ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

গুরুতর দগ্ধ ২ জন

চট্টগ্রামে বাসায় বিস্ফোরণ, দেয়াল ভেঙ্গে নিহত ১

প্রকাশিত: ২২:০১, ১৮ অক্টোবর ২০২১

চট্টগ্রামে বাসায় বিস্ফোরণ, দেয়াল ভেঙ্গে নিহত ১

স্টাফ রিপোর্টার, চট্টগ্রাম অফিস ॥ নগরীর বায়েজিদ এলাকার একটি বাসায় বিস্ফোরণে দেয়াল ভেঙ্গে একজন নিহত হয়েছে। এছাড়া বিস্ফোরণে দগ্ধ হয়েছে ২ জন। তাদের চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। রবিবার সকালে বায়েজিদ বোস্তামী থানার বালুছড়া কাশেম কলোনিতে বিস্ফোরণের ওই ঘটনা ঘটে। এতে দেয়াল ভেঙ্গে পড়ে নিহত হয় ফারুক আকাশ (২৫) নামের এক যুবক। দগ্ধ দুজন হলেন ফোরকান (৫৫) ও কালাম (৪৫)। চট্টগ্রাম ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের বায়েজিদ বোস্তামী স্টেশনের সিনিয়র স্টেশন অফিসার কবির হোসেন জানিয়েছেন, ওই কলোনির তিলতলা ভবনটির নিচতলায় বিস্ফোরণ হয়। সেখানে সবাই ব্যাচেলর ভাড়া থাকতেন। অনেক দিনমজুরও আছে ওই ভবনে। তবে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি গ্যাসের কারণেই বিস্ফোরণ হতে পারে। কিছু আলামত সংগ্রহ করেছি। আশপাশের সবার সঙ্গেও কথা বলেছি। তদন্তের পর বিস্তারিত বলা যাবে। তবে ওই ভবনটিতে দিনের আলোও প্রবেশ করে না। একরুমের রান্নাঘরের সঙ্গে আরেক রুম লাগোয়া। আলো বাতাসের চলাচল নেই বললেই চলে। এদিকে চমেক হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ি জানিয়েছে, ফারুকসহ মোট তিনজনকে হাসপাতালের জরুরী বিভাগে আনা হয়। কর্তব্যরত চিকিৎসক ফারুককে মৃত ঘোষণা করেন। এছাড়া দগ্ধ দুজনকে বার্ন ইউনিটে ভর্তি করানো হয়েছে। চমেক হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, বায়েজিদের বিস্ফোরণে দগ্ধ দুজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাদের শ্বাসনালী পুড়ে যাওয়ায় শারীরিক পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে। একজনের শরীরের ৬০ শতাংশ এবং অন্যজনের ৪৫ শতাংশ পুড়ে গেছে। ওই কলোনির বাসিন্দা মোঃ ইউনুচ জানান, ওই ঘরের দেয়াল ভেঙ্গে পাশের কক্ষে দিদার হোসেন নামে আরেকজন আহত হয়েছে। তবে তার আঘাত গুরুতর নয়। তবে ফারুক সকালে নাস্তা আনতে বাসা থেকে বের হয়ে ফেরার সময় দুর্ঘটনার শিকার হয়েছে। সে দর্জির কাজ করে। এদিকে সিএমপির উপকমিশনার (উত্তর) মোখলেসুর রহমান জানান, যখন বিস্ফোরণ হয় তখন ফারুক ওই ভবনটির নিচতলার কক্ষের সামনে হেঁটে যাচ্ছিল। বিস্ফোরণে দেয়াল ভেঙ্গে তার গায়ে পড়ে। আমরা ধারণা করছি ওই কক্ষে গ্যাস জমে বিস্ফোরণ হয়েছে। সেখানে আলো বাতাস চলাচলের মতো অবস্থা নেই। এরপরও বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিটের সদস্যরা এসেছে। তারা খতিয়ে দেখছে। ফায়ার সার্ভিসও এই ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে কাজ করছে। কাশেম কলোনির তিনতলা ভবনটির অপরপ্রান্তে আরেকটি চারতলা ভবন রয়েছে। তিনতলার ওপরে রয়েছে একটি মাদ্রাসা, দ্বিতীয় তলায় মসজিদ এবং নিচ তলায় ১৪টি কক্ষ। এসব কক্ষে লোকজন ভাড়া থাকে। যাদের বেশিরভাগই নিম্নবিত্ত। অন্যদিকে, বালুছড়ার কাশেম কলোনিতে বিস্ফোরণের ঘটনা শুনে এলাকার আশপাশের উৎসুক জনতা ভিড় করে। খবর পেয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিভিন্ন কর্মকর্তা ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারাও ছুটে আসেন। ফায়ার সার্ভিসের এক কর্মকর্তা জানান, যে কক্ষটিকে বিস্ফোরণ হয়েছে তারপাশের বাসার একটি কক্ষও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে প্রথমে বিস্ফোরক কিছু থাকার বিষয় নিয়ে সকলেই সন্দেহ করলেও পরে আহত এবং বিস্ফোরণের ধরন দেখে কিছুটা আঁচ করা যায় এটি পাইপলাইনের গ্যাসজনিত ঘটনা। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও ফায়ার সার্ভিস কর্মকর্তা ধারণা করছেন, যদি বড় নাশকতার কিছু বিষয় থাকত তাহলে বিস্ফোরণটা বড় আকারের হতো। একটি কক্ষের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকত না। কক্ষটির গ্যাসের চুলা অক্ষত রয়েছে, তাই পাইপলাইনের গ্যাস লিকেজ কিংবা গ্যাস জমে এই ঘটনা হতে পারে। তারপরও এ বিষয়ে সরকারী সব সংস্থা তদন্ত করছে। এদিকে পুলিশের এক কর্মকর্তা জানিয়েছে, সব বিষয় মাথায় রেখেই কারণ অনুসন্ধান করা হচ্ছে।
×