ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

আবার ফিফটি নাইমের

মুশফিকের ফেরা ঝড়ো অর্ধশতকে

প্রকাশিত: ২২:৫৪, ২৫ অক্টোবর ২০২১

মুশফিকের ফেরা ঝড়ো অর্ধশতকে

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ বেশ খারাপ সময় যাচ্ছিল মুশফিকুর রহিমের। ব্যাট হাতে রান পাচ্ছিলেন না। এমনকি প্রাথমিক রাউন্ডেও নিজেকে সেভাবে মেলে ধরতে পারেননি। তবে অভিজ্ঞ এই ব্যাটসম্যানের ওপর আস্থা রেখে গেছে টিম ম্যানেজমেন্ট। এমনকি অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ও বিশ্বকাপ দলের বাইরে থাকা অভিজ্ঞ তামিম ইকবাল দৃঢ় প্রত্যয় জানিয়েছিলেন সময়মতোই জ্বলে উঠবেন মুশফিক। সেটি সত্য হয়েছে মর্যাদার সুপার টুয়েলভ পর্ব শুরু হতেই। রবিবার শারজাতে সুপার টুয়েলভে বাংলাদেশের প্রথম ম্যাচেই শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ক্যারিয়ারের ষষ্ঠ অর্ধশতক হাঁকিয়েছেন তিনি। মাত্র ৩২ বলে ৫০ ছোঁয়ার পর অপরাজিত থেকেছেন ৩৭ বলে ৫ চার, ২ ছক্কায় ৫৭ রানে। এছাড়া চলতি বিশ্বকাপে নিজের দ্বিতীয় ও ক্যারিয়ারের চতুর্থ ফিফটি হাঁকিয়েছেন বাঁহাতি ওপেনার নাইম শেখ। তার কারণে দারুণ শুরু পাওয়া বাংলাদেশ দল বড় সংগ্রহের ভিত পেয়েছে। তিনি ৫২ বলে ৬ চারে ৬২ রান করেন। এই জোড়া ফিফটি চ্যালেঞ্জিং এক সংগ্রহ দেয় বাংলাদেশ দলকে। প্রথম থেকেই দেখেশুনে দারুণভাবে শুরু করেন নাইম। বাঁহাতি এ ওপেনারের দারুণ ব্যাটিংয়ে লিটন দাসের সঙ্গে ওপেনিং জুটিতে ওঠে ৪০ রান। লিটন ফিরে যাওয়ার পরপরই সাকিব আল হাসান (১০) দ্রুত সাজঘরে ফিরেছেন। কিন্তু নাইম দারুণ খেলতে থাকেন। তার সঙ্গে তৃতীয় উইকেটে যোগ দেন মুশফিক। নাইম-মুশফিক জুটি মাত্র ৫১ বলেই ৭৩ রান যোগ করেন। ফলে বড় সংগ্রহের ভিত পেয়ে যায় বাংলাদেশ। নাইম ক্যারিয়ারের চতুর্থ ফিফটি হাঁকান ৪৪ বলে। এরপর কিছুটা আক্রমণাত্মক হতে শুরু করেন তিনি। কিন্তু নাইমকে বেশিদূর এগোতে দেননি বিনুরা ফার্নান্দো। ১৭তম ওভারের প্রথম বলে তাকে পুল করতে গিয়ে মিস টাইমিংয়ে ক্যাচ তুলে দেন নাইম। ক্যাচটি বেশ সহজেই তালুবন্দী করে নেন বিনুরা নিজেই। ফলে ৫২ বলে ৬ চারে ৬২ রান করা নাইমের ইনিংস শেষ হয়ে যায়। এবার প্রাথমিক রাউন্ডে ওমানের বিপক্ষে বাংলাদেশের দ্বিতীয় ম্যাচে বিশ্বকাপে নিজের প্রথম ম্যাচ খেলতে নেমেই ফিফটি হাঁকান নাইম। সেদিন তিনি করেন ৫০ বলে ৩ চার, ৪ ছয়ে ৬৪ রান। এবার করলেন ৬২। তবে তিনি প্রথম উইকেটে লিটনের সঙ্গে ৩৫ বলে ৪০ ও তৃতীয় উইকেটে মুশফিকের সঙ্গে ৫১ বলে ৭৩ রানের দুই জুটিই বাংলাদেশকে বড় ইনিংস গড়ার ভিত দিয়েছে। নাইমের গড়া ভিতে দাঁড়িয়ে মুশফিক ঝড় তোলেন। বরাবরই তিনি শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টি২০ ক্রিকেটে দুর্দান্ত। এদিনও জ্বলে উঠলেন মুশফিক। ইনিংসের অষ্টম ওভারে ক্রিজে এসেছিলেন তিনি। এরপর থেকেই আক্রমণাত্মক মেজাজে ছিলেন। ১১তম ওভারে লেগস্পিনার ভানিন্দু হাসারাঙ্গাকে ছক্কা হাঁকিয়ে শুরু করেন মুশফিক। পরে বিনুরা ফার্নান্দোকেও উড়িয়ে বাউন্ডারির বাইরে ফেলেছেন। ১৪, ১৫, ১৬ ও ১৭ এই চার ওভারেই ১১ রান করে তুলে নেন মুশফিক। শেষ পর্যন্ত ৩২ বলে ছুঁয়ে ফেলেন ষষ্ঠ ফিফটি। ২০১০৯ সালের নবেম্বরে দিল্লিতে ভারতের বিপক্ষে সর্বশেষ অর্ধশতক হাঁকিয়েছিলেন মুশফিক। এরপর গত ১১ ম্যাচে তাকে আর খুঁজেই পাওয়া যায়নি, করেছেন মাত্র ১১.০০ গড়ে ৯৯ রান। এদিনের আগে সর্বশেষ ৭ আন্তর্জাতিক টি২০ ম্যাচে ৬২ (১০.৩৩ গড়) রান করেছেন মুশফিক। এছাড়া এবার দুই প্রস্তুতি ম্যাচেও ৬ ও ১৩ রান করেছিলেন। সে কারণে দুশ্চিন্তায় ছিল বাংলাদেশ। প্রাথমিক রাউন্ডের ৩ ম্যাচে করেন ৩৮, ৬ ও ৫। অবশেষে নিজেকে ফিরে পেলেন বড় ম্যাচেই। মাহমুদুল্লাহরাও বলেছিলেন মূল মঞ্চে নিজেকে ফিরে পাবেন। সেটাই বাস্তব করেছেন মুশফিক। শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থেকেছেন ৩৭ বলে ৫ চার, ২ ছক্কায় ৫৭ রানে। বাংলাদেশের ইনিংসে আর কেউ ছক্কা হাঁকাতে পারেননি এদিন। মুশফিকের ঝড়ো ব্যাটিংয়েই শেষ ৫ ওভারে মাত্র ২ উইকেটে ৫৩ রান তুলে বড় ইনিংস পায় বাংলাদেশ।
×