ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

আগামী জাতীয় নির্বাচন ও ইসি গঠন নিয়ে সরব হচ্ছে আওয়ামী লীগ, বিএনপি. জাতীয় পার্টি ও বাম দলগুলো জিয়ার লাশ নিয়ে আওয়ামী লীগ-বিএনপির পাল্টাপাল্টি বক্তব্য জামায়াতও বসে নেই, গোপনে তৎপর

মাঠে ফিরছে রাজনীতি ॥ করোনার ভয় কেটে গেছে

প্রকাশিত: ২২:১৮, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২১

মাঠে ফিরছে রাজনীতি ॥ করোনার ভয় কেটে গেছে

অপূর্ব কুমার ॥ চাঙ্গা হচ্ছে দেশের রাজনীতি। করোনার সংক্রমণ কমে আসায় রাজনৈতিক দলগুলো ক্রমেই সক্রিয় হচ্ছে। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও নির্বাচন কমিশন গঠনকে কেন্দ্র করে মাঠে ফিরছে রাজনৈতিক দলগুলো। সরকারী দল আওয়ামী লীগ, জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি, জাতীয় পার্টি ও বাম দলগুলোতে কর্মচাঞ্চল্য দেখা যাচ্ছে। রাজনৈতিক দলগুলোর পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন মানববন্ধন এবং অবস্থান কর্মসূচী পালন করছে। সরকারী দল আওয়ামী লীগ ও অন্যতম বড় রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির নির্বাহী কমিটির বৈঠকও অনুষ্ঠিত হয়েছে। সব মিলে সরব হয়ে উঠছে রাজনৈতিক অঙ্গন। করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে থাকলে আগামীতে আরও সক্রিয় হয়ে উঠবে বলে দলগুলোর পক্ষ থেকে আশা করা হচ্ছে। সংক্রমণ কমে আসায় মূল ধারার রাজনৈতিক দলগুলো যখন কর্মসূচী হাতে নিচ্ছে তখন নিবন্ধন বাতিল করে নির্বাচন কমিশনের প্রজ্ঞাপন জারি করা দল জামায়াতে ইসলামীও পিছিয়ে নেই। দলটির হাইকমান্ড গোপনে রাজনৈতিক কর্মকা-ের অংশ হিসেবে বৈঠক করতে গিয়ে পুলিশের জালে ধরাও পড়েছে। আগের সরকারের বিভিন্ন মেয়াদে দেখা গেছে নির্বাচনের বেশ আগে থেকেই বিরোধী দলগুলো নানা দাবিদাওয়া নিয়ে রাজনীতির মাঠে উপস্থিত থাকত। কিন্তু বর্তমান সরকারের মেয়াদে দেখা যাচ্ছে দেশের অন্যতম বড় রাজনৈতিক দল বিএনপি মাঠে খুব একটা সরব নেই। তবে হঠাৎ করেই দুই বড় দল ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যে যে রাজনৈতিক বিতর্ক চলছে তা আগামী নির্বাচন সামনে রেখে নিজেদের প্রস্তুতি বলে মনে করছেন বিশ্লেষকদের কেউ কেউ। তারা বলছেন, সামনের নির্বাচন ঘিরে রাজনীতি সক্রিয় হচ্ছে সেটা এখনই বলা যাবে না। আগস্ট মাসে প্রতিবছরই একটা উত্তেজনা তৈরি হয়, এবারও তেমনটাই হয়েছে বলে মত তাদের। তবে চলতি মাসে বেশ কিছু স্থানে স্থগিত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন ও জাতীয় সংসদের শূন্য আসনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এসব নির্বাচন ঘিরে কর্মতৎপরতা দেখা যাচ্ছে। এর মধ্য দিয়েই মহামারী করোনার কারণে দীর্ঘ বিরতির পর মাঠে গড়াচ্ছে দেশের রাজনীতি। করোনার মধ্যে সরকারী দল আওয়ামী লীগের তৎপরতা চোখে পড়ার মতো। স্বাস্থ্য সুরক্ষাসামগ্রী বিতরণসহ নানা উন্নয়নমূলক কাজে দলটি সরকারের বাইরে এসে কাজ করছে। গত আগস্টে শোকের মাসে নানা কর্মসূচী পালন করেছেন দলটির নেতাকর্মীরা। এছাড়া জাতীয় সংসদে প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টিও আলোচনায় ছিল। করোনার সংক্রমণ কমায় দেশে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে আসার পর আওয়ামী লীগই প্রথম রাজনীতির মাঠে ফেরার কার্যক্রম শুরু করেছে। করোনার কারণে দীর্ঘদিন পর দলটির সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারণী ফোরাম কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সভা গত ৯ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৈঠকে দলটির সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এখন থেকেই আগামী নির্বাচনের প্রস্তুতি গ্রহণের জন্য দলের নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন। তৃণমূল পর্যায় থেকে কেন্দ্রীয় পর্যায় পর্যন্ত দলের সাংগঠনিক কার্যক্রম আরও শক্তিশালী করতে বলেছেন। জানা যায়, দীর্ঘদিন পর অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে সাংগঠনিক এবং আগামী নির্বাচন সামনে রেখে দলীয় প্রস্তুতির বিষয়গুলো প্রাধান্য পায়। বৈঠকে করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় স্থবির হয়ে পড়া সাংগঠনিক কার্যক্রমে গতি ফেরানোর নির্দেশ দেন সভাপতি শেখ হাসিনা। একই সঙ্গে একটি সেমিনার আয়োজনের মাধ্যমে আগামী নির্বাচনের জন্য দলের নির্বাচনী ইশতেহার প্রণয়নের কাজ শুরুর নির্দেশনা দিয়েছেন তিনি। জাতীয় নির্বাচন ঘনিয়ে আসছে। তাই সরকারবিরোধী অপপ্রচার বেশি হচ্ছে। এসব অপপ্রচার সাংগঠনিকভাবে মোকাবেলা করার তাগিদ দেয়া হয়েছে বৈঠকে। বৈঠক শেষে দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের জানান, পরবর্তী (দ্বাদশ) নির্বাচনের প্রস্তুতির লক্ষ্যে আমাদের অর্থনৈতিক নীতিমালা প্রণয়ন করার নির্দেশনা দিয়েছেন দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনা। দলের বিভিন্ন উপকমিটির সেমিনারের মাধ্যমে পরবর্তী নির্বাচনের যে ইশতেহার হবে, সেখানে যে বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত করা হবে সেগুলো আপডেট করার জন্য উপকমিটিগুলোকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। যেমন স্বাস্থ্য ও শিক্ষায় আমরা কী কী অন্তর্ভুক্ত করব তা তুলে ধরা হবে। তিনি জানান, যেখানে যেখানে সাংগঠনিক সমস্যা আছে এবং যেগুলো সমাধান করা দরকার, সেগুলোর বিষয়ে বৈঠকে নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। কিছু ছোটখাটো কলহ-বিবাদ আছে, সেগুলোও মীমাংসা করার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। সরকার দলীয় সূত্রগুলো বলছে, করোনা সংক্রমণ কমে আসায় আওয়ামী লীগের স্থগিত কার্যক্রমে গতি ফিরবে। দলের শূন্য পদ পূরণ, সংসদীয় শূন্য আসনসহ করোনায় থেমে থাকা ইউনিয়ন পর্যায়ে নির্বাচন, মেয়াদোত্তীর্ণ দল ও সহযোগী সংগঠনগুলোর পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনে নজর দেবে দলটি। স্থগিত থাকা ১৬১ ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন আগামী ২০ সেপ্টেম্বর এবং কুমিল্লা-৭ আসনের উপনির্বাচন ৭ অক্টোবর অনুষ্ঠিত হবে। এ ছাড়া, ১২টি উপজেলায় নয়টি চেয়ারম্যান ও তিনটি ভাইস চেয়ারম্যান পদে উপনির্বাচনের তারিখও ঘোষণা করা হয়েছে। গত মার্চে কয়েক ধাপে সব উপজেলায় নির্বাচনের সিদ্ধান্ত নেয় ইসি। এরপর ৩ মার্চ প্রথম ধাপে ৩৭১টি ইউনিয়ন পরিষদের ভোটগ্রহণের তফসিল ঘোষণা করে। ১১ এপ্রিল ভোটগ্রহণের জন্য তারিখও নির্ধারণ করা হয়। তবে, করোনা মহামারীর কারণে ভোটগ্রহণ পিছিয়ে যায়। এরপর ২১ জুন ভোটগ্রহণের জন্য দিন ঠিক করা হয়। সংক্রমণ বাড়ার কারণে খুলনা, বাগেরহাট, সাতক্ষীরা, নোয়াখালী, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের ১৬৭টি ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন স্থগিত করা হয়। তবে, গত ২১ জুন বাকি ২০৪টি ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। যোগাযোগ সমস্যার কারণে ২০ সেপ্টেম্বর সেন্টমার্টিনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে না। এ ছাড়া, আরও পাঁচটি ইউনিয়ন পরিষদের প্রার্থীর মৃত্যুর কারণে সেখানেও নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে না। এছাড়া আগামী ৭ অক্টোবর কুমিল্লা-৭ আসনের উপনির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে। আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ মনে করেন, বিএনপি একটি জনবিচ্ছিন্ন রাজনৈতিক দল। করোনাকালে মানুষের পাশে না দাঁড়ানোর কারণে দলটি জনগণের কাছ থেকে আরও বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। তিনি বলেন, আগস্টের প্রতিটি ঘটনার সঙ্গেই বিএনপির সংশ্লিষ্টতা আছে। ১৫ আগস্টের সঙ্গে তাদের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান এবং ২১ আগস্টের সঙ্গে বর্তমান নেত্রী খালেদা জিয়া ও তার ছেলে তারেক রহমান জড়িত। ফলে আগস্ট মাস এলে তারা বেকায়দায় পড়ে। তখন নিজেদের বাঁচাতে তারা উল্টাপাল্টা কথা বলে। আওয়ামী লীগ সাংগঠনিকভাবে নিজেকে গোছানোর উদ্যোগ নিয়েছে কিনা জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের এই রাজনীতিবিদ বলেন, কাউন্সিলের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ সংগঠন গুছিয়ে নেয়। করোনার কারণে কিছুদিন রাজনীতি সীমিত পরিসরে চলেছে। এই সময়টাতে আওয়ামী লীগ সামাজিক দায়বদ্ধতার অংশ হিসেবে মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে। এখন পরিস্থিতি একটু ভাল হয়েছে, এই কারণে বিভিন্ন জায়গায় যেখানে সমস্যা আছে সেখানে কমিটি ভেঙ্গে নতুন কমিটি করা হচ্ছে। দেশের অন্যতম বিরোধী দল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপিও এতদিন ভার্চুয়ালি বিভিন্ন অনুষ্ঠান পরিচালনা করছিল। কিন্তু গত মঙ্গলবার থেকে বৃহস্পতিবার তিন দিনে দলটির হাইকমান্ডের সঙ্গে তিন স্তরের নেতাদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। প্রথম দিন মঙ্গলবার বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টাদের নিয়ে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। উপস্থিত ৬২ জনের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ২৮ জন। দ্বিতীয় দিন বুধবার দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব, যুগ্ম মহাসচিব, সাংগঠনিক সম্পাদক, বিভিন্ন সম্পাদক ও সহসম্পাদকদের নিয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ১২২ জন। আর বক্তব্য রাখেন প্রায় ৫০ জন। তৃতীয় দিন বৃহস্পতিবার বিএনপির ১১টি অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতাদের নিয়ে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এতে অংশ নেন ৯২ কেন্দ্রীয় নেতা। বৈঠক শেষে বিএনপি মহাসচিব ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, কর্মকৌশল ঠিক করতে দলের হাইকমান্ড মাঠ পর্যায়ের নেতাদেরও মতামত নেবে। তিনি বলেন, আমাদের তিনটি সভা হয়েছে। শনিবার বিএনপির স্থায়ী কমিটির মিটিং আছে। এই মিটিংয়ে দল সিদ্ধান্ত নেবে আরও কয়েকটি সভা করা হবে কিনা? কারণ বিএনপির এখনও কিছু কার্যনির্বাহী সদস্যের সঙ্গে মতবিনিময় বাকি রয়েছে। তাদের নিয়ে এবং জেলা পর্যায়ের প্রেসিডেন্ট- সেক্রেটারিদের নিয়ে মিটিং করার কথা আছে। তিনি বলেন, আমরা হয়ত সেই বিষয়গুলো সিদ্ধান্ত নেব। পরে আমাদের পেশাজীবীদের সঙ্গে আলোচনা করার কথা রয়েছে। স্থায়ী কমিটির বৈঠকে যদি সিদ্ধান্ত হয়, পরবর্তীতে এসব মিটিং আমরা করব। বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমাদের এসব ধারাবাহিক বৈঠকে দেশের সামগ্রিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি, কী করণীয় এবং আমাদের সাংগঠনিক অবস্থা নিয়ে আমরা কথা বলেছি। সম্প্রতি রাজধানীর বারিধারার একটি ফ্ল্যাটে বৈঠককালে গ্রেফতার হন জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল গোলাম পরওয়ারসহ ৯ নেতাকর্মী। গ্রেফতারদের মধ্যে আরও রয়েছেন, দলটির সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল রফিকুল ইসলাম খান ও হামিদুর রহমান আযাদসহ কয়েক কেন্দ্রীয় নেতা। গোলাম পরওয়ার ২০১৬ সাল থেকে তিন বছর জামায়াতের নায়েবে আমির ছিলেন। এছাড়া ২০০১ সালের নির্বাচনে তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। দুই হাজার তেরো সালে একটি রিটের রায়ে রাজনৈতিক দল হিসেবে জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন বাতিল করে হাইকোর্ট। দুই হাজার আঠারো সালে দলটির নিবন্ধন বাতিল করে প্রজ্ঞাপন জারি করে নির্বাচন কমিশন। জামায়াতে ইসলামীকে নিষিদ্ধ করার একটি মামলা এখনও আদালতে রয়েছে। পুলিশ বলছে, জামায়াতে ইসলামীর নেতারা রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হিসেবে গোপন বৈঠক করছিলেন। সুনির্দিষ্ট তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে। জামায়াতে ইসলামীর নেতারা এখন রিমান্ডে রয়েছেন। অন্যদিকে জামায়াতে ইসলামী দাবি করেছে, নিয়মিত বৈঠক চলাকালে তাদের গ্রেফতার করা হয়। সম্প্রতি মুক্তিযুদ্ধে জিয়াউর রহমানের ভূমিকা, চন্দ্রিমা উদ্যানের কবরে জিয়াউর রহমানের লাশ আছে কি-নেই তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে আওয়ামী লীগ। খোদ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্যে এই বিষয়গুলো উঠে এসেছে। ওই বক্তব্যের পর থেকে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা এগুলো নিয়ে কথা বলেছেন। অনেকে সংসদ ভবন এলাকা থেকে জিয়াউর রহমানের কবর সরিয়ে নেয়ারও দাবি তুলেছেন। বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদেও জিয়াউর রহমানের লাশ থাকা না থাকা নিয়ে তর্কবিতর্ক হয়েছে। এতে আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টির এমপিরা অংশ নেন। আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম এমপি বলেছেন, চন্দ্রিমা উদ্যানে জিয়ার লাশ নেই, তা ৪০ বছর আগেই প্রমাণিত। একটি বাক্স রয়েছে। লুই আইকানের জাতীয় সংসদ ভবনের নক্সা বজায় রাখতে সেটি সরাতে হবে। বিএনপি নেতারাও আওয়ামী লীগের এই বক্তব্যের পাল্টা জবাব দিচ্ছেন। বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ইমরান সালেহ প্রিন্স বলেন, করোনা পরিস্থিতি সামাল দিতে ব্যর্থ হওয়ায় আওয়ামী লীগ মানুষের দৃষ্টি ভিন্ন দিকে নিতে এসব অমূলক অভিযোগ করছে। এই সরকার পদে পদে ব্যর্থ হয়েছে। এখন তারা বিএনপির প্রতিষ্ঠাতাকে নিয়ে মিথ্যাচার করছে। এই ঘটনার মধ্য দিয়ে কী বিএনপি মাঠে নামার চেষ্টা করছে? জবাবে প্রিন্স বলেন, বিএনপি সব সময় মাঠেই ছিল। করোনার কারণে কিছুদিন সাংগঠনিক কার্যক্রম বন্ধ ছিল। বিএনপি নির্বাচনমুখী দল, মানুষের সমর্থন নিয়ে দেশ চালাতে চায়। কিন্তু বর্তমান সরকার আর নির্বাচন কমিশনের অধীনে ভোটে যাওয়ার কোন সুযোগ নেই। জাতীয় পার্টির (জাপা) প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদ এখনও রাজনীতির মাঠ গরম হওয়ার মতো কোন পরিস্থিতি দেখছেন না। তিনি বলেন, এখন যেটা দেখা যাচ্ছে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতাসহ কিছু বিষয়ে আওয়ামী লীগ প্রশ্ন তুলেছে, বিএনপি সেটার জবাব দিচ্ছে। কিন্তু রাজনীতির মাঠ তখনই গরম হবে, যখন জাতীয় কোন কর্মসূচী নিয়ে বিএনপি মাঠে নামবে। তাদের তো সে ধরনের কোন প্রস্তুতি দেখা যাচ্ছে না। সামনের নির্বাচন ঘিরে জাতীয় পার্টির (জাপা) প্রস্তুতি কী জানতে চাইলে তিনি বলেন, নির্বাচন তো এখনও বহুদূর। এক বছর আগে জাতীয় পার্টি নিজস্ব কর্মসূচী নিয়ে কাজ শুরু করবে। এখন দৈনন্দিন সাংগঠনিক কার্যক্রম চলছে।
×