ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

একজন ক্রীড়াপ্রেমী-ক্রীড়াবান্ধব প্রধানমন্ত্রীর কথকতা

প্রকাশিত: ২৩:৩১, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২১

একজন ক্রীড়াপ্রেমী-ক্রীড়াবান্ধব প্রধানমন্ত্রীর কথকতা

বাঙালীর অবিসংবাদিত নেতা, বাংলাদেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিবের বড় মেয়ে শেখ হাসিনা বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে দীর্ঘ সময় ধরে দায়িত্ব পালন করা প্রধানমন্ত্রী। আজ তাঁর জন্মদিন। ১৯৪৭ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সবচেয়ে বড় সাফল্য দেশের ভঙ্গুর অর্থনীতিকে চাঙ্গা করা। সেই সঙ্গে দেশের খেলাধুলার উন্নয়ন ও সাফল্যের জন্যও নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছেন তিনি। এই লেখার প্রতিপাদ্য বিষয় সেটাই। ক্রীড়াঙ্গনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনেক অবদান। খেলাধুলার যে কোন প্রয়োজনে তাঁকে বা তাঁর সাহায্য-সহযোগিতা পাওয়া যায়। তাঁর রক্তেই রয়েছে খেলাধুলা। কেননা ক্রীড়া পরিবারেই যে তাঁর জন্ম। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বাবা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তরুণ বয়সে ছিলেন একজন ফুটবলার, ঐতিহ্যবাহী ঢাকা ওয়ান্ডারার্স ক্লাবে চল্লিশের দশকে খেলেছেন তিনি। তাঁর বড় ছেলে শেখ কামাল ছিলেন বাংলাদেশের আধুনিক ক্রীড়াঙ্গনের পথিকৃৎ। খেলেছেন ফুটবল, ক্রিকেট, বাস্কেটবল, ব্যাডমিন্টন, ভলিবল ও এ্যাথলেটিক্স। ছিলেন সফল সংগঠক ও আবাহনী ক্রীড়াচক্রের প্রতিষ্ঠাতা। ছোট ছেলে শেখ জামালও ছিলেন সফল ক্রীড়াবিদ। শেখ কামালের স্ত্রী সুলতানা কামাল খুকু ছিলেন দেশের খ্যাতনামা এ্যাথলেট। এমন ক্রীড়া পরিবারের মধ্যে বেড়ে ওঠা বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ক্রীড়াপ্রেম থাকবে না, তো কার মাঝে থাকবে? অনেকেই জানেন না, তৎকালীন আবাহনী ক্রীড়াচক্রের (এখন ঢাকা আবাহনী লিমিটেড) প্রতিষ্ঠার পর প্রাথমিকভাবে যাদের সদস্য হিসেবে নিবন্ধিত করা হয়েছিল, শেখ হাসিনা তাদের একজন! ক্লাব গঠনে ক্লাব সংশ্লিষ্টদের প্রচুর উৎসাহ জুগিয়েছেন। আর্থিক সঙ্কট থাকলেও জোগাড় করে ক্লাবের খরচ চালানোর অর্থ তুলে দিতেন ছোট ভাই শেখ কামালের হাতে। বিদেশে বেড়াতে গেলে প্রায়ই কামালের অনুরোধে আবাহনীর ফুটবলারদের জন্য বুট ও অন্যান্য ক্রীড়া সামগ্রী কিনে আনতেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেও অত্যন্ত স্বাস্থ্য সচেতন। রোজ নিয়ম করে হাঁটেন তিনি। অবসরে নাতি-নাতনিদের সঙ্গে মেতে ওঠেন ব্যাডমিন্টন খেলায়। মন্ত্রীদের সঙ্গে মিটিংয়ের সময়, কোন সভা-সমিতিতে গেলে কিংবা সংসদ অধিবেশন চলাকালীন যদি দেশের কোন খেলা থাকে, তাহলে সেই খেলার সর্বশেষ আপডেট জেনে নিতে ভুল করেন না। দেশের মধ্যে খেলা হলে যদি সময় পাওয়া যায়, তাহলে হুট করেই ফুটবল বা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে গিয়ে হাজির হয়ে সবাইকে চমকে দেন। এমন দৃশ্য দেখা গেছে বহুবারই। এমন ক্রীড়াপ্রেমী-ক্রীড়াবান্ধব প্রধানমন্ত্রী বিশ্বে বিরল। জনসম্মুখে জননেত্রী ও গণতন্ত্রের মানসকন্যা শেখ হাসিনার ক্রীড়াপ্রেমের প্রথম দৃষ্টান্ত ১৯৯৭ সালে। বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দল আইসিসি ট্রফির সেমিফাইনালে (মালয়েশিয়ায় অনুষ্ঠিত) স্কটল্যান্ডকে হারিয়ে প্রথমবারের মতো আইসিসি ওয়ানডে বিশ্বকাপ খেলার যোগ্যতা অর্জন করে। ফাইনাল ম্যাচের আগেই তিনি রাজধানীর মানিক মিয়া এভিনিউতে জাতীয় ক্রিকেটারদের গণসংবর্ধনার ঘোষণা দেন। ফাইনাল ম্যাচে কেনিয়াকে হারিয়ে বাংলাদেশের শিরোপাজয় যেন সেই গণসংবর্ধনা জাতীয় উৎসবে পরিণত হয়েছিল, দিনটি পহেলা বৈশাখ হওয়ায় যেন তাতে বয়ে গিয়েছিল আনন্দের জোয়ার! ২০১০ সালে ঢাকায় অনুষ্ঠিত দক্ষিণ এশীয় গেমসে বাংলাদেশ দল যাতে ভাল ফল করতে পারে, তার জন্য এ্যাথলেটদের উৎসাহ দিতে এগিয়ে এসেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। এসএ গেমসে পদকজয়ের জন্য নিজেদের উজাড় করে দেয়ার সবচেয়ে বড় যে মহৌষধ, সেই অর্থ পুরস্কারও এদিন ঘোষণা করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রীর দেয়া এই ঘোষণা বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনে নতুন অধ্যায়ের সূচনা করে। কোন সরকার প্রধানের এভাবে গেমসের আগে পুরস্কারের ঘোষণা দেয়ার নজির আছে বলে জানা নেই। সেবার ১৮ স্বর্ণপদক জিতে প্রধানমন্ত্রীকে খুশি করেছিলেন বাংলাদেশের ক্রীড়াবিদরা। ২০১৬ সালে সাউথ এশিয়ান গেমসে তিন স্বর্ণজয়ী ক্রীড়াবিদ সাঁতারু মাহফুজা খাতুন শীলা, ভারোত্তোলক মাবিয়া আক্তার সীমান্ত এবং শূটার শাকিল আহমেদকে পুরস্কারের ফ্ল্যাট বুঝিয়ে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এমনকি ২০১৯ সালে এসএ গেমসে বাংলাদেশের সেরা সাফল্যেও দারুণ উচ্ছ¡াস প্রকাশ করেছিলেন তিনি। নেপালে পদকজয়ীদের অভিনন্দন জানান, দাওয়াত দেন গণভবনে। করেন পুরস্কৃত। ২০১৯ বিশ্বকাপে বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার বাংলাদেশের সাকিব আল হাসান ৬০৬ রান করেন, উইকেট পান ১১টি। সাকিবকে ইংল্যান্ড বিশ্বকাপে দুর্দান্ত পারফর্মেন্সের কারণ জিজ্ঞাসা করা হলে তার জবাব ছিল, ‘বড় কারণ প্রধানমন্ত্রী’। কারণ হিসেবে সাকিব মনে করিয়ে দিয়েছিলেন বহুদিন আগে প্রধানমন্ত্রীর দেয়া এক বক্তব্যকে, যা তার মাঝে জাগিয়ে দিয়েছিল বড় কিছু করার স্পৃহা। সেই বড় হওয়ার তাড়না থেকেই সাকিব চেয়েছিলেন ভাল কিছু করার। আরচার রোমান সানা অলিম্পিকে সরাসরি খেলার যোগ্যতা অর্জন করে দেশে ফিরলে তাকে ডেকে নিয়ে মিষ্টিমুখ করিয়েছেন, তার অসুস্থ মায়ের চিকিৎসার খরচ দিয়েছেন, দিয়েছেন উৎসাহ। এছাড়াও আন্তর্জাতিক বডিবিল্ডিংয়ে বাংলাদেশের প্রথম স্বর্ণজয়ী বডিবিল্ডার হাসিব হলিকে ডেকে নিয়ে উৎসাহ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। করোনাকালে বঙ্গবন্ধু ক্রীড়াসেবী কল্যাণ ফাউন্ডেশনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১০ কোটি টাকা অনুদান প্রদান করেন। প্রধানমন্ত্রীর দেয়া এই অর্থ টাকা স্থায়ী আমানত হিসেবে রেখে তার লভ্যাংশ থেকে অসহায় ক্রীড়া ব্যক্তিত্বদের সহায়তা করা হচ্ছে এখনও। এইতো গত ১৫ সেপ্টেম্বর জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের সম্মেলন কক্ষে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক ক্রীড়াবিদদের জন্য প্রদেয় আর্থিক সহায়তার এক কোটি দশ লাখ টাকার চেক, সঞ্চয়পত্র ও ফ্ল্যাটের বরাদ্দপত্র প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে হস্তান্তর করেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল-এমপি। অনুষ্ঠানে ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, ‘আমরা সৌভাগ্যবান যে একজন ক্রীড়াবান্ধব প্রধানমন্ত্রী পেয়েছি। আমার জানা নেই, বিশ্বের আর কোন দেশের প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার মতো এতোটা ক্রীড়া অন্তঃপ্রাণ কি-না! প্রধানমন্ত্রীর সার্বিক পৃষ্ঠপোষকতায় দুর্বার গতিতে এগিয়ে চলছে আমাদের ক্রীড়াঙ্গন। ক্রিকেট, আরচারি, শূটিং, হকি, দাবা, সুইমিং ও ফুটবলসহ সব খেলায় আমাদের খেলোয়াড়রা জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে একের পর এক সাফল্য নিয়ে আসছেন। প্রধানমন্ত্রী সুখে-দুঃখে সবসময় আমাদের খেলোয়াড়দের পাশে থাকেন। স্পোর্টসের উন্নয়নে বা যেকোন ক্রীড়াবিদ বা ক্রীড়া সংগঠকের যেকোন সমস্যায় তিনি সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন। ক্রীড়াঙ্গনকে এভাবে এগিয়ে নেয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রীর প্রতি অশেষ ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি।’ প্রয়াত তারকা ফুটবলার বাদল রায়ের পরিববারসহ অন্যান্য ক্রীড়াবিদদের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে অর্থ ও ফ্ল্যাট বরাদ্দ দিয়েছিলেন সেগুলো সংশ্লিষ্টদের কাছে হস্তান্তর করেন ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী। বাদল রায়ের পরিবারকে (স্ত্রী মাধুরী রায়ের হাতে) ২৫ লাখ টাকা ও একটি ফ্ল্যাট প্রদান করেন প্রধানমন্ত্রী। উল্লেখ্য, বাদল রায় বেঁচে থাকতে একবার গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। তখন জরুরী ভিত্তিতে তাকে সিঙ্গাপুরে নেয়া, চিকিৎসা করানো, দেশে আনাসহ তার চিকিৎসার সব খরচ বহন করে বাদলকে নতুন জীবন দেন শেখ হাসিনা। এ কথা জীবিতকালে বহুবার নিজ মুখে স্বীকারও করে গেছেন বাদল। ১৫ সেপ্টেম্বরের ওই অনুষ্ঠানে ক্রীড়া সংগঠক সাব্বির হোসেনকে ৫ লাখ, সাবেক ফুটবলার শহীদ উদ্দিন সেলিমকে ১০ লাখ, স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের ফুটবলার সুভাস সাহাকে ৩০ লাখ, তন্দ্রিমা শিকদারকে ১০ লাখ, সাইফুল ইসলাম ভোলাকে ৫ লাখ, আকরাম হোসেন সরকারকে ১০ লাখ ও আমিনুল ইসলাম সবুজকে ২৫ লাখ টাকার সমপরিমাণ সঞ্চয়পত্র প্রদান করা হয়। মাঠ না থাকলে খেলা নেই। খেলা না থাকলে খেলোয়াড় হবে না। তাহলে একটা জাতি অনেক পিছিয়ে যাবে শারীরিক সক্ষমতায়। এটা অনুধাবণ করেই প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশেই যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় সারা দেশে ৪৯০ মিনি স্টেডিয়াম নির্মাণ করছে। আনসারসহ বিভিন্ন সার্ভিসেস সংস্থায় শত শত নারী ক্রীড়াবিদদের চাকরি হয়েছে তাঁরই কল্যাণে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আমলে সবচেয়ে বেশি উন্নয়নের ছোঁয়া লেগেছে নারী ফুটবলে। নারী ফুটবলারদের সাফল্যে তাদের প্রাধান্য দেয়াতেই তাদের অজপাড়াগাঁয়ে এখন বিদ্যুতের সংযোগ ও পাকা রাস্তা হয়েছে। এতে পুরো গ্রামেরই চিত্র বদলে গিয়ে উন্নতির পথে ধাবিত হয়েছে। নারী ফুটবলারদের সাবলম্বী করেছেন তিনি। আগে আন্তর্জাতিক ফুটবলে প্রতিপক্ষ দলগুলোর কাছে বাংলাদেশ নারী ফুটবল দল হারতো ৬-৭ গোলে। এদেশের মহিলা ফুটবল ছিল আঁতুরঘরে। ফুটবলারদের খেলা দেখে সবাই হাসাহাসি করত। আর এখন? মুগ্ধ হয়ে দেখে, তালি বাজায় এবং তাদের সমর্থনে গলা ফাটায়! এটাই সত্য, এটাই বাস্তবতা। খেলোয়াড়রা বেসিক ফুটবল শিখেই আসে খেলতে। মহিলা ফুটবল উন্নতির সোপান বেয়ে ওপরে উঠে যাচ্ছে তরতর করে। এবং সেটা খুব দ্রæতই। আর এটাই বিস্ময়কর ব্যাপার। আর এটা সম্ভব হয়েছে প্রধামন্ত্রীর বদৌলতেই। মূলত দেশজুড়ে অনুষ্ঠিত বঙ্গমাতা বেগম ফজিলতুন নেছা বালিকা প্রাথমিক বিদ্যালয় ফুটবল টুর্নামেন্টের সুবাদে (এছাড়া জেএফএ অ-১৪ কাপ এবং প্ল্যান অ-১৫ বালিকা ফুটবল কার্যক্রমের ভূমিকাও উল্লেখযোগ্য। তবে বঙ্গমাতা ফুটবল আসরের ভূমিকাই সবচেয়ে বেশি। বাংলাদেশ প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে ২০১১ সাল থেকে শুরু হয় বহুল আলোচিত এই টুর্নামেন্টটি। এর আগেই অবশ্য ২০১০ সাল থেকে শুরু হয় বালক পর্যায়ের টুর্নামেন্ট, যার নাম বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বালক প্রাথমিক বিদ্যালয় ফুটবল টুর্নামেন্ট। সংখ্যার দিক থেকে বিবেচনা করলে এ টুর্নামেন্ট দুটি বিশ্বের সবচেয়ে বড় টুর্নামেন্ট। আজকের বাংলাদেশ মহিলা দলের ফুটবলাররা ‘বাংলার বাঘিনী’ হিসেবে উপাধি পেয়েছে ফুটবলপ্রেমীদের কাছে। গত কয়েক বছরে বিভিন্ন বয়সভিত্তিক আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টে তারা এ পর্যন্ত নয়টি সাফল্য পেয়েছে। বাংলাদেশ দলের একেকটি খেলোয়াড় আজ যেন তারকা। পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, এদের বেশিরভাগই উঠে এসেছে বঙ্গমাতা ফুটবল খেলে! তালিকায় আছে মারিয়া, তহুরা, মনিকা, আঁখি, সানজিদা, মারজিয়া, মৌসুমী, শামসুন্নাহার, মাহমুদাসহ আরও অনেকেই। এদের মতো স্কিলফুল এবং কোয়ালিটি সম্পন্ন ফুটবলারদের বাফুফে জাতীয় দলে বেছে নিতে পেরেছে এই বঙ্গমাতা ফুটবল আসর থেকেই। ফলে এই আসরের গুরুত্ব এবং অবদান অনস্বীকার্য ভাল ফুটবলার তৈরিতে। বঙ্গমাতা অ-১৯ নারী আন্তর্জাতিক ফুটবলও প্রধানমন্ত্রীর আমলে শুরু। এ পর্যন্ত অনুষ্ঠিত একটি আসরে বাংলাদেশ নারী দল চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করেছে (লাওসের সঙ্গে যুগ্মভাবে)। মোটকথা-নারী ফুটবলের উন্নতি সবদিক থেকেই ছাড়িয়ে গেছে পুরুষ ফুটবলকে। বাংলাদেশ জাতীয় নারী ফুটবলারদের একাধিকবার সংবর্ধনা দিয়ে তাদের এ পর্যন্ত আনুমানিক ২৫/৩০ লাখ টাকা করে উপহার দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী তাদের জড়িয়ে নিয়েছেন মায়ার বাঁধনে। দুষ্টুমি করে বলেছেন, ‘এ্যাই, তোরা কিন্তু আমাকে ম্যাডাম ডাকবি না! নানি বা দাদি বলে ডাকবি।’ এ কথা অনস্বীকার্য-ক্রীড়াপ্রেমী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা না থাকলে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের পাশাপাশি ক্রীড়াঙ্গনেও উন্নয়নের ছোঁয়া লাগত না। গত এক যুগে ক্রীড়াক্ষেত্রে সবধরনের সুযোগ-সুবিধা বাড়িয়েছেন তিনি। দেশের ক্রীড়ায় বাজেট বাড়িয়েছেন। ফলে অনেক সাফল্য ধরা দিয়েছে। আগামীতে আরও দেবে। প্রধানমন্ত্রীর সবচেয়ে বড় সমালোচকও ক্রীড়াক্ষেত্রে তাঁর অবদান নিয়ে সংশয় প্রকাশ করতে পারবেন না। করতে পারবেন না কোন নিন্দা। সেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শুভ জন্মদিন আজ। রাষ্ট্রপ্রধান, বঙ্গবন্ধুকন্যা, আওয়ামী লীগের সভানেত্রী পরিচয়ের পাশাপাশি ইতিহাস তাঁকে একজন ক্রীড়াপাগল মানুষ হিসেবেও চিরকাল মনে রাখবে। দেশের প্রতিটি সেক্টরের পাশাপাশি ক্রীড়াঙ্গনে তাঁর মতো অভিভাবক জাতির জন্য খুবই প্রয়োজন। তাঁর ছায়াতলে বিশ্ব ক্রীড়াঙ্গনে বাংলাদেশ একদিন সগৌরবে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে। ক্রীড়াপ্রেমী-ক্রীড়াবান্ধব হিসেবে বাংলাদেশের খেলাধুলার ইতিহাসে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অবদান স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। তাঁকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা ও শ্রদ্ধাঞ্জলি।
×