সমুদ্র হক ॥ অন্য রকম আকাশ। ভিন্ন প্রকৃতি। চেনা যায় না। শরত শেষে হেমন্তের আগমনী রূপ খেয়ালি ঠেকছে। বগুড়ার আকাশে বৃহস্পতিবার সকালে ছিল কুয়াশা। তারপর প্রখর রোদ। ভ্যাপসা গরমে অস্থির জনজীবন। গরমের ধরনও অন্যরকম। গা দরদর করে ঘামছে না। সামান্য ঘেমে চিটমিট করছে। জ¦ালা করছে। কখনও চুলকাচ্ছে। বেলা দেড়টার দিকে মেঘলা আকাশ। সাড়ে তিনটায় ঘন কালো আকাশ। বৃষ্টি ছিটেফোঁটা। এরপর ছাইরঙা আকাশে ভারি বৃষ্টি। মনে হবে আষাঢ়। শহরের একাংশে বৃষ্টি। আরেক অংশ গুমোট। হেঁটে চলার সময় মনে হবে মাটির নিচ থেকে উষ্ণতা এসে ঠেকছে।
গোধূলি বেলায় একেবারে সন্ধ্যার প্রলেপ। সন্ধ্যার আগে দিনের মতো ঝিলিক দিয়ে রাত। শহরের বিজলি বাতি ঘন অন্ধকার ঢেকে দিয়েছে। গ্রামের পথে গভীর রাতের চিত্র। দূর থেকে শিয়ালের হুক্কাহুয়া ডাক। তাড়া করে সারমেয় দল। বড় বৃক্ষের কোটরে বসে হুতোম পেঁচার প্রহর গোনার খেয়ালি ডাক। প্রকৃতিবিদগণের কথা : বাংলার ঋতু বৈচিত্র্যে এমন তো হওয়ার কথা নয়। তাহলে কেমন হওয়ার কথা এবং তা কি হচ্ছে! গালে হাত দিয়ে নীরব। যত দোষ জলবায়ু।
জলবায়ু বিশারদগণের কথা : বাতাসে অতিরিক্ত আর্দ্রতার কারণে ভ্যাপসা গরম। মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে এমনটি ঘটছে। একেক অঞ্চলে একেক রকম। যে কারণে কোথাও টানা বৃষ্টি। কোথাও ভারি। মাঝারি। কোথাও লেবুর রসের মতো ছিটেফোঁটা। এর মধ্যে বৃষ্টির বড় ফোঁটা বুঝতে পারে বাইরে থাকা টাক মাথার ব্যক্তি। কিছুক্ষণ টুপটাপ। তারপর উধাও। আবহাওয়াবিদগণের কথা, যে পরিমাণ বৃষ্টি হলে আবহাওয়া শীতল হতে পারে সেই পরিমাণ বারিধারা নেই। গত বছর এমন ছিল না। এর মধ্যেই আশার কথা শুনিয়েছেন। চলতি অক্টোবর মাসের শেষের দিকে (কার্তিকের মধ্যভাগে) মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশ থেকে ক্ষণিকের বিদায় নিয়ে শীতের প্রলেপ দেবে। উষ্ণতা কিছুটা কমে অনুভূত হবে হাল্কা শীতল পরশ।
তারপর ধীরে ধীরে শীত নামার অনুশীলন শুরু করবে প্রকৃতি। কুয়াশা আরও ঘন হয়ে শিশির বিন্দু বেড়ে যাবে। টিনের চালার বাড়িতে মাত্রাতিরিক্ত শিশির ফোঁটা বুঝে নেয়া যায় মৃদু শব্দে। মোটর গাড়ির বডিতে আঙ্গুল দিয়ে আঁকিবুঁকি করলে রেখা ফুটে ওঠে। তবে শীত কতটা ছোবল দেবে তা বলতে পারছেন না তারা। মৌসুমি বায়ু নিয়ে বলেছেন, অক্ষের বর্ধিতাংশ ভারতের পূর্ব রাজস্থান, উত্তর প্রদেশ, বিহার, পশ্চিমবঙ্গ, বিহার হয়ে বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চল পর্যন্ত বিস্তৃত। বঙ্গোপসাগরে দুর্বল অবস্থায় থাকায় প্রকৃতির এই আচরণ। তাই উত্তরাঞ্চলের আকাশে প্রকৃতির খেয়ালি রূপ ধরা পড়ছে।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: