ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

রবির অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ

প্রকাশিত: ২৩:৩৫, ২৬ অক্টোবর ২০২১

রবির অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ

নিজস্ব সংবাদদাতা, শাহজাদপুর, সিরাজগঞ্জ ॥ শাহজাদপুরে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৪ শিক্ষার্থীর চুল কেটে দেয়ার প্রমাণ পেয়েছে তদন্ত কমিটি। বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও বাংলাদেশ অধ্যয়ন বিভাগের শিক্ষক ফারহানা ইয়াসমিনকে অভিযুক্ত করে তার বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ করেছে কমিটি। তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২৬ সেপ্টেম্বর সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও বাংলাদেশ অধ্যয়ন বিভাগের পরীক্ষা ছিল। পরীক্ষা হলে প্রবেশ পথে শিক্ষক ফারহানা ইয়াসমিন নিজ হাতে ১৪ শিক্ষার্থীর চুল কেটে দেন। সোমবার দ্বিতীয় দফা আন্দোলনে তৃতীয় দিনের মতো শিক্ষক ফারহানার স্থায়ী বহিষ্কারের দাবিতে ক্যাম্পাসে অবস্থান নিয়ে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। এদিকে শিক্ষক ফারহানাকে স্থায়ীভাবে বরখাস্তের দাবিতে তিনদিন ধরে উত্তাল হয়ে আছে রবি ক্যাম্পাস। গত রবিবার সকালে বিসিক বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী ক্যাম্পাসের একাডেমিক ভবন ও কান্দাপাড়া এলাকায় প্রশাসনিক ভবনে তালা দিয়ে বাইরে অবস্থান নেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। তালা দেয়ার ফলে এদিন দুপুর দুইটা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারসহ ৩০ শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী একাডেমিক ভবন-১-এ অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন। প্রায় আট ঘণ্টা তাদের অবরুদ্ধ করে রাখেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। পরে পুলিশ ও সাংবাদিকদের সহযোগিতায় অবরুদ্ধ থেকে মুক্ত হন শিক্ষক-কর্মচারীরা। গত রবিবার দুপুরের দিকে আন্দোলনরত শিক্ষার্থী সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও বাংলাদেশ অধ্যয়ন বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র শামীম হোসেন বিষপানে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। তাকে শাহজাদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। অন্যদিকে একই বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্র আবিদ হাসান নামের আরেক ছাত্র ব্লেড দিয়ে হাত কেটে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। সোমবার শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের বিষয়ে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের রুটিন দায়িত্বে থাকা কোষাধ্যক্ষ আবদুল লতিফ বলেন, ‘রেজিস্ট্রার নিজে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সার্বিক বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন। আমরা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনার চেষ্টা করছি।’ উল্লেখ্য, গত ২৬ সেপ্টেম্বর রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও বাংলাদেশ অধ্যয়ন বিভাগের ১ম বর্ষের ১৪ শিক্ষার্থীকে জোর করে চুল কেটে দেয়ার অভিযোগ ওঠে শিক্ষক ফারহানা ইয়াসমিনের বিরুদ্ধে। এর প্রতিবাদে ২৮ সেপ্টেম্বর থেকে শিক্ষার্থীরা সব পরীক্ষা বন্ধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন। ৩০ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ফারহানাকে সাময়িক বরখাস্ত করে। এই ঘটনা তদন্তে রবীন্দ্র অধ্যয়ন বিভাগের চেয়ারম্যান লায়লা ফেরদৌসকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। কমিটি সরেজমিনে তদন্ত করে বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার সোহরাব আলীর কাছে প্রতিবেদন জমা দেয়। তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২৬ সেপ্টেম্বর সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও বাংলাদেশ অধ্যয়ন বিভাগের পরীক্ষা ছিল। পরীক্ষা হলে প্রবেশপথে অভিযুক্ত শিক্ষক ফারহানা ইয়াসমিন নিজ হাতে ১৪ শিক্ষার্থীর চুল কেটে দেন। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন সম্পর্কে জানতে অভিযুক্ত শিক্ষক ফারহানা ইয়াসমিনের বক্তব্য নেয়ার জন্য একাধিকবার চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। তদন্ত প্রতিবেদনের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার সোহরাব আলী, তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন পেয়ে গত শুক্রবার সিন্ডিকেট সভা ডাকা হয়েছিল। সেখানে আইনগত বিষয়গুলো পর্যালোচনার জন্য ১০ কার্যদিবস সময় নিয়ে সভা মুলতবি করা হয়েছে। এছাড়া ২৭ অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) একটি তদন্ত দল বিষয়টি তদন্ত করতে ক্যাম্পাসে আসবে। তারপর এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
×