ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

উচ্চ রক্তচাপ ডায়াবেটিস সারবে ‘মাই ডক্টর’ এ্যাপে!

প্রকাশিত: ২৩:৩৬, ৫ অক্টোবর ২০২১

উচ্চ রক্তচাপ ডায়াবেটিস সারবে ‘মাই ডক্টর’ এ্যাপে!

সংবাদদাতা, নান্দাইল, ময়মনসিংহ ॥ ইমদাদুল মাগফুর পেশায় চিকিৎসক। তাঁর কর্মস্থল নান্দাইলের প্রত্যন্ত দরিল্লা উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে। তিনি আইসিটির ফোকাল পার্সনও। সম্প্রতি তিনি ‘মাই ডক্টর এ্যাপ’ নামে একটি এ্যাপ তৈরি করেছেন। তিনি দাবি করছেন, এটাই বাংলাদেশে প্রথম এ্যাপস যা থেকে উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিস রোগ অনেকাংশে নিরাময় সম্ভব। জানা গেছে, দরিল্লা উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র থেকে এই এ্যাপসের মাধ্যমে ছয়টি কমিউনিটি ক্লিনিকে চার শতাধিক রোগীর চিকিৎসা দিয়েছেন ইমদাদুল মাগফুর। প্রতিদিন সেবা গ্রহীতা বাড়ছে। এই এ্যাপে রোগীর জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর যুক্ত করা হলে নাম-ঠিকানা চলে আসে। এরপর রোগ সম্পর্কে যাবতীয় তথ্য দেয়ার পর এ্যাপে রোগীর নামের পাশে তা সংরক্ষিত হয়। পরে চিকিৎসার যাবতীয় তথ্য, যেমন ডায়াবেটিস, রক্তচাপ ইত্যাদি তথ্যও সংরক্ষিত হয়। এসব তথ্য দেখে চিকিৎসক ইমদাদুল ব্যবস্থাপত্র দেন। ব্যবস্থাপত্রটি কমিউনিটি ক্লিনিকের হেলথ কেয়ার প্রোভাইডারের (সিএইচসিপি) সরকারী ট্যাবে গিয়ে সংরক্ষিত হয়। পরে ওই রোগী যতবার তাঁর রোগ সম্পর্কে চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলেন, ততবারই পূর্বের দেয়া তথ্য চিকিৎসকের স্মার্ট ফোনে ভেসে ওঠে। এই এ্যাপ উদ্ভাবনের ফলে প্রত্যন্ত অঞ্চলের রোগী সরাসরি ভিডিওকলের মাধ্যমে চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলে সেবা নিতে পারছেন। ডাঃ ইমদাদুল মাগফুর জানান, বাংলাদেশে সংক্রামক ব্যাধিতে মৃত্যুহার শতকরা প্রায় ৬৭ ভাগ। এর অন্যতম কারণ উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিস। এই দুই রোগের চিকিৎসা জীবনব্যাপী হওয়ায় অনেকেই ইচ্ছা সত্তে¡ও ওষুধ নিয়মিত খেয়ে যেতে পারেন না। সেই সাথে থাকেন না নিয়মিত ফলোআপে। ফলে রোগের তীব্রতা ও জটিলতা বৃদ্ধি পায়। এই এ্যাপের মাধ্যমে সহজেই দূরবর্তী এলাকার রোগীকে ভিডিওকলে সেবাদান এবং এ্যাপ ব্যবহারের মাধ্যমে সহজেই রোগীর যাবতীয় তথ্য একজন সিএইচসিপির মাধ্যমে এ্যাপে হালনাগাদ করা হয়। একই সঙ্গে রোগীর ভিডিওকলের মাধ্যমে তাকে সেবা দেয়া হয়। প্রধানমন্ত্রী ডিজিটাল বাংলাদেশ ও কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে জনগণের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দেয়ার স্বপ্নের মেলবন্ধন এই এ্যাপস। এ্যাপসটি আরও উন্নয়নের মাধ্যমে প্রতিটা ঘরে চিকিৎসা সেবা পৌঁছানো সম্ভব হবে। এই এ্যাপে সেবা নিচ্ছেন খোদেজা খাতুন (৬১), কামরুজ্জামান (৩৭), বাচ্চু মিয়া (৫৩), মমতাজ বেগম (৫৪)। তারা জানান, এ্যাপে চিকিৎসা নেয়ার পর এখন আর লাইনে দাঁড়ানোর প্রয়োজন পড়ে না। সময় ও অর্থ দুই-ই সাশ্রয় হয়। এছাড়া কমিউনিটি ক্লিনিক থেকে নিয়মিত ওষুধ পেতে কোন সমস্যা হয় না। এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মাহমুদুর রশীদ বলেন, ডিজিটাল এই এ্যাপ পদ্ধতির মাধ্যমে একাধিক চিকিৎসকের পরামর্শে প্রত্যন্ত এলাকার রোগীকে চিকিৎসাসেবা দেয়া যায়। বর্তমানে নান্দাইলের ছয়টি কমিউনিটি ক্লিনিকে এই এ্যাপের মাধ্যমে উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিসের চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। এই এ্যাপের মাধ্যমে দেশের যে কোন জায়গা থেকে রোগী সেবা নিতে পারবেন। কমিউনিটি ক্লিনিকের সিএইচসিপিদের প্রশিক্ষণ দিয়ে সারা উপজেলায় চালু করার চেষ্টা করছি। এ্যাপসটা আরও উন্নত করা গেলে সারাদেশেই এর সেবা চালু করা যাবে।
×