ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

শেরপুর সদরে ১৩ ইউপির ৯টিতেই আ’লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী

প্রকাশিত: ১৭:২৯, ২৫ অক্টোবর ২০২১

শেরপুর সদরে ১৩ ইউপির ৯টিতেই আ’লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী

নিজস্ব সংবাদদাতা, শেরপুর ॥ শেরপুর সদর উপজেলার ১৪টি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) মধ্যে আগামী ১১ নভেম্বর চেয়ারম্যান পদে ১৩টিতে অনুষ্ঠিত হচ্ছে নির্বাচন। ওই ১৩টিতেই আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী থাকার পরও ৯টিতেই রয়েছেন দলের বিদ্রোহী প্রার্থী। এতে ওইসব ইউনিয়নে দলের জয়-পরাজয়ের হিসেব জটিল হয়ে উঠতে পারে বলে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহল মনে করছেন। জানা যায়, শেরপুর সদর উপজেলার কামারেরচর ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পান বর্তমান চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান হাবিব। কিন্তু এ ইউনিয়নে দলের সর্বাধিক ৯ জন মনোনয়নপ্রত্যাশী থাকার পরও অপর ৮ জনসহ বিএনপি, জাপা বা অন্য কোন দলের প্রার্থী না থাকায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন তিনি। চরশেরপুর ইউনিয়নে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি রফিকুল ইসলাম মিল্টনকে দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হলেও সেখানে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন গতবারের নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে বিজয়ী ও জেলা কৃষক লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বর্তমান চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন সুরুজ। গাজীরখামার ইউনিয়নে স্থানীয় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বর্তমান চেয়ারম্যান আওলাদুল ইসলামকে দ্বিতীয় দফায় মনোনয়ন দেওয়া হলেও সেখানে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন সদর উপজেলা কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক, সাবেক চেয়ারম্যান খলিলুর রহমান। পাকুড়িয়া ইউনিয়নে স্থানীয় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি বর্তমান চেয়ারম্যান আলহাজ্ব হায়দার আলীকে দ্বিতীয় দফায় মনোনয়ন দেওয়া হলেও সেখানে এবারও বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আফজাল হোসেন। ভাতশালা ইউনিয়নে মহিলা আওয়ামী লীগ নেত্রী বর্তমান চেয়ারম্যান নাজমুন নাহারকে দ্বিতীয় দফায় মনোনয়ন দেওয়া হলেও সেখানে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন শামীম হোসেন। লছমনপুর ইউনিয়নে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল হাই দলীয় মনোনয়ন পেলেও সেখানে এবারও বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন বর্তমান চেয়ারম্যান সেলিম মিয়া। এছাড়া আবুল কালাম নামে মনোনয়নবঞ্চিত স্থানীয় অপর এক নেতাও বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন। চরমোচারিয়া ইউনিয়নে স্থানীয় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মিজানুর রহমান বাবুল তালুকদারকে দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হলেও সেখানে এবারও বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন মনোনয়নবঞ্চিত পৌর যুবলীগ নেতা ও সদ্য পদত্যাগী জেলা পরিষদ সদস্য এস এম সাব্বির আহমেদ খোকন। বলাইয়েরচর ইউনিয়নে স্থানীয় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মনিরুল আলমকে দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হলেও সেখানে এবারও বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন বর্তমান চেয়ারম্যান ইয়াকুব আলী। এছাড়া আওয়ামী লীগ ঘরানার হিসেবে পরিচিত সাবেক চেয়ারম্যান মোজাহিদুল ইসলাম সেলিমও রয়েছেন প্রার্থী। কামারিয়া ইউনিয়নে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি, হুইপ আতিউর রহমান আতিক এমপির অনুজ, বর্তমান চেয়ারম্যান আব্দুল বারী চাঁনকে পরিবর্তন করে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা, সাবেক চেয়ারম্যান সারোয়ার জাহানকে দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হলেও সেখানে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন হুইপ আতিকের বড়ভাই ইসমাইল হোসেন ও জেলা কৃষক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক, সাবেক চেয়ারম্যান নূরে আলম সিদ্দিকী। তবে ইসমাইল হোসেন শেষ পর্যন্ত মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নিচ্ছেন- এমনটাই বলছে দলীয় সূত্র। রৌহা ইউনিয়নে স্থানীয় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি, সাবেক চেয়ারম্যান সাইফুজ্জামান সোহেলকে দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হলেও এখানে এবারও বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন জেলা কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক বর্তমান চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম মিজু। এ ব্যাপারে শেরপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট চন্দন কুমার পাল পিপি বলেন, আওয়ামী লীগের মতো একটি বড় দলে দু-একজন মনোনয়নবঞ্চিত ব্যক্তি প্রার্থী হতেই পারেন। এতে দলীয় প্রার্থীর বিজয়ে কোনো প্রভাব পড়বে না। দলের নেতা-কর্মীরা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ এবং সর্বোপরি তারা ঐক্যবদ্ধ হয়ে দলীয় প্রার্থীর পক্ষেই কাজ করে নৌকার বিজয় নিশ্চিত করবেন। তবে যারা দলীয় সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন, তাদেরকে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। শেষ সময়েও তারা প্রত্যাহার না করলে দলের কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। উল্লেখ্য, সদর উপজেলার ১৪টি ইউনিয়নে প্রার্থীতা প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ২৬ অক্টোবর।
×