ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

জামালপুরের মাদরাসার তিন ছাত্রী ঢাকা থেকে উদ্ধার ॥ পাচার হয়নি, পালিয়েছিল

প্রকাশিত: ২১:৪৪, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২১

জামালপুরের মাদরাসার তিন ছাত্রী ঢাকা থেকে উদ্ধার ॥ পাচার হয়নি, পালিয়েছিল

নিজস্ব সংবাদদাতা, জামালপুর ॥ জামালপুরের ইসলামপুরের আবাসিক একটি কওমি মাদরাসা থেকে নিখোঁজের পাঁচদিন পর বৃহস্পতিবার রাতে রাজধানী ঢাকার মুগদার মান্ডা বস্তি থেকে শিশু তিন ছাত্রীকে উদ্ধার করেছে ইসলমাপুর থানা পুলিশ। ওই তিন ছাত্রী পাচার হয়নি বা মাদরাসার গ্রেফতার চারজন শিক্ষকের বিরুদ্ধে পাচার বা জঙ্গিবাদের কোন সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়নি বলে শুক্রবার বিকেলে নিজ কার্যালয়ে আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে জানিয়েছেন পুলিশ সুপার মো. নাছির উদ্দিন আহমেদ। জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলার দারুত তাকওয়া মহিলা কওমি মাদরাসার তিন ছাত্রী রবিবার (১২ সেপ্টেম্বর) ভোর রাতে তাদের মাদরাসা থেকে নিখোঁজ হয়। তারা ওই মাদরাসার দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রী। এ ঘটনায় নিখোঁজ শিশুদের একজনের বাবা বাদী হয়ে গত বুধবার মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমন আইনে ইসলামপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। ওই মামলার প্রধান আসামি মাদরাসাটির মুহতামিম মো. আসাদুজ্জামানসহ চারজন শিক্ষক জেলা কারাগারে আটক রয়েছেন। সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার মো. নাছির উদ্দিন আহমেদ জানান, গত রবিবার ওই মাদরাসার তিনছাত্রী নিখোঁজ হওয়ার অভিযোগ পেয়ে ইসলামপুর থানা পুলিশ তাদের উদ্ধারে তদন্ত শুরু করে। তদন্তকারী পুলিশের সন্দেহ হয় তিন শিশুরা ট্রেনে ঢাকায় গিয়ে থাকতে পারে। এই সূত্র ধরে সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) মো. সুমন মিয়ার নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল গত বৃহস্পতিবার সর্বশেষ কমলাপুর রেলস্টেশনের সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনায় ওই তিনছাত্রীকে স্টেশন থেকে বের হতে দেখা যায়। একপর্যায়ে স্টেশনের রাজা মিয়া (১৪) নামের এক রিকশাচালক ওই তিনছাত্রী সম্পর্কে পুলিশকে তথ্য দেয়। ওই তিনছাত্রীকে স্টেশন এলাকায় ঘোরাফেরা করতে দেখে মানবিক বিবেচনায় রাজা মিয়া তাদেরকে রাজধানীর মুগদার মান্ডা বস্তিতে পনেরশ’ টাকায় একটি ঘরভাড়া করে দেয়। পুলিশ সুপার জানান, রাজা মিয়ার তথ্যমতে গত বৃহস্পতিবার রাতে মান্ডা বস্তি থেকে ওই তিনছাত্রীকে উদ্ধার করে শুক্রবার সকালে তাদেরকে জামালপুরে নিয়ে আসা হয়। উদ্ধার হওয়া তিন শিশুই সুস্থ আছে। শিশু তিনটি সুস্থ অবস্থায় উদ্ধার এবং তাদেরকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তাদেরকে পাচার বা জঙ্গিবাদের কোন সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়নি। শুক্রবার বিকেলেই এই তিন শিশুকে আদালতে হাজির করে ২২ ধারায় জবানবন্দি গ্রহণ শেষে তাদের বাবা-মায়ের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। তিনছাত্রী নিখোঁজের ঘটনায় জেলা কারাগারে আটক ওই মাদরাসার মুহতামিম মো. আসাদুজ্জামানসহ চারজন শিক্ষকের বিরুদ্ধে মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমন আইনে মামলার ধারা বদল করে তাদের বিরুদ্ধে দায়িত্বে অবহেলাসহ অন্যান্য আরো অভিযোগে মামলাটি চলমান থাকবে বলে জানান পুলিশ সুপার। সাংবাদিক সম্মেলনে পুলিশ সুপার ছাড়াও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. জাহিদুল ইসলাম খান, সহকারী পুলিশ সুপার মো. সুমন মিয়া, ইসলামপুরের ওসি মো. মাজেদুল ইসলাম, জামালপুর সদর থানার ওসি মো. রেজাউল ইসলাম খান ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. মাহমুদুল হাসান মোড়ল উপস্থিত ছিলেন।
×