ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

ঠাকুরগাঁওয়ে শুরু হলো মাছ ধরার উৎসব

প্রকাশিত: ২০:২৮, ১৮ অক্টোবর ২০২১

ঠাকুরগাঁওয়ে শুরু হলো মাছ ধরার উৎসব

নিজস্ব সংবাদদাতা, ঠাকুরগাঁও ॥ সদর উপজেলার আকচা ও চিলারং শুক নদীর তীরে বুড়ির বাঁধ এলাকায় শুরু হয়েছে মাছ ধরার উৎসব। এ উৎসবে হাজার হাজার মানুষ খইয়া জাল, পলো ও মাছ রাখার পাত্র (খলই) নিয়ে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। ৩/৪দিন এ উৎসব চলবে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। সোমবার ভোরে বুড়ির বাঁধের গেট খুল দেয়ার পর থেকে মাছ ধরার উৎসব শুরু হলে মৎস্যশিকারীদের উপচেপড়া ভিড় হয় চোখে পড়ারমত। এসময় বাঁধের ওপর দাঁড়িয়ে মাছ শিকারীদের উৎসাহ দেন তাদের বন্ধুবান্ধব ও পরিবারের স্বজনেরা। মাছ ধরার জন্য ৫ উপজেলার গ্রাম ও শহরের শত শত মানুষ ভিড় করে। নারী ও শিশুসহ বৃদ্ধরাও ছিল এ দলে। সবার হাতে জাল, লাফিজাল দিয়ে সাধ্যমত মাছ শিকার করেছেন সকলেই। উল্লেখ্য, বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্বাবধানে ১৯৫১ সালে শুরু হয় এই বাধ নির্মাণের কাজ। পরে ১৯৫৭ সালের দিকে শেষ হলেও ১৯৭৮ সালের দিকে সেচ ব্যবস্থার কার্যক্রম শুরু হয়। এরপর থেকেই শুষ্ক মৌসুমে এ অঞ্চলের কৃষি জমির সেচসুবিধার জন্য সদর উপজেলার আকচা ও চিলারং ইউনিয়নের সীমানায় শুক নদীতে বুড়ির বাঁধ নামে জলকপাট নির্মাণ করা হয়। এই জলকপাটে আটকে থাকা পানিতে প্রতিবছর জেলা মৎস্য অধিদপ্তর বিভিন্ন প্রজাতির মাছের পোনা অবমুক্ত করে থাকেন। আর এ পোনাগুলো যাতে কেউ শিকার করতে না পারেন দেখাশোনার দায়িত্ব পালন করে সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদ। এরপর থেকেই প্রতিবছর শীতের শুরুতেই এ মাছ সবার জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। এভাবেই বছরের পর বছর ধরে বুড়ির বাঁধ এলাকায় মাছ ধরার উৎসব চলে আসছে। রাণীশংকৈল উপজেলার নেকমরদ ইউনিয়ন থেকে মাছ ধরতে এসেছিলেন আখতারুল ইসলাম। তিনি জানান, সোমবার ভোরে এখানে এসেছি। শুনেছিলাম এখানে মাছ মারা হয়। প্রতিবার নাকি এই উৎসবটা হয়। তাই এবার এসেছি। তিনি আরো বলেন, পুটি মাছ, গুড়া মাছ, রুই মাছসহ বিভিন্ন প্রকারের মাছ জালে আটকা পড়েছে। আমার মতো আরো অনেকেই রাত থেকেই এসেছেন এখানে। আটোয়ারী থেকে মাছ ধরতে এসেছেন কাবুল নামে এক ব্যক্তি। তিনি জানান, সকাল থেকেই এখানে মাছ ধরছি। জাল নিয়ে আমরা তিনজন এসেছি। মাছ খুব একটা ধরা পড়ছেনা। কারণ অনেকেই জাল ফিকছে। এরপরেও যা পাচ্ছি নিয়ে যাচ্ছি। অনেকেই নদীর তীরে মাছ বিক্রি করছে। তবে এবার গতবারের তুলনায় মাছ কম এবং বিক্রেতারা অতিরিক্ত দাম চাওয়ায় অনেকে খালি হাতে ফিরছেন। আকচা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সুব্রত কুমার বর্মণ জানান, প্রতি বছর হাজার হাজার মানুষের এক সাথে মাছ ধরার দৃশ্যটা অন্যরকম। অনেকেই এ দিনটার জন্য অপেক্ষা করে। আমরা চাই এমন দৃশ্য প্রতি বছর ফিরে আসুক।
×