ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

পায়রা সেতুর উদ্বোধন

প্রকাশিত: ২১:১৮, ২৭ অক্টোবর ২০২১

পায়রা সেতুর উদ্বোধন

দেশের দক্ষিণাঞ্চলে নব নির্মিত পায়রা সেতু আমাদের যোগযোগ ব্যবস্থায় নতুন মাত্রা যুক্ত করেছে। দৃষ্টিনন্দন এই সেতু উদ্বোধন করে প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশকে উপহার দিয়েছেন নতুন এক দিগন্ত। উন্নত বাংলাদেশ এখন তার সর্ববিধ কর্মযোগের অব্যাহত ধারায় নিয়তই নিজেকে অতিক্রম করে যাচ্ছে। তারই সফল অভিযোজন পায়রা সেতুর শুভযাত্রা। গত রবিবার গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী পটুয়াখালীর দুমকি উপজেলার লেবুখালীতে খরস্রোতা পায়রা নদীর ওপর দ্বিতীয় বৃহৎ চার লেনের আধুনিক প্রযুক্তিসম্পন্ন নয়নাভিরাম পায়রা সেতু উদ্বোধন করেন। দেড় হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এই সেতু পর্যটনের অনন্য স্থান কুয়াকাটা এবং পায়রা বন্দরের সঙ্গে সড়ক সংযোগ ঘটাবে। নদী বিধৌত আবহমান বাংলার অপর নৈসর্গিকতায় বিমুগ্ধ দেশ থেকে দেশান্তরের মানুষ। প্রকৃতির অকৃত্রিম দানে ভরপুর এমন রূপশৌর্য অবগাহন করতে শুধু আপন দেশের মানুষরাই নয়, ভিন দেশী পর্যটকদের কলকাকলিতেও মুখরিত হয়েছে দর্শনীয় জায়গাগুলো। আর সেই অবারিত বৈভবকে উপভোগ করতে এতদিনের যাত্রাপথের দুর্ভোগকে পেছনে ফেলে নবউদ্যমে ভ্রমণকে নিরবচ্ছিন্ন প্রশান্তিতে পূর্ণ করা হলো। মনোরম প্রাকৃতিক প্রাচুর্যে ভরপুর বাংলাদেশ সত্যিই এক অনিন্দ্যসুন্দর শ্যামল প্রান্তর। নদ-নদীর অববাহিকায় নিরন্তরণ বয়ে চলা আবহমান বাংলার নরম পলিমাটির উর্বরতা শক্তি ও এদেশের মানুষের জীবনমানের এক অফুরন্ত প্রাণচাঞ্চল্য। যা প্রকৃতির অবারিত উপহার। প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে উঠে আসে একসময় আমাদের এই দেশই বিশ্বে পরিচিতি লাভ করে জল, জলোচ্ছ্বাস, বন্যা, দুর্ভিক্ষসহ হরেক রকম সমস্যা জর্জরিত হিসাবে। মাত্র ১২ বছরের শাসনে পুরো দেশের সার্বিক অবয়বের যে আমূল পরিবর্তন তাও বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার মহাপ্রত্যয়। তার সাথে একাত্ম হয়েছে সরকার প্রধানের আধুনিক ও প্রযুক্তির উন্নত বাংলাদেশ নির্মাণের কঠিন অঙ্গীকার। উন্নয়নশীল দেশ গড়ার সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যমাত্রায় দেশকে এগিয়ে নেয়া হচ্ছে আনুষঙ্গিক উন্নয়ন শর্ত পূরণের মধ্য দিয়ে। অবকাঠামোর দৃশ্যমান উন্নয়ন তেমন ধারাবাহিকতার সফল নির্দেশনা। সারা বাংলাদেশের সঙ্গে যোগাযোগ ব্যবস্থায় পর্যটন নগরী কুয়াকাটার যে যাত্রাপথ তা এখন অনেক নির্বিঘœ ফেরি পারাপারের কোন ঝক্কি ঝামেলা নেই। সময়, অর্থ এবং পরিশ্রমের সঙ্কুলান হওয়া ছাড়াও উন্নত বাংলাদেশ তার পরিবহন খাতকেও এক শক্ত অবস্থানে ক্রমশ এগিয়ে দিচ্ছে। বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলের ক্রমাগত উন্নয়নের কিছু চিত্র তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী উচ্ছ্বাস ভরা কণ্ঠে বরিশাল অঞ্চলের এই নতুন ও আধুনিক চেহারায় রূপান্তরকে গভীরভাবে উপলব্ধি করলেন। এখানে শুধু পায়রা সেতু নয়, বরং ইতোমধ্যে নির্মিত হয়েছে পায়রা বন্দর। নতুন পায়রা বন্দর তার কার্যক্রমকে আরও অবারিত করে এক সময়ের পিছিয়ে পড়া দেশের দক্ষিণাঞ্চলকে ভিন্নমাত্রার আঙ্গিকে নিয়ে যেতে খুব বেশি সময় লাগবে না। করোনাকালে সশরীরে উপস্থিত থেকে স্বচক্ষে পায়রা সেতুকে দেখতে না পারার কষ্টও অনুভূত হয়েছে সরকার প্রধানের। সেতুর উদ্বোধন করে হেঁটে চলার যে উপভোগ্য দৃশ্য আপাতত সেখান থেকে বঞ্চিত হওয়ার কথা বললেন তিনি। দেশে উন্নয়নের ক্রমবর্ধমান ধারায় পদ্মা ও পায়রা সেতু এক অনবদ্য সফলতা। অব্যাহত থাকুক প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্নপূরণের অভিযাত্রা।
×