ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

স্পট রেজিস্ট্রেশনের মাধ্যমে ফের টিকা কার্যক্রম শুরু করবে সরকার

প্রকাশিত: ২১:৩৫, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২১

স্পট রেজিস্ট্রেশনের মাধ্যমে ফের টিকা কার্যক্রম শুরু করবে সরকার

স্টাফ রিপোর্টার ॥ আবারও স্পট রেজিস্ট্রেশনের মাধ্যমে টিকাদান কার্যক্রম চালু করবে সরকার। সপ্তাহের নির্ধারিত একদিন এ সুযোগ থাকবে। রবিবার স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডাঃ আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম ফেসবুক লাইভে এসে এ কথা জানান। এ সময়ে তিনি টিকাদান কার্যক্রম নিয়ে বিস্তারিত পরিকল্পনার কথা তুলে ধরেন। তিনি জানান, প্রতি সপ্তাহে নির্ধারিত একদিনের ভিত্তিতে নিবন্ধিত-অনিবন্ধিত এবং ষাটোর্ধ্ব জনগোষ্ঠীকে স্পট রেজিস্ট্রেশনের মাধ্যমে টিকা নিতে বলা হবে। তিনি আরও বলেন, টিকা দেয়ার সময় যারা বয়স্ক, তারা যেন আগে পান, এ বিষয়টি মাথায় রাখতে হবে। আমাদের পর্যবেক্ষণ বা পর্যালোচনায় দেখা গেছে, ষাটোর্ধ্ব জনগোষ্ঠী বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সংক্রমিত হয়েছে এবং তাদের মধ্যে মৃত্যুর সংখ্যাও বেশি। এটা মাথায় রেখে টিকাদান কার্যক্রমে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। আমাদের হাতে পর্যাপ্ত টিকা মজুত রয়েছে। ভবিষ্যতে প্রয়োজনীয় টিকা পাওয়ার উৎস নিশ্চিত করা হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় প্রতি মাসে ক্যাম্পেনের মাধ্যমে দুই কোটির মতো টিকা দেয়ার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। আর এ জন্য মাঠ পর্যায়ের টিকাদান কর্মসূচী আরও কীভাবে বাড়ানো যায় বা সম্প্রসারণ করানো যায়, সে বিষয়ে সচেষ্ট রয়েছি। ইতোমধ্যে দেশে স্কুল-কলেজ খুলে দেয়া হয়েছে। তাই আগে যেখানে টিকাদান কর্মসূচী চলত, বিশেষত স্কুল, সেই জায়গাগুলো থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হয়েছে। এ অবস্থায় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পাশাপাশি উপজেলা অডিটরিয়ামে এবং উপজেলার যেকোনও বড় হলে টিকা দেয়ার ব্যবস্থা করব। ইউনিয়ন পর্যায়ে নিয়মিত টিকাদানের পাশাপাশি স্বাস্থ্য সহকারীদের মাধ্যমে ইউনিয়ন সাব-সেন্টার, ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে টিকা দেয়া হবে। উপজেলা স্বাস্থ্য পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তারা কোভিড-১৯’র টিকাদান কেন্দ্র হিসেবে একটি ইউনিয়ন সাব-সেন্টার, ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র ও ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন করবেন। টিকা প্রত্যাশীরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে টিকার জন্য নিবন্ধন করবেন এবং এসএমএস পাওয়া সাপেক্ষে নির্ধারিত কেন্দ্র থেকে টিকা নেবেন বলে জানান তিনি। ১২ থেকে ১৭ বছর বয়সীদের টিকা দেয়ার সিদ্ধান্ত এখনও চূড়ান্ত হয়নি॥ ১২ থেকে ১৭ বছর বয়সীদের টিকা দেয়ার সিদ্ধান্ত এখনও চূড়ান্ত হয়নি বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। রবিবার আয়োজিত ভার্চুয়াল বুলেটিনে এ কথা বলেন অধিদফতরের মুখপাত্র অধ্যাপক ডাঃ নাজমুল ইসলাম। শনিবার মানিকগঞ্জে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, ১২-১৭ বছর বয়সী শিক্ষার্থীদের টিকা দেয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আগামী ১৫-২০ দিনের মধ্যে তাদের ফাইজারের টিকা দেয়া হবে। বুলেটিনে ১২-১৭ বছর বয়সীদের টিকা দেয়ার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়েছে কিনা প্রশ্নে তিনি বলেন, টিকা বিষয়ক জাতীয় পরামর্শক কমিটিসহ অন্য সবার পরামর্শ নিয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এবং অধিদফতর এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে। দেশে আবারও গণটিকা কার্যক্রম প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোন নির্দেশনা পাইনি। যদি এ রকম পরিকল্পনা হয়, সেটি নিশ্চয়ই জানানো হবে। দেশের সংক্রমণ পরিস্থিতি সম্পর্কে জানাতে গিয়ে তিনি বলেন, গত সাতদিনে শনাক্ত হয়েছেন ১২ হাজার ৭৫৮ জন, তার আগের সপ্তাহের চেয়ে ৩ হাজার ৭৫৮ জন কম। মৃত্যুর সংখ্যাও কমেছে। পুরো সপ্তাহের প্রথম দুদিন শনাক্তের হার সাত শতাংশের কিছুটা বেশি ছিল, এরপরের দিনগুলোতে থেকে ছয় শতাংশ বা এর চেয়ে কিছুটা বেশি। সামগ্রিকভাবে গত ৩০ দিনের সংক্রমণের যে চিত্র সেটা এই মুহূর্তে নিম্নমুখী আছে। এই শনাক্তের হার যদি ধারাবাহিকভাবে অব্যাহত রাখা যায় তাহলে আমাদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যাওয়ার যে প্রচেষ্টা চলছে, সেটা বেগবান হবে। বর্তমান পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চললে এবং টিকা নিলে অনেক অনাকাক্সিক্ষত মৃত্যু প্রতিরোধ করা সম্ভব হবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন ডাঃ নাজমুল ইসলাম।
×