ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

যশোর শিক্ষাবোর্ড

আবদুস সালাম গংয়ের আরও আড়াই কোটি টাকা জালিয়াতি ধরা পড়ল

প্রকাশিত: ২১:৫৯, ২২ অক্টোবর ২০২১

আবদুস সালাম গংয়ের আরও আড়াই কোটি টাকা জালিয়াতি ধরা পড়ল

স্টাফ রিপোর্টার, যশোর অফিস ॥ যশোর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ড থেকে চেক জালিয়াতি করে আরও আড়াই কোটি টাকা আত্মসাতের ঘটণা ধরা পড়েছে। বৃহস্পতিবার বিষয়টি ধরা পড়লে গোপনে দুদকে আরও একটি অভিযোগ দেয়া হয় শিক্ষাবোর্ড কর্তৃপক্ষ। যেখানে বলা হয়েছে হিসাব সহকারী আবদুস সালাম বর্তমানে চেয়ারম্যান মোল্লা আমীর হোসেন সচিব থাকাবস্থায় এসব জালিয়াতি করেছেন। মোট ৫ কোটি টাকা চেক জালিয়াতি করে তুলে নেয়া হয়েছে। অভিযোগে বলা হয়েছে, ২০১৭ সালের ২১ আগষ্ট বিজনেস আইটি নামে একটি প্রতিষ্ঠানের নামে আয়কর বাবাদ ১২ হাজার ২৭৬ টাকা তুলে নেয়া হয়। একই সালের ৪ অক্টোবর শহরের জামে মসজিদ লেনের নূর এন্টার প্রাইজ নামে ৫৯ হাজার ৩৫ টাকা তুলে নেয়া হয়েছে। ২০১৯ সালের ২৯ এপ্রিল মেসার্স খাজা প্রিন্টিং প্রেসের নামে ২ লাখ ৯৮ হাজার ৫৩০ টাকা ও নিহার প্রিন্টিং প্রেসের নামে ২ লাখ ৯৮ হাজার ৫৩০ টাকা উত্তোলন করা হয়েছে। এভাবে ৯টি প্রতিষ্ঠানের নামে আরও ২ কোটি ৪৩ লাখ ৭ হাজার ৮৭৮ টাকা তুলে নিয়েছে হিসাব সহকারী আবদুস সালাম। একই সাথে সেকশন অফিসার আবুল কালাম আজাদের নামে ৯৪ হাজার ৩১৬ টাকা ও আবদুস সালামের নিজ নামে ২৫ লাখ ৮০ হাজার ১০ টাকা তুলে নেয়া হয়েছে। যশোর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের হিসাব ও নীরিক্ষা বিভাগের উপপরিচালক এমদাদুল হক জানান, আমরা আরও প্রায় আড়াই কোটি টাকার চেক জালিয়াতির প্রমাণ পেয়েছি। যা দুদকে ২১ অক্টোবর আরও একটি অভিযোগ জমা দিয়েছি। ওই সময় বর্তমানে চেয়ারম্যান মোল্লা আমীর হোসেন বোর্ডের সচিব থাকাবস্থায় প্রথম এই জালিয়াতি করা হয়েছে। বোর্ডের আবদুস সালাম তখন হিসাব শাখার দায়িত্বে ছিলেন। তার নেতৃত্বে যশোরের রাজারহাট এলাকার বাসিন্দা আবদুল মজিদ আলীর ছেলে শরিফুল ইসলাম বাবু এসব জালিয়াতি করেছন বলে আমরা জেনেছি। এখন দুদক বিষয়টি খতিয়ে দেখবে। দুর্নীতি দমন কমিশন যশোর কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মো: নাজমুচ্ছায়াদাত জানান, আমাদের কাছে আরও প্রায় আড়াই কোটি টাকা জালিয়াতির অভিযোগ করা হয়েছে। কারা করেছে তা খুঁজে বের করা হবে। এর আগে ১৮ অক্টোবর আড়াই কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ৫ জনকে আসামি করে মামলা করে দুদক। দুর্নীতি দমন কমিশন সমন্বিত জেলা কার্যালয় যশোরের সহকারী পরিচালক মাহফুজ ইকবাল বাদী হয়ে এই মামলা করেছেন। অভিযুক্তরা হলেন, যশোর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মোল্লা আমীর হোসেন, সচিব অধ্যাপক এএম এইচ আলী আর রেজা, হিসাব সহকারী আবদুস সালাম, প্রতারক প্রতিষ্ঠান ভেনাস প্রিন্টিং এন্ড প্যাকেজিংয়ের মালিক রাজারহাট এলাকার বাসিন্দা আবদুল মজিদ আলীর ছেলে শরিফুল ইসলাম বাবু, ও শেখহাটী জামরুলতলা এলাকার শাহীলাল স্টোরের মালিক মৃত সিদ্দিক আলী বিশ্বাসের ছেলে আশরাফুল আলম। মামলা হবার পর ওইদিন রাতেই চেয়ারম্যান ও সচিব তাদের বাংলো থেকে বের হয়ে যান। এরপর তারা কেউ অফিসে আসেনি। যশোর শিক্ষাবোর্ডের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান অধ্যাপক মাধব চন্দ্র রুদ্র জানান, আরও আড়াই কোটি টাকা জালিয়াতির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। শিক্ষাবোর্ডের কর্মচারি ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মো: আসাদুজ্জামান জানান, বর্তমানে বোর্ড চেয়ারম্যান আগে যখন সচিব ছিলেন তখন থেকে এই জালিয়াতি শরু করে আবদুস সালাম ও তার ব্যবসায়ীক পার্টনার।
×