ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

চাকরি দেয়ার কথা বলে প্রতারণা, ৩ জন গ্রেফতার

প্রকাশিত: ২২:১৬, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২১

চাকরি দেয়ার কথা বলে প্রতারণা, ৩ জন গ্রেফতার

স্টাফ রিপোর্টার ॥ চাকরি দেয়ার কথা বলে প্রতিদিন ১৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নিত একটি চক্র। চক্রটি যাদের সঙ্গে প্রতারণা করত আগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক ও হোয়াটসএ্যাপে তাদের সঙ্গে বন্ধুত্বের সম্পর্ক স্থাপন করত। এরপর বিভিন্ন গ্রুপে বিভক্ত হয়ে কখনও বিদেশে চাকরির অফার দিয়ে চাকরিপ্রত্যাশীদের সঙ্গে হোয়াটসএ্যাপ, মেসেঞ্জার এবং ই-মেইলে যোগাযোগ করত। তাদের কাছ থেকে বিভিন্ন ফি’র বাহানায় ব্যাংক এ্যাকাউন্টে টাকা জমা দিতে বলত। চক্রের তিনজনকে গ্রেফতারের পর এমনটি জানিয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)। গ্রেফতাররা হলো- কবির হোসেন, শামসুল কবীর ও ইয়াছিন আলী। শুক্রবার রাজধানীর কল্যাণপুর থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে বিভিন্ন ব্যাংকের ২৫৭টি চেক বই, ২৩৪টি ডেবিট কার্ড, ৮টি মোবাইল ফোন ও ১১টি মোবাইল সিম জব্দ করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে কদমতলী থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা হয়েছে। শনিবার দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার একেএম হাফিজ আক্তার বলেন, ‘ড্রিম জবস ইন কানাডা’ নামে প্রতারক চক্রটি বিভিন্ন গ্রুপে বিভক্ত হয়ে প্রতারণামূলক কর্মকান্ড করে আসছিল। গ্রুপে প্রথমে ভিকটিমের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করে তার সঙ্গে নিবিড় বন্ধুত্ব গড়ে তোলে। পরে উপহার পাঠানোর কথা বলে কাস্টমস কর্মকর্তা সেজে ফোন করে। দ্বিতীয় গ্রুপের কাজ হলো- বিভিন্ন নামে ব্যাংক হিসাব খোলা। এসব হিসাবধারীরা কমিশনের বিনিময়ে নিজের বৈধ জাতীয় পরিচয়পত্র দিয়ে বিভিন্ন ব্যাংকে হিসাব খুলতে থাকে এবং ঘন ঘন বাসা এবং মোবাইল নম্বর পরিবর্তন করে। চক্রের তৃতীয় গ্রুপ এসব ব্যাংক হিসাবধারীদের স্বাক্ষরিত চেকবইয়ের পাতা, এটিএম কার্ড ও কার্ডপিন কুরিয়ারের মাধ্যমে সংগ্রহ করে। চতুর্থ গ্রুপ প্রতিদিন ভিকটিমদের জমাকৃত টাকা উত্তোলন করে একজন ম্যানেজানের হাতে তুলে দেয়। ম্যানেজার এই টাকা তাদের কথিত বসের হাতে পৌঁছায়। এভাবে সাপ্তাহিক বন্ধ ছাড়া প্রতিদিনই হাতিয়ে নিচ্ছে ১২ থেকে ১৫ লাখ টাকা। গ্রেফতার কবির হোসেনের কাজ যাবতীয় অর্থ সংগ্রহ করে ম্যানেজানের হাতে পৌঁছে দিত। তার সহযোগী হিসাবে কাজ করে গ্রেফতার ইয়াসিন। আর গ্রেফতার শামসুল কবীর হলো ব্যাংক হিসাবধারী। তারা সবাই মাসিক ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা বেতনে বিভিন্ন স্তরে কাজ করে এবং তাদের অন্য কোন পেশা নেই বলে প্রাথমিকভাবে তারা জানায়। ডিবি প্রধান বলেন, চক্রটিতে জড়িতরা একে অপরকে চেনে না। ফোনে বা হোয়াটসএ্যাপে তাদের মধ্যে যোগাযোগ হয়। অনেকটা কাটআউট পদ্ধতি ব্যবহারে চক্রের অপকর্ম করছে জড়িতরা। চক্রের মূলহোতা মূলত কমিউনিকেশন স্কিলকে ব্যবহার করছে। এতে করে কাটআউট পদ্ধতিতে ভিকটিমরা যেমন প্রতারিত হচ্ছে তেমনি চক্রের অন্য সদস্যদের অপকর্মে জড়ানো সহজ হচ্ছে। পুরো চক্রটিকে শনাক্তের চেষ্টা চলছে।
×