ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

ঠাকুরগাঁওয়ে ধর্ষকের বিচার চেয়ে দ্বারে দ্বারে ঘুরছে প্রতিবন্ধী পরিবার

প্রকাশিত: ১৯:৫৫, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২১

ঠাকুরগাঁওয়ে ধর্ষকের বিচার চেয়ে দ্বারে দ্বারে ঘুরছে প্রতিবন্ধী পরিবার

নিজস্ব সংবাদদাতা, ঠাকুরগাঁও ॥ ঠাকুরগাঁওয়ে ধর্ষকের বিচারের আকুতি জানিয়ে দ্বারে দ্বারে ঘুরছে একটি প্রতিবন্ধী পরিবার। কখনও পুলিশ, কখনও জনপ্রতিনিধি, কখনওবা সাংবাদিকের কাছে বিচার চেয়ে হাজির হচ্ছে পরিবারটি। একদিকে অসহায় এ প্রতিবন্ধী পরিবারটি যেমন ঘুরছে ন্যায় বিচারের আশায়, অপরদিকে ধর্ষক এখনও এলাকায় ঘুরছে দাপট নিয়েই । ঠাকুরগাঁওয়ের সদর উপজেলার জগন্নাথপুর স্কুলপাড়া গ্রামের এই পরিবারের সদস্য সংখ্যা ০৪ জন। কিন্তু হতভাগা এই পরিবারের প্রতিটি সদস্যই মানসিক ও শারীরিক প্রতিবন্ধী। বুধবার বিকেলে সাংবাদিকের কাছে ধর্ষকের বিচার নিয়ে হাজির হন ধর্ষিতা কিশোরীর দাদা ও দাদি। কিশোরীর দাদি ভারতী রাণী জানান, গত ২ সেপ্টেম্বর তার প্রতিবন্ধি কিশোরী নাতনীকে রেখে পরিবারের সবাই কাজে যায়। সেই সুযোগে পাশের বাড়ির আদু মিয়া বাসায় গিয়ে কিশোরীকে নানান প্রলোভন ও ভয়ভিতি দেখিয়ে ধর্ষণ করে। এসময় বাসায় এসে দাদি ভারতী ঘটনাটি দেখে ফেলে। তখন বিষয়টি জানাজানি হলে এলাকার মেম্বার সমঝোতা হবে আশা দিয়ে চুপ থাকতে বলে পরিবারটিকে। কিন্তু দীর্ঘ দিনেও কোনো বিচার না পেয়ে ১৬ সেপ্টেম্বর এলাকাবাসীর কাছে বিচার নিয়ে ছুটতে থাকে পরিবারটি। একপর্যায়ে দুই-একজন প্রতিবেশির সহায়তায় পুলিশের স্মরনাপন্ন হয়ে থানায় অভিযোগ করে তারা। ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে ঠাকুরগাঁও সদর থানার উপ পরিদর্শক শহিদুল ইসলাম জানান, এই বিষয়ে থানায় একটি মামলা হয়েছে। এ ঘটনায় মারফত নামে একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সেই মোতাবেক খোঁজ নিলে মামলার এজাহারে দেখা যায়, গত মে মাসের ২৫ তারিখের একটি ঘটনা উল্লেখ করে মারফত (৫৩) নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মামলায় তাকে এক নম্বার আসামী করেছে। অভিযোগ পেয়েই মারফতকে আসামী করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। আর ২ সেপ্টেম্বর হাতেনাতে ধরাপরা আদু মিয়া(৩০) কে ২ নম্বার আসামী করে পালাতক দেখানো হয়ছে। যদিও আদু মিয়া এলাকায় স্বাভাবিক ভাবেই ঘুরে বেড়াচ্ছে বলে দাবি করছে এলাকাবাসী। এলাকাবাসীর দাবি, বাবুল মেম্বারের ঘনিষ্ঠ লোক আদু মিয়া। তাই তাকে বাঁচানোর চেষ্টা করছে সে। আর মারফতের সাথে পূর্ব শত্র“তা থাকায় প্রতিবন্ধী পরিবারটিকে ভুল বুঝিয়ে তাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করছে মেম্বার। তবে মেম্বার বাবুল এই অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, প্রতিবন্ধী কিশোরী নিজেই মারফতের নাম বলেছে। সেই প্রতিবন্ধী কিশোরী জানায়, “মেম্বার দাদু মারফতের নাম বলতে বলেছে। তাহলে আমাকে টাকা দিবে”। তবে ধর্ষণের ঘটনায় আদুর মিয়ার নাম স্পষ্ট জানায় প্রতিবন্ধী কিশোরী। এই বিষয়ে জগন্নাথপুর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আলাল মাষ্টার বলেন, ঘটনাটি আমার কানে এসেছে। তবে বিস্তারিত জানিনা। খোজ নিয়ে পরিবারের পাশে দাড়ানোর চেষ্টা করবো। ঠাকুরগাঁও সদর থানার তদন্তকারী কর্মকর্তা আতিকুল ইসলাম জানান, ধর্ষনের মামলাটি তদন্তাধীন রয়েছে। মেডিকেল রির্পোট আসলে তদন্তে সহায়ক হবে সেটি। মামলার প্রেক্ষিতে আসামী গ্রেফতার অব্যাহত রয়েছে।
×