ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

কলাপাড়ায় অবরুদ্ধ নৌ-পুলিশ ছয় ॥ ঘণ্টা পরে উদ্ধার

প্রকাশিত: ০০:০৯, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২১

কলাপাড়ায় অবরুদ্ধ নৌ-পুলিশ ছয় ॥ ঘণ্টা পরে উদ্ধার

নিজস্ব সংবাদদাতা, কলাপাড়া, পটুয়াখালী, ২১ সেপ্টেম্বর ॥ কলাপাড়ায় রাবনাবাদ পাড়ের চরবালিয়াতলীতে পুলিশি ধাওয়ায় জেলে সুজন হাওলাদারের (৩০) মৃত্যুকে কেন্দ্র করে তোলপাড় চলছে। জেলেসহ স্থানীয় শত শত বিক্ষুব্ধ মানুষ সুজনকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ দাবি করে নৌপুলিশকে মঙ্গলবার সকাল ১০টার পর থেকে অবরুদ্ধ রাখে। বিরাজ করে চরম উত্তেজনা। কলাপাড়ার থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে স্থানীয় চেয়ারম্যান ও মেম্বারদের সহায়তায় অবরুদ্ধ নৌ-পুলিশের এএসআই মামুনসহ তার সহযোগীদের ছয় ঘণ্টা পরে বিকেলে উদ্ধার করেন। স্থানীয়রা জানান, নৌপুলিশের সদস্যরা ট্রলারযোগে জেলেদের অনেকক্ষণ ধাওয়া করলে জেলেরা তাদের ট্রলারটি কিনারে ভিড়ে চার জনে দৌড়ে পালায়। ট্রলারে থাকা সুজনকে নৌপুলিশ ধরে পেটায়। ট্রলারের জালের ওপরে সুজন অচেতন হয়ে পড়ে। খবর ছড়িয়ে যায় সুজন মারা গেছে। এতে বিক্ষুব্ধ শত শত মানুষ নৌপুলিশের সদস্যদের ট্রলারসহ অবরুদ্ধ করে রাখে। অচেতন সুজনকে প্রথমে বাবলাতলা বাজারে নিয়ে যায় স্বজনরা। তবে অভিযুক্ত এএসআই মামুন জানান, তারা টহল দিচ্ছিলেন, এ সময় তাঁদের দেখে সুজনদের ট্রলারটি দ্রæত চালিয়ে কিনারে ভিড়ায়। অপর জেলেরা দৌড়ে চলে যায়। এ সময় তাঁরা ট্রলারের কাছে গিয়ে জালের ওপরে সুজনকে পড়ে থাকতে দেখেন। ট্রলারে কারেন্ট জাল ছিল বলে পুলিশ দেখে ওরা পালাচ্ছিল বলে জানান পুলিশ কর্মকর্তা মামুন। পেটানোর কথা অস্বীকার করেন। এ ঘটনায় এলাকায় চরম উত্তেজনা দেখা দেয়। লালুয়ার বানাতিবাজার নৌপুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই শহিদুল ইসলাম জানান, তিনি ছুটিতে ছিলেন খবর শুনে কর্মস্থলে আসছেন। ঘটনাস্থলে কলাপাড়া থানা পুলিশ রয়েছে। কলাপাড়ার ইউএনও আবু হাসনাত মোহাম্মদ শহিদুল হক জানান, তিনি ঘটনাস্থলে যাওয়ার জন্য রওনা দিয়েছেন। নিহত সুজনের মামা ইব্রাহিম খলিল বলেন, ‘ওদের ট্রলার নৌ-পুলিশ ধাওয়া করে চিপা খালে ঢুকায়। সেখান থেকে চারজন লাফাইয়া পইড়্যা কিনারে আয়। আর সুজন ট্রলারের মধ্যে অজ্ঞান হয়ে আছিল।’ প্রথমে বাবলা তলার ডাক্তারদের কাছে নিয়ে যান। পরে কলাপাড়ায় নিয়ে আসেন। বালিয়াতলী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এবিএম হুমায়ুন কবির জানান, হাজার হাজার মানুষ নৌপুলিশকে অবরুদ্ধ করে রেখেছে। কলাপাড়া ও মহিপুর থেকে ২০-২৫ পুলিশ এসেছে। তাঁদের শান্ত করে নৌ-পুলিশের সদস্যদের নেয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। কলাপাড়া থানার ওসি খন্দকার মোস্তাফিজুর রহমান জানান, ঘটনাস্থলে একাধিক অফিসারের নেতৃত্বে প্রয়োজনীয় সংখ্যক ফোর্স গেছেন। উল্লেখ্য, অভিযুক্ত এএসআই মামুন এ বছরের মে মাসে লালুয়ার আরেক বাসিন্দা আমির হোসাইনকে স্বামী-স্ত্রীর ঝগড়ার জের ধরে পুলিশ ফাড়িতে ডেকে এনে মারধর করার অভিযোগ রয়েছে। এর বিরুদ্ধে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের অভিযোগ।
×