ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

মুন্সীগঞ্জে অস্ত্র ও স্বর্ণালঙ্কারসহ ৭ ডাকাতসহ গ্রেফতার ৮

প্রকাশিত: ১৬:০৭, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২১

মুন্সীগঞ্জে অস্ত্র ও স্বর্ণালঙ্কারসহ ৭ ডাকাতসহ গ্রেফতার ৮

স্টাফ রিপোর্টার, মুন্সীগঞ্জ ॥ মুন্সীগঞ্জের মেঘনা তীরের চিতলিয়ায় দুটি স্বর্ণের দোকানে দুর্র্ধষ ডাকাতির রহস্য উৎঘাটন হয়েছে। সোমবার ডাকাতির লুন্ঠিত স্বর্ণালংকার, ব্যবহৃত স্পিড বোট ও অস্ত্রসহ ৮ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে রয়েছে ৭ ডাকাত ও ডাকাতির মাল কেনা এক ব্যবসায়ীকে। এ সময় উদ্ধার করা হয়েছে ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত পিস্তল, ১ রাউন্ড পিস্তলের গুলি, ৪ রাউন্ড শর্টগানের গুলি, ১টি চাপাতি, ৬৯ ভরি স্বর্ণালংকার ও নগদ ১৫ হাজার টাকা। এছাড়া নারায়ণগঞ্জের বন্দর থেকে জব্দ করা হয় ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত স্পীডবোট। গ্রেফতারকৃতরা হলেন, শরিয়তপুর জেলার জাজিরা থানার সোনার দেউল গ্রামের মৃত মোসলেম পেদার পুত্র মো সাব্বির হোসেন (৪৯), মাদারীপুর জেলার শিবচর থানার চর চান্দা গ্রামের আরব আলী হাওলাদারের পুত্র আরিফ হাওলাদার (২৫), চাঁদপুর জেলার মতলব উত্তর থানার দূর্গাপুেের মৃত বাহর আলী প্রধানের পুত্র মোহাম্মদ আলী (৪০), শরিয়তপুরের নড়িয়া থানার রাজারিশ্বা গ্রামের মো. জুলমত আলী মোল্লার পুত্র মো. বিল্লাল মোল্লা (৩০), চাঁদপুর জেলার ফরিদগঞ্জ থানার উত্তর বিষ্ণুবন্দর গ্রামের মৃত অলি আহম্মেদ বেপারীর পুত্র মো আনোয়ার হোসেন (৩২), মাদারিপুরের শিবচর থানার আঃ রব মিয়া খার পুত্র মো. ফারুক খা (২১), শরিয়তপুরের নড়িয়া থানার পশ্চিম নওপাড়া গ্রামের মৃত আসমত কবিরাজের পুত্র মোঃ আফজাল হােসেন (৪৭)। এছাড়া ডাকাতির অবৈধ স্বর্ণ কেনার দায়ে শরিয়তপুরের ডামুড্যা থানার বাহেরচর গ্রামের মো. ইদ্রিস বেপারীর পুত্র স্বর্ণ ব্যবসায়ী মো আক্তার হোসেনকে গ্রেফতার করা হয়। তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে ঘটনার ৫ দিনের মধ্যেই মুন্সীগঞ্জের মুন্সীগঞ্জ, মাদারীপুর, শরীয়তপর, নারায়ণগঞ্জ এবং ঢাকা থেকে ডাকাতি কাজে ব্যবহৃত স্পিডবোট, লুন্ঠিত ৬৯ ভরি স্বর্ণালংকার, সংঘবদ্ধ ডাকাত চক্রের ৭ সদস্য এবং লুণ্ঠিত স্বর্ণের ক্রেতাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। সোমবার দুপুরে মুন্সীগঞ্জের পুলিশ সুপার আব্দুল মোমেন পিপিএম এক প্রেস কনফারেন্সে এসব কথা জানান। পুলিশ সুপার জানান, ডাকাতির পরই অভিযানে নামে জেলা পুলিশ। জেলা পুলিশ ও ডিবি পুলিশ যৌথ অভিযানে রবিবার দিনভর বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে ও তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে মুন্সীগঞ্জ, মাদারীপুর, শরিয়তপুর ও ঢাকা থেকে ডাকাতদের গ্রেফতার করা হয়। ডাকাতির পরই ডাকাতদল মালামাল বিক্রি করে ফেলে এক দোকানদারের কাছে। তিনি বলেন গ্রেফতারের সময় ডাকাত কাটা সাব্বির ও স্বপনের কাছ থেকে একটি ম্যাগাজিনসহ পিস্তল ও ১ রাউন্ড পিস্তলের গুলি, ডাকাত মোহাম্মদ আলীর কাছ থেকে ৪ রাউন্ড শর্টগানের গুলি, ডাকাত আনোয়ার হোসেনের কাছ থেকে ১টি চাপাতি, ডাকাত ফারুকের কাছ থেকে ১০ হাজার,আরিফের কাছ থেকে ৫ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়। পুলিশ সুপার আরো জানান, গ্রেফতারকৃতরা পেশাদারী ডাকাত, আন্তজেলা ডাকাত দলের সদস্য। এর আগেও তারা লঞ্চডাকাতিসহ নানা অপরাধের সাথে জড়িত ছিলো। ডাকাতচক্রটি মুন্সীগঞ্জ, চাঁদপুর, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জসহ নদী সংলগ্ন বিভিন্ন জেলায় ডাকাতি করে আসছিলো। চক্রের বাকি সদস্যদের গ্রেফতার ও স্বর্ণালংকার উদ্ধারের চেষ্টা চলছে। সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা বুধবার রাত আড়াইটায় চিতলিয়ায় দুটি স্বর্ণের দোকানে প্রায় ২০ জনের ডাকাত দল নদী পথে চিতলিয়া বাজারে এসে অস্ত্রের মুখে নিখিল বনিক এবং মনুনাগ স্বর্ণ শিল্পালয় থেকে অলংকার ও টাকা লুট করে নিয়ে যায়। ডাকাতরা ১০০ ভরি স্বর্ণ, নগদ ৩৫ লাখ টাকা ৪টি মোবাইল ফোন লুট করে স্পিডবোট যোগে রজতরেখা নদী হয়ে স্পিডবোটে মাদারীপুরের শীবচর চলে যায়। পরে ডাকাতদের ধরতে মাঠে নামে পুলিশ। উল্লেখ্য গত ১৫ সেপ্টেম্বর বুধবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে মুন্সীগঞ্জের চিতলিয়া বাজারে মনুনাগ ও নিখিল বনিক স্বর্নশিল্পায় থেকে আনুমানিক ১শ ৭ ভরি স্বর্ণ ও নগদ ৩৫ লাখ টাকা লুট করে নেয় ডাকাতরা। এ বিষয়ে নিখিল বনিক স্বর্ণশিল্পালয়ের মালিক রিপন বনিক বাদী হয়ে মুন্সীগঞ্জ সদর থানায় অজ্ঞাত ১৮/২০জনের নামে ডাকাতির মামলা করে। ঘটনার ৫দিনের মধ্যেই ডাকাতদের গ্রেফতার করা হল।
×