণমাধ্যমগুলোর প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, প্রিন্সেস মাকো বিয়ে রেজিস্ট্রি করার জন্য তার টোকিওর বাড়ি থেকে বের হন স্থানীয় সময় মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে। নিয়ম অনুযায়ী, জাপানী রাজবংশের বাইরে সাধারণ পরিবারের কাউকে বিয়ে করলে রাজপুত্র কিংবা রাজকুমারীকে রাজকীয় পদমর্যাদা হারাতে হয় এবং রাজপ্রাসাদের সবকিছু থেকে বঞ্চিত হন। সহপাঠীর সঙ্গে প্রেম করলেও বিয়ের সিদ্ধান্ত নেয়া কঠিন ছিল রাজকুমারী মাকোর জন্য। কিন্তু রাজপ্রাসাদের জৌলুস জীবনযাপন ছেড়ে সাধারণ ঘরের ছেলেকেই বিয়ে করলেন তিনি। নব দম্পতি একটি সংবাদ সম্মেলন করেন। জাপানের রাজপ্রাসাদের ইম্পেরিয়াল হাউসহোল্ড এজেন্সি জানিয়েছে, এ কারণে প্রিন্সেস মাকোর মধ্যে এক ধরনের উত্তেজনা কাজ করছে। এর আগে ২৩ অক্টোবর জাপানের রাজকুমারী মাকোর ৩০তম জন্মদিন ছিল। শেষবারের মতো রাজপ্রাসাদে জন্মদিন পালন করেন তিনি। ২০১২ সালে জাপানের ইন্টারন্যাশনাল ক্রিশ্চিয়ান ইউনিভার্সিটিতে পরিচয় হয় প্রিন্সেস মাকো ও কেই কোমুরোর। এরপর পরিণয়। ২০১৭ সালে তাদের বাগদানও সম্পন্ন হয়। প্রিন্সেস মাকো বাগদানের ঘোষণা দেয়ার এক বছর পর ২০১৮ সালে তাদের বিয়ে করার পরিকল্পনার কথা জানা গিয়েছিল। কিন্তু তৈরি হয় নানা জটিলতা। পিছিয়ে যায় বিয়ের আয়োজন। দুই বছর পর অবশেষে তা মেনে নেন জাপানের ক্রাউন প্রিন্স ফুমিহিতো। জানা গেছে, বিয়ের পর রাজপ্রাসাদ ছেড়ে স্বামী কেই কোমুরোর সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমাবেন প্রিন্সেস মাকো। সেখানে আইনজীবী হিসেবে কাজ করেন কোমুরো। জাপানের আইন অনুযায়ী, রাজপরিবারের কোন নারী সদস্য বাইরের কোন সাধারণ পুরুষকে বিয়ে করলে তার রাজকীয় মর্যাদা হারান। পুরুষ সদস্যদের ক্ষেত্রে অবশ্য এই নিয়ম নেই। প্রিন্সেস মাকো রাজকীয় মর্যাদা হারানোর পাশাপাশি রাজপরিবারের সদস্যদের বিয়ের ক্ষেত্রে যেসব আনুষ্ঠানিকতা পালন করা হয়, সেগুলোও পরিহার করেছেন। রাজকন্যা চলে গেলে তাকে অর্থ সাহায্য করা হয়, যা দিয়ে তার পরবর্তী জীবন কাটবে। মাকো ১৩ লাখ ডলারের সেই অর্থ নিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন। অর্থাৎ, রাজকীয় তহবিলও প্রত্যাখ্যান করেছেন তিনি। বাড়ি ছাড়ার আগে মা-বাবাকে সম্মান প্রদর্শন করেন। জড়িয়ে ধরেন প্রিয় ছোট বোনকে। তারপর গাড়িতে করে বিয়ে করতে যান নিজের দীর্ঘদিনের বন্ধুকে। মাকোর স্বামী একজন মার্কিন আইনজীবী। বিয়ের পর স্বামীকে নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রেই স্থায়ী হবেন তিনি। জাপানের সংবাদমাধ্যমে কিছুদিন ধরেই মাকো এবং কোমুরোকে নিয়ে আলোচনা চলছে। বিয়ের জন্যই যুক্তরাষ্ট্র থেকে দেশে ফেরেন কোমুরো। জাপানী মিডিয়ার একাংশ এই নবদম্পতিকে প্রিন্স হ্যারি এবং মেগান ম্যার্কেলের সঙ্গে তুলনা করতে শুরু করেছে। জাপানের হ্যারি-মেগান বলা হচ্ছে তাদের।
×