ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

চাঁদা না দেওয়ায় মোটরসাইকেল শো-রুমে ডাকাতি করেন চক্রটি

প্রকাশিত: ১৪:৫২, ২৪ অক্টোবর ২০২১

চাঁদা না দেওয়ায় মোটরসাইকেল শো-রুমে ডাকাতি করেন চক্রটি

অনলাইন ডেস্ক ॥ পলাতক শীর্ষ সন্ত্রাসী জিসান-শাহাদাতসহ বিভিন্নজনের নাম করে রাজধানীর শ্যামলী, মোহাম্মদপুর ও বসিলা এলাকায় চাঁদা আদায় করে আসছিল একটি চক্র। চক্রটি শ্যামলী এলাকার একটি মোটরসাইকেলের শো-রুমে চাঁদা দাবি করে কিন্তু চাঁদা না দেওয়ায় তারা সেখানে ডাকাতির পরিকল্পনা করেন। পরে ডাকাতি করে নগদ অর্থ লুট করে নেয় চক্রটি। ডাকাতির ঘটনা তদন্তের ধারাবাহিকতায় চক্রের মূলহোতা মো. জহিরুল ইসলাম ওরফে জহিরসহ (৩৩) ছয়জনকে আটক করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। গ্রেফতারকৃত বাকিরা হলেন-মো. জসিম উদ্দিন (৩৪), মো. জাহিদুল ইসলাম শিকদার (২৬), মো. খায়রুল ভূঁইয়া (২০), মো. রাকিব হাসান (২০) ও মো. নয়ন (২৮)। এ সময় ডাকাতিতে ব্যবহৃত চারটি চাপাতি, শো-রুম থেকে লুণ্ঠিত এক লাখ ৯৩ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়। র্যাব জানায়, এ সংঘবদ্ধ চক্রে আট-১০ জন সদস্য রয়েছেন। তারা পলাতক শীর্ষ সন্ত্রাসীদের নাম ভাঙিয়ে মোহাম্মদপুর, বসিলা, শ্যামলী এলাকায় কয়েক বছর ধরে এলাকার ছোট-বড় ব্যবসায়ী, নির্মাণাধীন ভবন মালিকদের কাছ থেকে চাঁদাবাজি করে আসছে। এক্ষেত্রে বিদেশি কোনো নম্বর থেকে ভুক্তভোগীদের কাছে ফোন করে চাঁদা চাওয়া হতো। আজ রবিবার (২৪ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানীর কারওয়ানবাজার র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন। তিনি বলেন, পলাতক জিসান, শাহাদাত, ‘আর্মি’ আলমগীরসহ শীর্ষ সন্ত্রাসীদের নাম করে এলাকার ব্যবসায়ী ও নির্মামানাধীন ভবন মালিকদের কাছ থেকে চাঁদা দাবি করা হতো। হুমকিতে ভুক্তভোগীরা দাবিকৃত চাঁদার পুরো টাকা না দিলেও আংশিক দিতেন। কিন্তু তিন-চার মাস আগে ইডেন অটোজে চাঁদা চাইলেও টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানায় মালিকপক্ষ। এরপরই জহিরের নেতৃত্বে ইডেন অটোজে ডাকাতির পরিকল্পনা করা হয়। গত ১১ অক্টোবর তারা ঢাকা উদ্যান এলাকায় জসিমের বাসায় জহির, জাহিদ, নয়ন, খায়রুল এবং রাকিব একসঙ্গে ডাকাতি করার বিস্তারিত পরিকল্পনা করেন। এদিন সন্ধ্যায় শো-রুম রেকি করেন তারা। জসিম ও জহির ঢাকা উদ্যান কাঁচাবাজার থেকে ডাকাতির জন্য চারটি চাপাতি কেনেন। পরদিন ১২ অক্টোবর সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে তারা শো-রুমে প্রবেশ করেন। এ সময় জসিম শো-রুমের বাইরে অবস্থান করে ওয়াচম্যান হিসেবে কাজ করেন। জহির শো-রুমে ঢুকেই চাপাতি দিয়ে ম্যানেজার সবুজকে আঘাত করেন এবং রাকিব চাপাতি দিয়ে শো-রুমের মোটর টেকনিশিয়ান হাসানকে আঘাত করেন। এ সময় অন্যরা ভাঙচুর করে শো-রুমের দ্বিতীয় তলায় গিয়ে ক্যাশিয়ারকে ভয় দেখিয়ে ক্যাশ বাক্স থেকে নগদ অর্থ লুট করে নেন। তারা মাত্র পাঁচ-ছয় মিনিটে ডাকাতি সম্পন্ন করে বের হয়ে যান। জহির ও জাহিদ লেকসিটিতে জাহিদের বাসায় টাকা নিয়ে যান। পরে সবাই ভাগের টাকা নিয়ে অত্মগোপনে চলে যান। আটক জহির এ চক্রের মূলহোতা উল্লেখ করে তিনি বলেন, অন্যান্যদের সহযোগিতা নিয়ে চুরি, ছিনতাই, ডাকাতি ও চাঁদাবাজিসহ নানাবিধ অবৈধ কাজ করেন জহির। ইডেন অটোজে চাঁদা দাবি করে ফোন আসা বিদেশি নাম্বারটি পরবর্তিতে বন্ধ পাওয়া গেছে। হতে পারে দেশ থেকেই ভিওআইপি'র মাধ্যমে ফোন করে শীর্ষ সন্ত্রাসীদের নাম ভাঙিয়ে চাঁদা চাওয়া হতো। ইডেন অটোজে চাঁদা না দেওয়ায় তারা সেখানে ডাকাতির পরিকল্পনা করেন। তাদের ধারণা, এর মাধ্যমে এলাকায় ভীতি সঞ্চার হবে এবং পরে অন্যদের কাছ থেকে চাঁদা আদায় সহজ হবে। আটক প্রত্যেকের নামে ছিনতাই, চাঁদাবাজি, চুরি, ডাকাতিসহ বিভিন্ন অভিযোগে বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। তাদের ব্যাপারে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
×