ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

বহুমাত্রিক পল্লী সমবায়

প্রকাশিত: ২২:২২, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২১

বহুমাত্রিক পল্লী সমবায়

গ্রামনির্ভর বাংলাদেশে পল্লী উন্নয়ন কর্মসূচী এক অবধারিত বিষয়। যা টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যমাত্রাকে তার গন্তব্যে পৌঁছে দিতে পারে। দেশে বহুমাত্রিক পল্লী সমবায় গড়ে তুলে সার্বিক কর্মযোগকে জনকল্যাণে এগিয়ে নেয়ার চিত্র ক্রমেই দৃশ্যমান হচ্ছে। স্থানীয় সরকার পর্যায়কে বিভিন্নভাবে শক্তিশালী করতে বহুমুখী কর্মপ্রকল্পে দারিদ্র্য বিমোচন কার্যক্রমও দ্রুত গতিতে চলমান থাকার দৃশ্য এক চলমান প্রক্রিয়া। বগুড়া অঞ্চলে সমবায় সমিতি কেন্দ্র করে স্থানীয় জনগণের শ্রম ও মেধায় নিজেদের পায়ে দাঁড়ানোর সফলতার চিত্র এক অনন্য কার্যক্রম। আত্মনির্ভরশীল হওয়ার এমন কর্মসাফল্যে পর্যায়ক্রমিক গতি প্রবাহে বগুড়ার ১২ উপজেলায় গড়ে উঠেছে আড়াই হাজারের বেশি সমবায় সমিতি, যা গ্রামবাংলার পল্লী উন্নয়নের এক জনবান্ধব কার্যপ্রক্রিয়া। বগুড়া সদরেই এ রকম ৩শ’ সমবায় সমিতি স্থানীয় উন্নয়নের লক্ষ্যমাত্রায় নিরন্তর কাজ করে চলেছে। এভাবে বিভিন্ন অঞ্চলে সমবায় সমিতি গঠন করে পল্লী উন্নয়ন কর্মসূচীকে নানা মাত্রিকে সফলতার দ্বারে পৌঁছে দেয়া এক অভাবনীয় গতিপ্রবাহ, যা সারাদেশের উন্নয়ন অভিগমনের স্থানীয় পর্যায়ের অভাবিত কর্মপরিকল্পনা। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার প্রত্যয়ে তারই নির্দেশিত অন্যতম কৌশল ছিল সমবায় সমিতি গঠন করে পল্লী উন্নয়নের গতিবেগ ত্বরান্বিত করা। সময়ের আদর্শ ধারণ করে পল্লী অঞ্চলে মাঠ পর্যায়ের কাক্সিক্ষত উন্নয়নকে তার লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছে দেয়া। সমবায় সমিতির জোরালো কর্মযোগে স্থানীয়ভাবে অপেক্ষাকৃত পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী ও অনুন্নত অঞ্চলকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে নতুন সম্ভাবনায় নিরলস কাজ করে যাওয়া। অনগ্রসর জনসাধারণকে উন্নয়নের ছোঁয়ায় তাদের সার্বিক জীবনমানকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যাওয়াও সমবায় সমিতির নির্ধারিত পরিকল্পনা। বহুমুখী সমবায় সমিতি গড়ে তুলে দেশের দারিদ্র্য বিমোচনকেও সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছে দেয়াও এমন কার্যবিধির কাক্সিক্ষত উদ্দেশ্য। সেটাই এখন সফলতার মুখ দেখার সুবর্ণ পর্যায়ে। এমন জনহিতকর কর্মযোগে সরকারী ও বেসরকারী প্রতিষ্ঠানসমূহ সম্মিলিতভাবে একজোট হয়ে উন্নয়নের গতিধারাকে গন্তব্যে পৌঁছে দিচ্ছে। টেকসই উন্ননের লক্ষ্যমাত্রায় দক্ষ ও মানসম্মত জনসম্পদ তৈরি করতেও নিয়ামকের ভূমিকায় থাকছে সমবায় সমিতির বিভিন্ন কর্মোদ্যোগ। বগুড়ায় ২ হাজার ৫২৯টি সমবায় সমিতির প্রায় ১১ হাজার সদস্য ৮ বছর ধরে তাদের পরিবারের জীবনমান বাড়ানোর প্রত্যাশায় নিরন্তর কর্মপ্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। প্রতিটি উপজেলায় ১টি মডেল সমবায় সমিতি গড়ে তোলাও পুরো কর্মপরিকল্পনার এক প্রাসঙ্গিক প্রক্রিয়া। যা সার্বিক উন্নয়ন অভিযাত্রাকে অবধারিত সাফল্যের দিকে ক্রমাগত ধাবিত করবে। শুধু তাই নয়, অত্র অঞ্চলের কিছু শিক্ষিত তরুণ-তরুণী চাকরির পেছনে অযথা সময় নষ্ট না করে সমবায় সমিতির মাধ্যমে নতুন কর্মপরিকল্পনা তৈরি করে নিজেদের কর্মসংস্থানের জন্য উদ্যোগীর ভূমিকায় নেমেছে। আগামীতে সমবায় সমিতির এই বহুমুখী কার্যক্রম বাংলাদেশের সর্বত্র সম্প্রসারিত হলে করোনাকালের চরম সঙ্কট কাটাতে বড় ধরনের ভূমিকা রাখবে নিশ্চয়ই।
×