ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সিডিউলবিহীন বিমানেই চোরাচালান

প্রকাশিত: ২৩:৩৫, ২৬ অক্টোবর ২০২১

সিডিউলবিহীন বিমানেই চোরাচালান

স্টাফ রিপোর্টার ॥ সিডিউলবিহীন ফ্লাইটে চোরাচালান হয়ে থাকে এমন তথ্যের ভিত্তিতেই অভিযান চালানো হয় বিমানের একটি ফ্লাইটে। সেই অভিযান বৃথা যায়নি। সোমবার সকালেই মিলে যায় মওকা। বিমানের একটি ফ্লাইটের কার্গো হোল থেকে উদ্ধার করা হয় ১২ কেজি সোনা। বিশেষ ট্র্যাকের মাধ্যমে চালানো ওই অভিযানে নেতৃত্ব দেয় শুল্ক গোয়েন্দা অধিদফতর। এযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ফ্লাইট বিজি-৪১৪৮ থেকে ওই স্বর্ণগুলো উদ্ধার করা হয়। যার আনুমানিক বাজার মূল্য আট কোটি ৪৪ লাখ টাকা। এরপর সোমবার কাকরাইলে কাস্টমস গোয়েন্দা অধিদফতরের মহাপরিচালক (ডিজি) ড. আবদুর রউফ জানালেন কিভাবে নন সিডিউল ফ্লাইটে সোনা চোরাচালান ঘটে থাকে। ডিজি জানান, চোরাচালানের সংবাদের ভিত্তিতে সকালে ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিমানবন্দরে অবস্থান নেয় কাস্টমস গোয়েন্দা বিভাগ। রাত ৯টার দিকে শাহজালাল বিমানবন্দরে ফ্লাইটটি অবতরণ করে। এরপর এতে তল্লাশি চালায় বিমানবন্দরের কাস্টমস গোয়েন্দারা। এ সময় বিমানটির কার্গো হোলের যেখানে মালামাল রাখা হয়) মাঝে স্কচটেপে মোড়ানো তিনটি প্যাকেটে মেলে চারটি সোনার বার। শুল্ক গোয়েন্দাদের ভাষ্য অনুযায়ী প্লেনের কার্গো হোলের ভেতরে বিমানের ক্রু কিংবা যাত্রী কেউ যেতে পারে না। প্লেনের নিচ থেকে এখানে রাখা হয় মালামাল। যার সুযোগ নেয় চোরাকারবারিরা। কিন্তু এক্ষেত্রে প্লেনের কোন কর্মচারী জড়িত কি না প্রশ্নে ডিজি আবদুর রউফ বলেন-আমরা বিমান কর্তৃপক্ষের কাছে কর্মচারীদের তথ্য চেয়েছি। তারা দিলে আমরা সেটা পুলিশকে হস্তান্তর করব। আমরা প্লেনটি আটক করেছিলাম। সাধারণত যেসব বাহনে চোরামাল উদ্ধার হয় যেখানে যানবাহন ও মালামাল দুইটাই জব্দ হয়। কিন্তু বিমানটির একটু পরই জেদ্দায় রওনা হওয়ার কথা ছিল। আর আমাদের আটকের কারণে প্রায় দুই ঘণ্টার মতো দেরি হয়ে যায়। এছাড়া প্লেনে ৩০০ জনের ফ্লাইট ছিল। সে কারণে আমরা এটিকে অন্তর্বর্তীকালীন সময়ের জন্য জামিন দিয়ে দেই। ডিজি আব্দুুর রউফ বলেন- এ ধরনের কার্গো হোলে সোনা চোরাচালান একটি বিশেষ শ্রেণীর লোকজন ছাড়া কেউ করাার কথা নয়। স্বর্ণ বারগুলো অবৈধভাবে সরকারী শুল্ক ফাঁকি দিয়ে চোরাচালানের উদ্দেশ্যে দেশে আনা হয়। যা পরবর্তীতে যে কোন পথে বিমানবন্দর সীমানার বাইরে পাচারের আশঙ্কা ছিল। এ ঘটনায় বিভাগীয় মামলা এবং একটি ফৌজদারি মামলা দায়ের করা হয়েছে। তিনি আরও জানান- চলতি বছরে এখন পর্যন্ত ৬৬ দশমিক ৯৬৪ কেজি স্বর্ণ আটক করেছে কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতর। যার আনুমানিক বাজার মূল্য প্রায় ৪৭ কোটি টাকা। এর আগে ২০২০-২১ অর্থবছরে ১৭৪ দশমিক ৪৯ কেজি এবং ২০১৯-২০ অর্থবছরে ১৮০ দশমিক ৩৫ কেজি স্বর্ণ আটক করা হয়। ড. আবদুর রউফ বলেন, আমাদের দেশের জুয়েলারি মালিক সমিতি স্বর্ণ আমদানিতে ভ্যাট, ট্যাক্স কমাতে বলে। তাহলে তারা আমদানি করবে। কিন্তু আমরা এতে যুক্তি দেখি না। যেখানে ওষুধ আমদানিতে ১৭ শতাংশ ভ্যাট দিতে হয়, রেস্টুরেন্টে গেলে ভ্যাট দিতে হয়, সেখানে স্বর্ণ আমদানিতে কেন ভ্যাট কমাব। আমাদের পাশের দেশে এমন গায়ক আছেন যিনি কেজি পরিমাণ স্বর্ণ নিজের শরীরে ব্যবহার করেন। কিন্তু তারা তাদের ট্যাক্স, ভ্যাটের পরিমাণ কমায় না। তাদের রুলস আরও অনেক কঠিন। পৃথিবীর অনেক দেশে আমাদের তুলনায় অনেক বেশি ভ্যাট। এটা আরও বাড়াতে হবে কিন্তু কমানোর সুযোগ নেই।
×