ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

অবশেষে সেই ‘আস্তিনের সাপ’ গ্রেফতার ॥ জামিন নাকচ

প্রকাশিত: ২২:২৫, ১৮ অক্টোবর ২০২১

অবশেষে সেই ‘আস্তিনের সাপ’ গ্রেফতার ॥ জামিন নাকচ

কোর্ট রিপোর্টার ॥ দীর্ঘদিন পলাতক থাকা গ্লোব-জনকণ্ঠ শিল্প পরিবারের বিপুল অর্থ লোপাটকারী সেই তোফায়েল আহমদকে অবশেষে পুলিশ গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছে। রাজধানীর উত্তরার একটি স্থান থেকে রমনা পুলিশ মোবাইল ট্র্যাকিংয়ের মাধ্যমে তাকে গ্রেফতার করে। রবিবার সিএমএম আদালতে তার জামিন চাওয়া হয়। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত তোফায়েলের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন। উল্লেখ্য, গ্লোব-জনকণ্ঠ শিল্প পরিবারের হিসাব বিভাগের প্রধানের পদে থেকে তোফায়েল আহমদ বিভিন্ন অসদুপায় অবলম্বনের মাধ্যমে কোম্পানির বিপুল অঙ্কের অর্থ হাতিয়ে নিয়েছেন। কোম্পানির অনুমতি ব্যতিরেকে ব্যাংক থেকে অর্থ উত্তোলন করে সরিয়ে নিজে লাভবান হয়েছেন। গ্লোব-জনকণ্ঠ শিল্প পরিবার দেশে একটি প্রতিষ্ঠিত শিল্প উদ্যোক্তা গোষ্ঠী। কোম্পানির মরহুম চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আতিকউল্লাহ খান মাসুদের সরলতা ও অতি বিশ্বাসের সুযোগ নিয়ে এই তোফায়েল আহমদ প্রতিষ্ঠানের অভ্যন্তরে একটি দুর্নীতিবাজ চক্র গড়ে তোলেন। তিনি এই চক্রের হোতা ছিলেন। অভ্যন্তরীণ তদন্তে তোফায়েল আহমদের অর্থ আত্মসাত, স্বজনপ্রীতি, কিছু কর্মকর্তা, কর্মচারী, সাংবাদিকের সঙ্গে কোম্পানির ভুল বোঝাবুঝি সৃষ্টি করে ফায়দা হাসিলের এন্তার বিষয় ধরা পড়ে। প্রতিষ্ঠিত এ কোম্পানিকে তোফায়েল আহমদের তিলে তিলে ধ্বংস করার অপপ্রয়াসে লিপ্ত থাকার বিষয়টি সুস্পষ্টভাবে ধরা পড়ার পর প্রথমে সাময়িক ও পরে গত ৩০ মে কর্তৃপক্ষ তাকে স্থায়ীভাবে বরখাস্ত করেন। তার আরও বহু অপকর্মের ঘটনা নিয়ে এখনও তদন্ত চলমান। তোফায়েল আহমদের দুর্নীতি, অর্থলোপাটসহ নানা ঘটনা নিয়ে কর্তৃপক্ষ একাধিক মামলা করেছেন। এর মধ্যে ঢাকার সিএমএম আদালতে দায়েরকৃত একটি মামলায় গত ২৭ সেপ্টেম্বর বিজ্ঞ বিচারক তোফায়েলের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন। এ ঘটনায় তিনি গা ঢাকা দেন। রমনা পুলিশ তাকে ধরার জন্য তার ঢাকা, চট্টগ্রাম ও নিজ জেলা ফেনীতে রিক্যুইজিশন প্রেরণ করে। ফলে তিনি এক স্থান থেকে অন্য স্থানে গা ঢাকা দিয়ে থাকতে শুরু করেন। শেষ পর্যন্ত পুলিশ মোবাইল ট্র্যাকিংয়ের মাধ্যমে উত্তরায় একটি স্থানে তার অবস্থান চিহ্নিত করে। তাৎক্ষণিকভাবে সেখানে রমনার ওসি মনিরুল ইসলামের নেতৃত্বে পুলিশ দল অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। রবিবার সিএমএম আদালতে তার জামিন চাওয়া হয়। বাদী ও বিবাদী পক্ষের দীর্ঘ শুনানি শেষে তোফায়েল আহমদের জামিন আবেদন নাকচ করে জেলহাজতে পাঠিয়ে দেন আদালত। বাদী পক্ষে শুনানিতে ছিলেন ঢাকা বারের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট মোঃ মোসলে উদ্দিন (জসীম), এ্যাডভোকেট মঞ্জুরুল আলম, এ্যাডভোকেট নিখিল চন্দ্র দত্ত ও এ্যাডভোকেট গাফফার। পক্ষান্তরে, আসামি পক্ষে শুনানি করেন ঢাকা বারের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট মিজানুর রহমান মামুন ও এ্যাডভোকেট সালমা হাই টুনী। এছাড়া রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন স্পেশাল পিপি এ্যাডভোকেট আজাদ রহমান।
×