ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

আর্থিক সহায়তা দাবিতে সংস্কৃতিকর্মীদের সমাবেশ

প্রকাশিত: ২২:০৬, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২১

আর্থিক সহায়তা দাবিতে সংস্কৃতিকর্মীদের সমাবেশ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ মহামারীর প্রভাবে অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে দেশের সাংস্কৃতিক সংগঠনসমূহ। সেই প্রেক্ষাপটে সাংস্কৃতিক সংগঠনসমূহকে করোনাকালীন বিশেষ অনুদান, সংস্কৃতিকর্মী ও সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোকে সম্মানজনক বার্ষিক অনুদানসহ বিভিন্ন দাবিতে সংস্কৃতিকর্মী সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয় শুক্রবার। এদিন বিকেলে শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালা চত্বরে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের উদ্যোগে এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এই সমাবেশ থেকে এক বছরের জন্য সারাদেশের শিল্পকলা একাডেমির মিলনায়তন ভাড়া মওকুফের দাবি জানানো হলেও সেই দাবিটি সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে আগেই মেনে নেয়া হয়েছে। অধিকার আদায়ের অংশ হিসেবে অংশ অনুষ্ঠিত প্রতিবাদ সমাবেশে অংশ নেন মঞ্চনাটক, নৃত্য, আবৃত্তি ও চারুশিল্পীরা। সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন নাট্যজন রামেন্দু মজুমদার, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব নাসির উদ্দিন ইউসুফ, নাট্যজন মামুনুর রশীদ, গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশনের চেয়ারম্যান ও শিল্পকলা একাডেমির মহপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী, সেক্রেটারি জেনারেল কামাল বায়েজীদ, নৃত্যশিল্পী সংস্থার সভাপতি মিনু হক, পথনাটক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আহমেদ গিয়াস, গণসঙ্গীত সমন্বয় পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মানজার চৌধুরী সুইট, চারুশিল্পী সংসদের সভাপতি কামাল পাশা, সঙ্গীত সংগঠন সমন্বয় পরিষদের সাধারণ সম্পাদক বিশ্বজিৎ রায়। এছাড়া আরও উপস্থিত ছিলেন একুশে পদকপ্রাপ্ত নাট্যব্যক্তিত্ব কেরামত মওলা, নৃত্যজন আমানুল হক প্রমুখ। মামুনুর রশীদ বলেন, শিল্পকলা একাডেমি কোন সংস্থা নয়, এটি শিল্পীদের বিকাশের একটি প্রতিষ্ঠান। কিন্তু শিল্পকলা একাডেমি শিল্পের বিকাশে সেভাবে এগিয়ে আসছে না। পাশের দেশে সঙ্গীত ও নাটকের প্রতিষ্ঠান থাকার পাশাপাশি অনুদানের ব্যবস্থা থাকলেও আমাদের দেশে এখনও শিল্পীদের যথাযথ মূল্যায়ন করছে না। শুধু ঢাকা শিল্পকলা একাডেমি নয়, সারাদেশের সকল শিল্পকলা একাডেমির মিলনায়তনগুলোর ভাড়া এক বছরের জন্য মওকুফ করার পাশাপাশি শিল্পের এই আঙ্গিনায় অনুদান ও প্রণোদনা প্রদানসহ আরও নানা দাবি আমরা সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের কাছে তুলে ধরেছি। আমরা দীর্ঘদিন ধরে স্যালারি গ্র্যান্টের কথা বলছি। কিন্তু কোন এক অদৃশ্য ষড়যন্ত্রের কারণে স্যালারি গ্র্যান্ট এখনও বাস্তবায়ন করা হয়নি। দীর্ঘ ৫০ বছর নাটক করার পর আমরা এখন স্যালারি গ্র্যান্ট দাবি করতেই পারি। এটা আমাদের অধিকার। আমরা ভিক্ষা চাই না, অধিকার চাই। আমরা সরকার প্রদানের কাছে যাব। তা না হলে আমাদের রাজপথতো রয়েছেই। অন্য বক্তারা বলেন, সংস্কৃতিকর্মীরা দেশের যেকোন ক্রান্তিকালে রাজপথে থেকে আন্দোলন করেছে। কিন্তু সরকার আমাদের সেভাবে আমাদের মূল্যায়ন করেনি। আন্দোলন ছাড়া কোন দাবি আদায় সম্ভব নয়। অধিকার না পেলে দেশের সকল সংস্কৃতিকর্মীকে সঙ্গে নিয়ে আমরা আন্দোলনে যাব। লিয়াকত আলী লাকী বলেন, সংস্কৃতিকর্মীদের দাবির সঙ্গে আমি একমত। ইতোমধ্যে আমরা শিল্পকলা একাডেমির হল ভাড়া মওকুফ করেছি। ভবিষ্যতে মৎস্য ভবনের দখলকৃত শিল্পকলা একাডেমির জায়গাকে উদ্ধার করে সংস্কৃতির বিকাশের কার্যক্রমকে প্রসারিত করা হবে। শিল্পীদের সকল দাবি পূরণে ও শিল্পের বিকাশে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের কাছে আমি আবেদন করব। আশা করছি সংস্কৃতিবান্ধব সরকার সংস্কৃতিকর্মীদের সকল দাবি মেনে নেবে। গোলাম কুদ্দুছ বলেন, শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালকের মাধ্যমে আমাদের দাবিগুলো আমরা সরকারের কাছে তুলে ধরেছি। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলবে।
×