ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

গাজীপুরে ত্রিভুজ প্রেমের বিরোধের জেরে কলেজ ছাত্র খুনের রহস্য উম্মোচন

প্রকাশিত: ২০:১৯, ১৩ অক্টোবর ২০২১

গাজীপুরে ত্রিভুজ প্রেমের বিরোধের জেরে কলেজ ছাত্র খুনের রহস্য উম্মোচন

স্টাফ রিপোর্টার, গাজীপুর ॥ গাজীপুরে ত্রিভুজ প্রেমের বিরোধের জেরে পথের কাঁটা দুর করতে কলেজ ছাত্র প্রেমিককে মারধর করে চলন্ত গাড়ি থেকে ফেলে দিয়ে খুন করেছে প্রেমিকা ও প্রেমিকার অপর প্রেমিকসহ তাদের বন্ধুরা। চাঞ্চল্যকর এ খুনের ঘটনার প্রায় এক বছর পর রহস্য উম্মোচন করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। ক্লুলেস এ খুনের ঘটনায় একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বুধবার বিকেলে গাজীপুর পিবিআই’র পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাকছুদের রহমান এ তথ্য জানিয়েছেন। গ্রেফতারকৃতের নাম- তানহা জুবায়ের (২৫)। সে ঢাকার আশুলিয়া থানাধীন বাড়ইপাড়া এলাকার মৃত শাহ আলম স্বর্নকারের ছেলে। পিবিআই’র ওই কর্মকর্তা জানান, গত বছরের ১১ সেপ্টেম্বর দুপুরে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের গাজীপুরের কাশিমপুর থানাধীন তেঁতুইবাড়ী এলাকার ইমপ্রেস টেলিফিল্ম লিঃ (চ্যানেল আই) এর বাংলোর সামনের সড়কের উপর থেকে কলেজ ছাত্র হাবিবুল বাশার জয়কে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব মেমোরিয়াল হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করে এলাকাবাসী। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় সে। ঢাকার আশুলিয়া থানাধীন কবিরপুর এলাকার রহিজ উদ্দিনের ছেলে হাবিবুল বাশার জয় (২০) স্থানীয় আলহাজ্ব আব্দুল মান্নান ডিগ্রী কলেজের দ্বাদশ শ্রেণীর ছাত্র ছিল। এঘটনায় নিহতের বড় ভাই বাদী হয়ে এজাহারনামীয় ২ জন ও অজ্ঞাতনামা ৩/৪ জন আসামীর বিরুদ্ধে কাশিমপুর থানায় এজাহার দায়ের করেন। প্রায় দুই মাস মামলাটি তদন্ত করে। মামলাটির প্রায় দুই মাস তদন্তকালে কোন রহস্য উদঘাটন করতে পারে নি গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ। পরবর্তীতে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের নির্দেশে চাঞ্চল্যকর ও ক্লুলেস এ খুনের মামলার তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয় গাজীপুরের পিবিআইকে। পিবিআই’র তদন্ত কর্মকর্তা তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে এ ঘটনায় জড়িত তানহা জুবায়েরকে আশুলিয়ার বাড়ইপাড়া এলাকা হতে মঙ্গলবার ভোররাতে গ্রেফতার করা হয়। আদালতে সে নিজেকে জড়িয়ে এবং মামলার ঘটনার সঙ্গে জড়িত অপর আসামীদের নাম উল্লেখ স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি প্রদান করে। এরপ্রেক্ষিতে ক্লুলেস ও চাঞ্চল্যকর এ হত্যার রহস্য উন্মোচন হয়েছে। তিনি আরো জানান, গত বছর করোনা মহামারীর কারণে শিক্ষা প্রতিষ্ঠাণ বন্ধ থাকায় কোচিংয়ে ক্লাশ করতে গিয়ে কলেজ ছাত্র হাবিবুল বাশার জয়ের সঙ্গে স্থানীয় একটি স্কুলের দশম শ্রেণীর ছাত্রী নিলুফা ইয়াসমিন ঝুমুরের পরিচয় হয়। পরিচয়ের সূত্রধরে তাদের মাঝে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। কিছুদিন পর ঝুমুর রাজধানীর একটি বেসরকারী পলিটেকনিক কলেজের ছাত্র সজিব হোসেন এর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে। এ নিয়ে জয়ের সঙ্গে ঝুমুরের বিরোধ দেখা দেয়। বিষয়টি জানতে পেরে ঝুমুরের অপর প্রেমিক সজীব ও তার বন্ধুদের নিয়ে জয়কে মারধর করার পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনা অনুযায়ী গত বছরের ১১ সেপ্টেম্বর বাড়ইপাড়া বাসস্ট্যান্ড হতে সহযোগীদের নিয়ে ঠিকানা পরিবহনের একটি বাসে উঠে সজিব। পথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করে কবিরপুর থেকে ঝুমুরকে একই বাসে উঠায় সজিব। এসময় ঝুমুরের পিছু নিয়ে একই বাসে উঠে জয়। বাসে জয়ের এক সিট আগে পাশাপাশি আসনে বসে সজিবের কাধে মাথা রাখে ঝুমুর। এসময় তারা একে অপরকে ধরে বসে। এতে জয় উত্তেজিত হয়ে উঠলে তার সঙ্গে সজিবের কথাকাটাকাটি ও হাতাহাতি শুরু হয়। এসময় সজিবের সহযোগীরা জয়কে এলোপাথারীভাবে মারপিট করে বাসের বাম পার্শ্বের পিছনের জানালা দিয়ে চলন্ত গাড়ি থেকে তেঁতুইবাড়ী এলাকায় সড়কের উপর ফেলে দিয়ে পালিয়ে যায়। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়।
×