ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

আলোচনা সভায় কাদের

বিএনপি সাম্প্রদায়িক অপশক্তির নাম্বার ওয়ান পৃষ্ঠপোষক

প্রকাশিত: ২১:৫৯, ১৮ অক্টোবর ২০২১

বিএনপি সাম্প্রদায়িক অপশক্তির নাম্বার ওয়ান পৃষ্ঠপোষক

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপি হচ্ছে সাম্প্রদায়িক অপশক্তির নাম্বার ওয়ান পৃষ্ঠপোষক। সব সাম্প্রদায়িক শক্তির ঠিকানা এক- সেটা হচ্ছে বিএনপি। জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে অন্ধকারের শক্তি মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। সুযোগ পেলেই ছোবল মারবে, তাই এখন থেকেই সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। কোথাও সাম্প্রদায়িক অপশক্তিকে মাথা তুলতে দেয়া হবে না। রবিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইউনিভার্সিটি ল্যাবরেটরি স্কুল এ্যান্ড কলেজে শহীদ শেখ রাসেলের ৫৮তম জন্মদিন উপলক্ষে আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ উপকমিটি আয়োজিত ‘স্বপ্ন ও সম্ভাবনার স্ফুলিঙ্গ শেখ রাসেল’ শীর্ষক আলোচনা সভা এবং শিক্ষার্থীদের মাঝে মেধা বৃত্তি, দরিদ্র তহবিলে বিশেষ অনুদান ও শিক্ষা উপকরণ প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বের সরকারের টানা ১৩ বছরে এর আগে কোন দুর্গাপূজায় সহিংস ঘটনা ঘটেনি দাবি করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, আমাদের অবাক করে দিয়েছে। আমরা ভাবতেই পারিনি এই ধরনের ঘটনা ঘটতে পারে বিবেচনায় নিয়ে আমাদের আরও বেশি সতর্ক থাকা উচিত ছিল। কারণ, জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে এই অপশক্তি মাথা চাড়া দিয়ে উঠেছে। ওবায়দুল কাদের বলেন, দেশের সব অপকর্ম ও সাম্প্রদায়িকতার জনক হচ্ছে বিএনপি। অপকর্মকারীদের কোন দল নেই, এরা হচ্ছে দুর্বৃত্ত। জামায়াত ছাড়া বিএনপি অচল এবং জামায়াতের নির্ভরযোগ্য ছাতা হচ্ছে বিএনপি এমন মন্তব্য করে তিনি বলেন, ভেতরে ভেতরে জামায়াত-বিএনপি মধুর বন্ধনে আবদ্ধ, যা কোনদিন বন্ধ হবে না। এই অপশক্তি বুঝে ফেলেছে, শেখ হাসিনার সরকারকে ভোটে হারানো যাবে না, আন্দোলনেও জনগণ সাড়া দেবে না। কারণ, দেশের মানুষ শেখ হাসিনার ওপর খুশি। তাঁর সাহসী নেতৃত্ব, অর্জন, উন্নয়নে সারাবিশ্ব তাঁকে সম্মান করে। একাত্তরের পরাজিত শক্তিই পঁচাত্তরের হত্যাকান্ড ঘটিয়েছিল উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, বঙ্গবন্ধুর হত্যার পর এই চক্রের বিষবৃক্ষ অনেক গভীরে ছড়িয়ে পড়েছে, এদের নিস্ক্রিয় মনে হলেও এরা তলে তলে এখনও সক্রিয়, তাই এখন থেকেই সতর্ক থাকতে হবে। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী সতর্কবাণী উচ্চারণ করার পর এ ধরনের অপকর্ম করার দুঃসাহস তারা করেনি। সতর্কবাণী উচ্চারণ করার পর ষড়যন্ত্রকারীরা দু’এক জায়গায় সহিংসতার চেষ্টা করেছিল, কিন্তু তারা ব্যর্থ হয়েছে। রাজধানীতে তারা পারেনি। ওবায়দুল কাদের বলেন, ’৭৫ পরবর্তীকালে শেখ হাসিনার চেয়ে সংখ্যালঘুবান্ধব সরকার এ দেশে আসেনি। এ দেশের সনাতন ধর্মাবলম্বী সবাইকে তিনি সুরক্ষা দিয়েছেন, দেশের মানুষ শেখ হাসিনার উন্নয়নে, অর্জনে খুশি। আগামী বছর বেশ কয়েকটি ‘মেগা প্রকল্প’ উদ্বোধন হবে জানিয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, এটা বিএনপির অন্তর্জালার কারণ, এটাই সাম্প্রদায়িক শক্তির গাত্রদাহের কারণ। এগুলো উদ্বোধন হলে তারা চোখে অন্ধকার দেখবে। সভাপতির বক্তৃতায় আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য ও সাবেকমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী বলেন, শেখ রাসেলের সম্ভাবনাকে ঘাতকরা শেষ করেছিল। বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টকারীদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্টকারীরা সিরিজ বৈঠক করে শারদীয় দুর্গাপূজার সময়টিকেই বেছে নিল। আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া বলেন, বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার মধ্য দিয়ে যে রাজনৈতিক দর্শনের ওপর ভিত্তি করে বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল, সেই দর্শনকেও সেদিন হত্যা করা হয়েছিল। তাই ২০২১ সালে এসেও দেখি সনাতন ধর্মের মানুষ যখন দুর্গাপূজা উদ্করে, তখন ’৭৫ পরবর্তী খুনীদের পৃষ্ঠপোষক রাজাকার-আলবদর-জঙ্গীগোষ্ঠী সেখানে হামলা করার ষড়যন্ত্র চালায়। আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরীর সভাপতিত্বে এবং আওয়ামী লীগের ত্রাণ উপকমিটির সদস্য সচিব সুজিত রায় নন্দীর পরিচালায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন দলের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোঃ মোজাফফর হোসেন, ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য প্রমুখ। অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মোঃ আবদুল হালিম। পরে নেতৃবৃন্দ্রকে সঙ্গে নিয়ে শিক্ষার্থীদের মাঝে মেধা বৃত্তি ও দরিদ্র তহবিলে অনুদান এবং শিক্ষা উপকরণ বিতরণ করেন ওবায়দুল কাদের। অনুষ্ঠানটি আয়োজন করে আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ উপকমিটি।
×