ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

বান্দরবান সীমান্তে পর্যটকদের জন্য নতুন আকর্ষণ

প্রকাশিত: ০০:০৮, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২১

বান্দরবান সীমান্তে পর্যটকদের জন্য নতুন আকর্ষণ

নিজস্ব সংবাদদাতা, বান্দরবান ॥ বান্দরবানের ৭টি উপজেলার মধ্যে সবচেয়ে বেশি পর্যটন স্পট ও পর্যটকের আনাগোনা থানচি উপজেলায়। আর এবার পর্যটকদের জন্য দৃষ্টিনন্দন সবচেয়ে বড় ঝুলন্ত সেতু তৈরি হলো মিয়ানমার সীমান্তবর্তী জেলার থানচি উপজেলার বড় মদকে। এর ফলে উপজেলাটির পর্যটন শিল্পের বিকাশ একধাপ এগিয়েছে বলে মনে করছে সংশ্লিষ্টরা। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, পর্যটক ও বড় মদক বাজারের লোকজনের যাতায়াতের জন্য সাংগু নদীর ওপর ঝুলন্ত সেতুটি ২ কোটি টাকা ব্যয়ে ২০১৯-২১ অর্থবছরে নির্মাণ করেছে পার্বত্য জেলা পরিষদ। ওপার-এপার দুইপারের মানুষের মেলাবন্ধন ও পর্যটনকে একধাপ এগিয়ে নিতে নতুন এই ঝুলন্ত সেতু বলে মনে করছে সীমান্তে বসবাসরত মানুষ। আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী বীর বাহাদুর (উশৈসিং) এমপি ঝুলন্ত সেতু উদ্বোধন করে জনসাধারণ ও পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত করবেন। এই ব্যাপারে বড় মদক বাজারের বাসিন্দা অংশৈম্যা মারমা জানান, এ ঝুলন্ত সেতু নির্মাণের ফলে বড় মদক অঞ্চলে একটি মাত্র সরকারী প্রাইমারী স্কুলের ওপারের কোমলমতি শিক্ষার্থীরা লেখাপড়া করার সুযোগ পাচ্ছে। একই বাজারের বাসিন্দা উবামং মারমা বলেন, ওপারে প্রæরু“সাঅং কারবারীপাড়া, উসামংপাড়া, ঙাসালাংপাড়া, উসাথোয়াইপাড়া, জুগিরাংপাড়া, চাইশৈউপাড়া, বাসিংঅং পাড়া, পাতোয়া ম্রো পাড়া, অংগি খুমী পাড়া, ঙারেসা পাড়া, য়ংনং ম্রো পাড়াসহ ৩০টি পাড়ার লোকজন বর্ষাকালে সাঙ্গু নদীতে পানি বেশি থাকলে অনেক কষ্ট হয়েছিল এপারে আসতে। সুতরাং এ ঝুলন্ত সেতু হবে দুইপারের ৫ হাজার মানুষের সেতুবন্ধন। থানচির রেমাক্রি ইউপি চেয়ারম্যান মুইশৈথুই মারমা বলেন, থানচি উপজেলা দুর্গম সীমান্তে বিনোদন, পর্যটন আর ওপার-এপার পারাপারে ঝুলন্ত সেতুটি অনেক উপকারে আসবে। এই ব্যাপারে থানচির পর্যটক গাইড জাহেদুল ইসলাম ইমন বলেন, ঝুলন্ত সেতুর কারণে সেখানে অবশ্যই পর্যটকের সংখ্যা আগের যে কোন সময়ের চেয়ে বাড়বে। পার্বত্য বান্দরবান জেলা পরিষদের প্রকৌশল বিভাগের উপসহকারী প্রকৌশলী থোয়াইচমং মারমা বলেন, অনেক কষ্ট ও ত্যাগ স্বীকার করে বড় মদকবাসীর দাবির প্রেক্ষিতে ঝুলন্ত সেতু নির্মাণ করতে পেরেছি। পরিষদের চেয়ারম্যান ক্যশৈহ্লার নির্দেশক্রমে ঝুলন্ত সেতু নির্মাণের উদ্যেগ গ্রহণ করা হয়েছিল। একটি সেতুতে বদলে গেল দুই গ্রাম নিজস্ব সংবাদদাতা, ফটিকছড়ি থেকে জানান, উপজেলার নারায়ণহাট ইউনিয়নের দুর্গম এলাকা সুন্দরপুর-হাপানিয়া সড়কে ২০ লাখ টাকা ব্যয়ে ৩০ ফুট দৈর্ঘের একটি সেতু নির্মাণ করেছে চট্টগ্রাম জেলা পরিষদ। এ উপজেলার বিশিষ্ট দানবীর ড. মাহমুদ হাসানের নামানুসারে এ সেতুর নাম রাখা হয় ‘ড. মাহমুদ হাসান সেতু’। চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এম এ সালাম আনুষ্ঠানিকভাবে এ সেতুর উদ্বোধন করেন। এ সময় জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী সাব্বির ইকবাল, জেলা পরিষদ সদস্য ও মরহুম ড. মাহমুদ হাসানের সন্তান আখতার উদ্দিন মাহমুদ পারভেজ, এ্যাডভোকেট উম্মে হাবিবা, বখতেয়ার সাঈদ ইরান উপস্থিত ছিলেন। সেতুটি নির্মিত হওয়ায় এলাকার বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ উচ্ছ¡াস প্রকাশ করেছেন। স্থানীয়রা জানান, সুন্দরপুর-হাপানিয়া সড়কে সেতু নির্মাণ ওই এলাকার মানুষের প্রাণের দাবি ছিল যা স্বাধীনতার পর এই প্রথম বাস্তবায়ন হলো। সেতুটি নির্মাণের মধ্য দিয়ে প্রায় অর্ধ লক্ষাধিক মানুষের দীর্ঘদিনের আকাক্সক্ষা পূরণ হয়েছে। সুন্দরপুর গ্রামের স্কুল শিক্ষক মুহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, এখানে আগে কাঠের সেতু ছিল, সেটি দিয়ে বর্ষাকালে শিক্ষার্থীদের যাতায়াত করা ঝুঁকিপূর্ণ ছিল। নারায়ণহাট ইউপি চেয়ারম্যান হারুনুর রশীদ বলেন, আমরা অনেক খুশি। জেলা পরিষদ এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি প‚রণ করেছে। সেতুটি নির্মাণের কারণে খেটেখাওয়া মানুষ থেকে শুরু করে ব্যবসায়ী-চাকরিজীবী সবাই লাভবান হবে। জেলা পরিষদ সদস্য আখতার উদ্দিন মাহমুদ বলেন, হাপানিয়া ও সুন্দরপুর গ্রামের মানুষের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল একসেতু। তিনি সেতুটির উন্নয়নে বরাদ্দ দেয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুস সালামের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।
×