ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

শেরপুরে কিশোরী অপহরণ-ধর্ষণ মামলায় যুবকের ৪৪ বছর কারাদন্ড

প্রকাশিত: ২১:৫৯, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২১

শেরপুরে কিশোরী অপহরণ-ধর্ষণ মামলায় যুবকের ৪৪ বছর কারাদন্ড

নিজস্ব সংবাদদাতা, শেরপুর ॥ শেরপুরে কিশোরীকে ফুসলিয়ে অপহরণ ও ধর্ষণের চাঞ্চল্যকর মামলায় বাবুল ওরফে বাবুল কবিরাজ (৩১) নামে এক যুবকের ৪৪ বছরের কারাদ- হয়েছে। রবিবার বিকেলে শেরপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. আখতারুজ্জামান আসামির ভার্চুয়াল উপস্থিতিতে ওই রায় ঘোষণা করেন। বাবুল সদর উপজেলার চরশেরপুর ইউনিয়নের চরশেরপুর পূর্বপাড়া গ্রামের মৃত তৈমদ্দিনের ছেলে। আসামির ৪৪ বছরের কারাদন্ডের মধ্যে অপহরণের দায়ে সংশ্লিষ্ট আইনের ৭ ধারায় ১৪ বছর সশ্রম কারাদন্ড ও ১০ হাজার টাকা অর্থদন্ড, অনাদায়ে আরও ৩ মাসের বিনাশ্রম কারাদ- এবং ধর্ষণের দায়ে ৯ (১) ধারায় যাবজ্জীবন (৩০) বছর সশ্রম কারাদন্ড ও ২০ হাজার টাকা অর্থদন্ড, অনাদায়ে আরও ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ড রয়েছে। রাষ্ট্রপক্ষের পিপি এ্যাডভোকেট গোলাম কিবরিয়া বুলু মামলার নথি উদ্বৃত করে রবিবার সন্ধ্যায় জানান, ২০১৮ সালের ২১ এপ্রিল সদর উপজেলার চরশেরপুর সাতানিপাড়া গ্রামের কৃষক পরিবারের কন্যা ও স্থানীয় দাখিল মাদ্রাসার সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী (১৩) কে ফুসলিয়ে অপহরণ করে পার্শ্ববর্তী চরশেরপুর পূর্বপাড়া গ্রামের বাবুল কবিরাজ। পরে তাকে ঢাকাসহ বিভিন্ন জায়গায় নিয়ে আটক রেখে বিয়ের প্রলোভনে ইচ্ছের বিরুদ্ধে ধর্ষণ করলে সে ৫ মাসের অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে। ওই অবস্থায় ওই কিশোরীকে নিয়ে এলাকায় ফিরে গাঁ ঢাকা দেয় বাবুল। ওই ঘটনায় একই বছরের ২৫ সেপ্টেম্বর ধর্ষিতা কিশোরীর মা বাদী হয়ে ধর্ষক বাবুলসহ ৪ জনকে আসামি করে সদর থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলার পরপরই পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয় ধর্ষক বাবুল। এর কিছুদিন পর ধর্ষিতার গর্ভ থেকে জন্ম নেয় কন্যা সন্তান এবং ডিএনএ টেস্টেও প্রতীয়মান হয়, সেই সন্তানের জৈবিক পিতা বাবুল। পরে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই আনোয়ার হোসেন তদন্ত শেষে ১২ নবেম্বর একমাত্র বাবুলের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। ২০১৯ সালের ২৩ এপ্রিল আসামির বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করা হয় এবং বিচারিক পর্যায়ে বাদী, ভিকটিমসহ রাষ্ট্রপক্ষের ৭ জন ও আসামিপক্ষের দুইজন সাফাই সাক্ষীসহ ৯ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়। এতে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় রবিবার বিকেলে দুটি ধারায় মোট ৪৪ বছর সশ্রম কারাদন্ডের পাশাপাশি ধর্ষণে জন্ম নেওয়া শিশুর জৈবিক পিতা হিসেবে আসামির স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি থেকে আদায় সাপেক্ষে সেই শিশুর ভরণপোষণে আইনানুগ আদেশ দেন ট্রাইবুন্যাল। তবে উভয় সাজা একইসাথে কার্যকর হবে। এদিকে আসামিপক্ষের আইনজীবী সাখাওয়াতউল্লাহ তারা বলেন, ওই রায়ে যথেষ্ট অসঙ্গতি রয়েছে। কাজেই আসামিপক্ষ উচ্চ আদালতে আপিল করবে।
×