ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

নীলফামারীতে বন্যা পরিস্থিতির সার্বিক উন্নতি

প্রকাশিত: ১১:৩১, ২১ অক্টোবর ২০২১

নীলফামারীতে বন্যা পরিস্থিতির সার্বিক উন্নতি

স্টাফ রিপোর্টার, নীলফামারী ॥ নীলফামারীর ডিমলার ডালিয়া ব্যারাজ পয়েন্টে কমতে শুরু করেছে তিস্তা নদীর পানি। আজ বৃহস্পতিবার (২১ অক্টোবর) সকাল ৬টায় তিস্তা নদীর পানি বিপদসীমার ৩০ সেন্টিমিটার (৫২.৩০) ও সকাল ৯টায় আরও ১০ সেন্টিমিটার নেমে (৫২.২০) ৪০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বন্যা পরিস্থিতির সার্বিক উন্নতি হলেও তিস্তাপাড়ের জনজীবন লন্ডভন্ড হয়ে গেছে গত ১৮ ঘন্টায়। ক্ষয়ক্ষতির পরিমানে প্রায় শতকোটি টাকা বলে ধারনা করা হচ্ছে। হঠাৎ করে উজানের ঢলে রুদ্ধমূর্তি ধারন করা তিস্তা নদী অববাহিকায় স্মরনকালের এমন বন্যা ও ভাঙ্গন এলাকাবাসীকে পথে বসিয়ে দিয়েছে। চারিদিকে ক্ষতিগ্রস্থদের শুধু আহাজারী আর আহাজারী । নারী পুরুষদের গগন বিদারক কান্না আকাশ বাতাস ভারী করে তুলেছে। বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও বাধের উপর ত্রিপলের ভেতর মানুষজন নির্ঘুম রাত কাটিয়েছে। বিশেষ করে নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার পূর্বছাতনাই ইউনিয়নের কালিগঞ্জ জিরো পয়েন্টে ১২শত পরিবার পথে বসে গেছে। তাদের দ্রুত পুনঃবাসন করার দাবি করা হয়েছে। এদিকে তিস্তার বন্যায় নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার ১২ টি চরের শতশত হেক্টরের ভুট্টা, উঠতি আমন ধান, শাক সবজী, পুকুরের মাছ, বসতঘর ও আসবাসপত্র ভেসে গেছে ও বিনস্ট হয় প্রায় আরও ৫০ কোটি টাকা। যা তিস্তার লন্ডভন্ডে প্রায় শত কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে ধারনা করা হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের সংখ্যা প্রায় ২৫ হাজার। গতকাল বুধবার উজানের ঢলের পর পরেই তিস্তার এই বন্যায় নীলফামারী জেলা প্রশাসক, উপজেলা প্রশাসন, ফায়ার সর্ভিস,বিজিবি দ্রুত ছুটে গিয়ে অসংখ্য পরিবারকে উদ্ধার কাজ পরিচালনা করে। জেলা প্রশাসক হাফিজুর রহমান জানান, প্রাথমিক ভাবে ডিমলা উপজেলায় জিআর এর ৪০ মেট্রিক টন চাল ও নগদ ১০ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। বন্যা ও ভাঙ্গন কবলিত পরিবারগুলোকে ডান তীর বাঁধ সহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আশ্রয় ও শুকনা খাবার বিতরন করা হচ্ছে। ডিমলা উপজেলা ফায়ার সর্ভিসের ইনচার্জ এটি এম গোলাম মোস্তফা জানান, তিস্তার বন্যায় চর এলাকায় আটকা পড়া অসংখ্য পরিবারকে উদ্ধার করে নিরাপদে সরিয়ে আনার কারনে কোন হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। আজ বৃহস্পতিবার ডিমলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মেজবাহুর রহমান বলেন আমরা বন্যা ও ভাঙ্গন কবলিত পরিবারগুলোর সার্বক্ষনিক তদারকি করছি। তাদের শুকনা খাবার দেয়া হচ্ছে। পাশাপাশি চাল বিতরনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। পূর্বছাতনাই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ খান তার এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত ১২শত পরিবারকে দ্রুত পুনঃবাসনের দাবি করেন। পানি উন্নয়ন বোর্ডের নীলফামারীর ডালিয়ার বন্যা পুর্বাভাস ও সর্তকীকরন কেন্দ্রের কর্মকর্তা নুরুল ইসলাম জানান, গতকাল বুধবার সন্ধ্যা ৬টায় তিস্তার পানি বিপদসীমার (৫২.৬০) ৫৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। এর আগে সকাল ৬টায় ৫০ সেন্টিমিটার, ৯টায় ৬০ সেন্টিমিটার, দুপুর ১২টায় ৭০ সেন্টিমিটার বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছিল। আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা পর্যন্ত তিস্তার পানি বিপদসীমার ৪০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড ডালিয়ার নির্বাহী প্রকৌশলী আসফুদ্দৌলা বলেন,সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হলেও তবে ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হয়েছে তিস্তাপাড়ের।
×