ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

প্রতিবাদ অব্যাহত

‘সিআরবিতে হাসপাতাল করতে দেয়া হবে না’

প্রকাশিত: ২১:৫৬, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২১

‘সিআরবিতে হাসপাতাল করতে দেয়া হবে না’

স্টাফ রিপোর্টার, চট্টগ্রাম অফিস ॥ সিআরবিতে বেসরকারী হাসপাতাল নির্মাণ প্রক্রিয়ার বিরুদ্ধে প্রতিদিনই চলছে প্রতিবাদী কর্মসূচী। শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটির দিনে সমাগম ঘটে বিপুলসংখ্যক মানুষের। প্রগতিশীল বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী ও সমর্থকদের অংশগ্রহণ থাকলেও এক্ষেত্রে নেই কোন দলীয় সঙ্কীর্ণতা। বরং দলমত নির্বিশেষে সকলেই শামিল হয়েছে সিআরবি রক্ষার আন্দোলনে। ‘সিআরবিতে হাসপাতাল চাই না, ফুসফুস কেটে হাসপাতাল করতে দেয়া হবে না’- এমন স্লোগান, বক্তব্য আর গানে শুক্রবার বিকেলে মুখর ছিল সিআরবি রক্ষার মঞ্চ। নাগরিক সমাজ চট্টগ্রামের প্রতিবাদী সমাবেশে দুপুর থেকেই সিআরবি চত্বরে বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন দলে দলে মিছিল নিয়ে আসতে থাকে। বিকেল সাড়ে চারটার মধ্যেই জনাকীর্ণ হয়ে পড়ে সিআরবি রক্ষা মঞ্চের আশপাশের এলাকা। অংশগ্রহণকারীরা বলেন, ‘সিআরবিতে হাসপাতাল হতে দেব না।’ বক্তারা বলেন, পরিবেশ ধ্বংস করে সিআরবিতে বেসরকারী হাসপাতাল নির্মাণ প্রক্রিয়ার বাতিল করতে হবে। প্রাণপ্রকৃতি রক্ষায় সকলকে ঐক্যবদ্ধ থেকে চট্টগ্রামের ফুসফুসখ্যাত সিআরবিকে বাঁচাতে হবে। হেরিটেজ ঘোষিত সিআরবিতে হাসপাতাল নির্মাণ প্রকল্পটি সম্পূর্ণ বেআইনী এবং সংবিধান পরিপন্থী, যা বাস্তবায়ন করা হলে জীববৈচিত্র্য ধ্বংস হবে। সিআরবিকে প্রাকৃতিক পরিবেশ, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যগত এলাকা হিসেবে সংরক্ষণ করতে হবে। শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের কবর, স্মৃতিচিহ্ন ধ্বংস ও গুঁড়িয়ে দিয়ে যারা হাসপাতাল করতে চায়, তারা দুঃসাহস দেখিয়েছে। এমন চক্রান্ত চট্টগ্রামবাসী সফল হতে দেবে না। যারা সিআরবি ধ্বংস করে হাসপাতাল করার পক্ষে নেমেছেন, তারা চট্টগ্রামবাসীর শত্রু হিসেবে চিহ্নিত হবেন। সিআরবিতে স্থাপনা চট্টগ্রামবাসী না চাইলে চাপিয়ে দেয়ার দরকার নেই- রেলমন্ত্রী ॥ সিআরবিতে কোন স্থাপনা চট্টগ্রামের মানুষ যদি না চান, সেটা জোর করে চাপিয়ে দেয়ার প্রয়োজন নেই। আর এক্ষেত্রে তথ্যগত কোন ভুল হচ্ছে কিনা সেটা খতিয়ে দেখা দরকার আছে। যে কথাগুলো বলে ও অভিযোগ তুলে আন্দোলন হচ্ছে, সেটার ভিত্তি কতটুকু সেটি যাচাই-বাছাই করার জন্য আমাদের সময় দিতে হবে। শুক্রবার সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে কথাগুলো বলেন রেলপথ মন্ত্রী মোঃ নুরুল ইসলাম সুজন। রেলমন্ত্রী বলেন, আন্দোলনের কথা টিভি পত্রিকায় দেখেছি। কিন্তু কী নিয়ে আন্দোলন, তা আনুষ্ঠানিকভাবে বা অভিযোগ আকারে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষে কাছে তুলে ধরা হয়নি। আমাদের ডিজি, জিএম, সচিব, প্রধানমন্ত্রী বরাবরে কোন অভিযোগ করা হয়নি। তাহলে কী কারণে এই আন্দোলন, কেন এসব অভিযোগ তা জানানোর পরেও যদি প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়, তখন না আন্দোলনের প্রশ্ন আসবে। রেলমন্ত্রী বলেন, অভিযোগ আনুষ্ঠানিকভাবে আমরা পাইনি। তাদের অভিযোগ কী, সেটা তো আগে বলতে হবে। আমাদের পক্ষ থেকে যখন বলা হয়েছে, এখন আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযোগের দরখাস্ত দেয়া হয়েছে। সেটা আমরা খতিয়ে দেখব। তিনি বলেন, সরকারী সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রাইভেট পাবলিক পার্টনারশিপে উৎসাহ দেয়া হচ্ছে। আমাদের সরকারের যে সকল প্রকল্প আছে তা নীতিগতভাবে ৩০ শতাংশ পিপিপির অধীনে বাস্তবায়ন করা যায়। স্থানীয় ও বৈদেশিক বিনিয়োগে উৎসাহ দিতে সরকার সেই প্রচেষ্টা করছে। তারই আওতায় হাসপাতাল নির্মাণের প্রকল্পটি রেলওয়ের। ২০১৪ সাল থেকে এটির প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। তখন কেউ তো আপত্তি তুলেনি। এটা যখন বাস্তবায়ন করতে আসছে তখনই আপত্তি তোলা হলো। আপত্তির কারণ তো আগে জানতে হবে। সেখানে তো হাসপাতাল ও মেডিক্যাল কলেজ হচ্ছে। সিআরবিতে নয়, অন্যত্র হাসপাতালের দাবি উঠেছে এমন প্রশ্নের জবাবে রেলমন্ত্রী বলেন, যখন বিদ্যুত প্রকল্প হয় তখন এসব নিয়ে অনেক কিছু গেছে।
×