ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

বার্ধক্য ঠেকিয়ে রাখা সম্ভব ॥ দাবি মার্কিন বিজ্ঞানীর

প্রকাশিত: ২৩:১৩, ১৪ অক্টোবর ২০২১

বার্ধক্য ঠেকিয়ে রাখা সম্ভব ॥ দাবি মার্কিন বিজ্ঞানীর

জনকণ্ঠ ডেস্ক ॥ আমরা জানি বার্ধক্য ঠেকানো যায়না। এটা প্রাকৃতিক নিয়ম এবং প্রত্যেকেরই নিয়তি। বেশিরভাগ মানুষ জীবনকে এভাবেই দেখে থাকেন। কিন্তু জেনেটিক বিজ্ঞানী ডেভিড সিনক্লেয়ার তা মনে করেন না। দুই দশকের ওপর এ বিষয়ে তিনি গবেষণা করেছেন। তিনি বলছেন যে, বার্ধক্য ঠেকিয়ে রাখা সম্ভব। দীর্ঘ ও সুস্থ জীবনের জন্য প্রয়োজন শুধু কিছু সহজ অভ্যাস। সিনক্লেয়ার বিশ্বাস করেন, এমন দিন খুব দূরে নেই যখন ওষুধের সাহায্যে বার্ধক্য সারিয়ে তোলা সম্ভব হবে। এসব ওষুধ এখন পরীক্ষার পর্যায়ে রয়েছে। তার মতে, এগুলো দিয়ে বুড়ো হওয়ার প্রক্রিয়া আসলেই আটকে রাখা যাবে। বিজ্ঞানী ড. ডেভিড সিনক্লেয়ার অস্ট্রেলিয়ার নিউ সাউথ ওয়েলস বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডক্টরেট করেছেন। পরবর্তীতে গবেষণা করেছেন ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি থেকে। বর্তমানে তিনি হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটির একটি ল্যাবরেটোরির প্রধান, যেখানে তার গবেষণার বিষয়, ‘কেন আমরা বুড়ো হই।’ গবেষণার জন্য তিনি বিজ্ঞান জগতের বহু পুরস্কার পেয়েছেন। টাইম ম্যাগাজিনে বিশ্বের সবচেয়ে প্রভাবশালী ১০০ জনের তালিকায় তিনি নির্বাচিত একজন ব্যক্তিত্ব এবং টুইটারে তার অনুসারীর সংখ্যা দুই লাখ। তার ৩৫টি গবেষণার স্বত্বাধিকারী তিনি নিজে। তিনি বেশ কয়েকটি জৈবপ্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা। এই প্রতিষ্ঠানগুলোর বেশ কয়েকটির কাজের ক্ষেত্র হলো বার্ধক্য বিলম্বিত করা বা ঠেকানো। মেরিল লিঞ্চ ব্যাংকের হিসাব অনুযায়ী, বার্ধক্য সংক্রান্ত কাজে বর্তমানে ব্যয় হচ্ছে ১১ হাজার কোটি ডলার, যা ২০২৫ সালে গিয়ে পৌঁছাবে ৬০ হাজার কোটি ডলারে। ড. সিনক্লেয়ারের লেখা একটি বই ‘লাইফস্প্যান-হোয়াই উই এজ-এ্যান্ড হোয়াই উই ডোন্ট হ্যাভ টু’ (কেন আমরা বৃদ্ধ হই-আর কেন আমরা বৃদ্ধ হবো না)। বাজারে এখন এই বইটির বেশ চাহিদা রয়েছে। বইটিতে তিনি প্রচলিত বিশ্বাস ভাঙ্গার পক্ষে যুক্তি তুলে ধরেছেন। কেন বার্ধক্য একটা অবশ্যম্ভাবী প্রক্রিয়া নয়। ড. সিনক্লেয়ার বিশ্বাস করেন বৃদ্ধ হওয়া নিয়ে যেভাবে আমরা ভাবি, সে ভাবনাতে আমাদের আমূল পরিবর্তন আনতে হবে। আমাদের ভাবতে হবে, বার্ধক্য একটা স্বাভাবিক প্রাকৃতিক নিয়ম নয়। আমাদের এটাকে একটা অসুখ হিসেবে দেখতে হবে। অর্থাৎ রোগ হিসেবে এর চিকিৎসা ও নিরাময় সম্ভব। তিনি বলছেন, বৃদ্ধ বয়স নিয়ে আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি যদি আমরা একেবারে পাল্টে ফেলতে পারি, তাহলে মানব জাতির আয়ু উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়ানো সম্ভব। অন্যথায় চিকিৎসা বিজ্ঞানের যে অগ্রগতি হয়েছে তার ফলে আমাদের আয়ু আরও বছর দুয়েক হয়তো বাড়ানো যাবে। তবে আমাদের লক্ষ্য এটি আরও অনেক বেশি বাড়ানো। -বিবিসি অবলম্বনে।
×