ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

অপরাধী যে দলেরই হোক তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা

প্রকাশিত: ২২:৪২, ২৫ অক্টোবর ২০২১

অপরাধী যে দলেরই হোক তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, সাম্প্রদায়িক সহিংসতার ঘটনায় অপরাধী যেই হোক, যে দলেরই হোক তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। ২০২২ সালে ৬ লাখ মামলা কমানোর পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। এ বিষয়ে বিচারকদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে। রবিবার ঢাকায় বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে সহকারী জজ ও সমপর্যায়ের বিচারকদের জন্য আয়োজিত ৪২তম বিশেষ বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ কোর্সের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন তিনি। এবারই প্রথমবারের মতো এ ইনস্টিটিউটে একইসঙ্গে দুটি ব্যাচের বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ কোর্স চালু করা হয়েছে। এটা সম্ভব হয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের ফলে। আইনমন্ত্রী বলেন, দেশে প্রায় ৩৭ লাখ মামলার জট তৈরি হয়েছে। এটা নতুন করে তৈরি হয়েছে তা নয়, অতীতের পুঞ্জীভূত সমস্যা। এ জট নিরসন করতে হবে। বিচারকরা হলেন বিচার বিভাগের প্রাণ। বিচার বিভাগের প্রধান চালিকা শক্তি। তাই তাদের দক্ষতা উন্নয়নের জন্য বিচারকদের দেশে-বিদেশে বিভিন্ন ধরনের প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে। বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের সক্ষমতা বাড়ানো হয়েছে। তিনি যোগ করেন, মামলাজট কমানোর জন্য অবকাঠামো নির্মাণের পাশাপাশি বিগত কয়েক বছরে ১১৫২ জন বিচারক নিয়োগ দেয়া হয়েছে। আরও বিচারক নিয়োগ দেয়ার প্রক্রিয়া চলছে। এখন কোন পদ শূন্য হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তা পূরণ করা হচ্ছে। আইনমন্ত্রী বলেন, ছাত্রলীগ বা অন্য লীগ বা অন্য দল, এসব না। যারা অপরাধ করবে তাদের বিচার হবে। সে যে দলেরই হোক, যে গোষ্ঠীরই হোক, যে জাতিরই হোক। কিন্তু অপরাধী অপরাধীই, তার বিচার হবে। কুমিল্লার ঘটনার পর দেশে অস্থিতিশীলতার জন্য পীরগঞ্জসহ ২৪ জেলায় সহিংসতা করা হয়েছিল। এ ঘটনায় যারা জড়িত তাদের আইনের আওতায় এনে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে বিচার করা হবে। কুমিল্লার ঘটনায় একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদে যাদের নাম উঠে আসবে তাদের সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে। তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগ অবশ্যই অসম্প্রাদায়িক রাজনীতি বিশ্বাস করে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের মানুষকেও সেই দীক্ষায় দীক্ষিত করেছেন বলে জনগণ সাম্প্রদায়িক রাজনীতির দিকে ঝুঁকে না। সেক্ষেত্রে কেউ যদি ব্যক্তিস্বার্থে অন্যায় করে সেটাও অন্যায় এবং তাকে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে। সাক্ষী সুরক্ষা আইন করার বিষয়ে অগ্রগতি জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, আমরা আগেও বলেছি, সাক্ষী সুরক্ষা আইনের বিষয়টি সামনে এলে ত্বরিতগতিতে ব্যবস্থা নেয়া হবে। কোভিড-১৯’র প্রেক্ষাপট তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন, বর্তমানে সারাবিশ্ব বদলে গেছে এবং এখন প্রতি নিয়ত বিশ্ব বদলে যাবে। তার সঙ্গে তাল মেলাতে বাংলাদেশকেও বদলাতে হবে। বাংলাদেশ বদলে গেলে বিচারকদেরও বিচারিক কার্যক্রম চালানোর জন্য বদলাতে হবে। আনিসুল হক বলেন, আজকে বাংলাদেশ নতুনভাবে এগিয়ে যাচ্ছে। পুরনো বাংলাদেশ কিন্তু আর নেই। যেখানে ২১ বছর বিচারহীনতার সংস্কৃতি বিরাজমান ছিল। অপরাধীদের বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো যাবে কি-না সে বিষয়ে মানুষের যথেষ্ট সন্দেহ ছিল। সেই সংস্কৃতি বদলে গেছে। এখন বিচারহীনতার সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে বিচারপ্রাপ্তির সংস্কৃতিতে এসেছি। সেজন্য বিচারকদের প্রয়োজনীয়তা এবং মর্যাদা দুটোই বেড়েছে। এই প্রয়োজনীয়তা এবং মর্যাদা ধরে রাখার অবিচ্ছেদ্য অংশীদার হলেন বিচারকরা। বিচারকরা সঠিকভাবে প্রশিক্ষিত হয়ে তাদের দায়িত্ব পালন করলে আদালতের প্রতি জনগণের আশা ও আস্থা বাড়বে। বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আইন ও বিচার বিভাগের সচিব মোঃ গোলাম সাওয়ার, ইনস্টিটিউটের পরিচালক (প্রশিক্ষণ) মোঃ গোলাম কিবরিয়া বক্তৃতা করেন।
×