ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

আরএনপিপিতে বিদ্যুৎ সুবিধা পাবে ১৮ লাখ পরিবার

প্রকাশিত: ২২:০৮, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২১

আরএনপিপিতে বিদ্যুৎ সুবিধা পাবে ১৮ লাখ পরিবার

স্টাফ রিপোর্টার, ঈশ্বরদী ॥ বৃহস্পতিবার সকালে ঈশ্বরদী পৌরসভার দ্বিতীয় তলায় পারমাণবিক তথ্য সেন্টারে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প নির্মাণে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা, রসাটমের নিউক্লিয়ার শিক্ষাব্যবস্থার ভূমিকা ও বিশ্বের অন্যান্য দেশে চলমান প্রকল্পের বাস্তবতায় নিয়ে স্থানীয় সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় আরএনপিপি নির্মাণ কাজের মূল ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান এটোমস্ট্রোয়এক্সপোর্ট (এএসই) কমিউনিকেশনস ডিপার্টমেন্টের সাস্টেইনেবল ডেভেলপমেন্ট এক্সপার্ট নাতালিয়া গঞ্জারোভা, এএসই প্রধান বিশেষজ্ঞ কনস্টান্টিন ফোকিন, এএসই বিশেষজ্ঞ প্রতিনিধি কনস্টান্টিন ফেটস, আলেক্সজান্ডার বাইবাকোভ প্রজেক্টাইলে প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করেন। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প (আরএনপিপি) নির্মাণ ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান রাশিয়ার রসাটমের এটোমস্ট্রোয়একপোর্ট এর (এএসই) উদ্যোগে মতবিনিময়সভা অনুষ্ঠিত হয়। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প নির্মাণ ও রসাটমের নিউক্লিয়ার শিক্ষাব্যবস্থার ভূমিকা ও বিশ্বের অন্যান্য কয়েকটি দেশে চলমান তাদের বিভিন্ন প্রকল্প সম্পর্কে তুলনামূলক বিভিন্ন চিত্রও তুলে ধরা হয়। এসময় এনপিসিবিএল এর জনসংযোগ কর্মকর্তা কাজী মো. ইকবাল হোসেন উপস্থিত ছিলেন। প্রেজেন্টেশনে উপস্থাপন কালে আরএনপিপি নির্মাণ কাজের মূল ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান এটোমস্ট্রোয়এক্সপোর্ট (এএসই) কমিউনিকেশনস ডিপার্টমেন্টের সাস্টেইনেবল ডেভেলপমেন্ট এক্সপার্ট বিশেষজ্ঞ নাতালিয়া গঞ্জারোভা ও এএসই প্রধান বিশেষজ্ঞ কনস্টান্টিন ফোকিন পৃথকভাবে বলেন,রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প (আরএনপিপি) উৎপাদন শুরু হলে দেশের ১৮ লাখ পরিবার সহজ লভ্যে বিদ্যুৎ সুবিধা পাবে। একই সঙ্গে দুই হাজার ৫০০ জন দক্ষ এ দেশীয় জনবল কাজের সুবিধা পাবে। যদিও এখন প্রকল্প নির্মাণ কাজে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে প্রায় ৫০ হাজার পরিবার জড়িত রয়েছে। প্রকল্পটি সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য এক হাজার ৪২৪ জনকে বাংলাদেশে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হবে। উৎপাদন শুরুর পর প্রকল্পের মূল চুল্লির মাত্র ৩০০ মিটার নিকট ফসল চাষাবাদ ও জনগণ বসবাস করতে পারবেন। এতে কোনো সমস্যা হবে না। প্রকল্পের জন্য তাপমাত্রারও কোনো পরিবর্তন হবে না। কারণ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আরএনপিপির প্রকল্পের অনুরূপ অনেকগুলো প্রকল্পের কাজ রাশিয়া চালিয়ে যাচ্ছে। আরএনপিপি সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য গত ২০২০ সালে জানুয়ারি পর্যন্ত প্রকৌশলী, বিজ্ঞানী, ডাক্তার, কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ সর্বমোট ৫৭৮ জনকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া ৮৫০ জনকে রাশিয়ান ফেডারেশনে এবং ৫৭৪ জনকে রাশিয়ান ফেডারেশনের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের সহায়তায় বাংলাদেশে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হবে। একই সময় ২৮৪ জনকে প্রশিক্ষণের জন্য প্রেরণ করা হয়েছে। এর মধ্যে প্রথম পর্যায়ে প্রশিক্ষণ শেষ করে ৭৫ জন দেশে ফিরে এসেছেন। বিশেষজ্ঞরা আরো বলেন, নিউক্লিয়ার ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়ে উচ্চশিক্ষা গ্রহণের জন্য রাশিয়ান সরকার প্রতিবছর বাংলাদেশ থেকে ২০-৩০ জন শিক্ষার্থীকে বিশেষ বৃত্তির মাধ্যমে মস্কো ইঞ্জিনিয়ারিং ফিজিক্স ইনস্টিটিউট শিক্ষার সুযোগ প্রদান করছে। একই সঙ্গে বাংলাদেশের বিভিন্ন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নিউক্লিয়ার সম্পর্কে শিক্ষা প্রদানের লক্ষ্যে চুক্তি করা হয়েছে। যাতে দেশের স্বনামধন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলো নিউক্লিয়ার ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ চালু করতে পারে। আরএনপিপির ১২ শ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন প্রথম ইউনিটে ২০২৩ সালে এবং একই উৎপাদন ক্ষমতা সম্পন্ন দ্বিতীয় ইউনিট ২০২৪ সালে বাণিজ্যিক ভাবে উৎপাদন শুরু করবে। এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি স্বাভাবিকভাবে ৬০ বছরের অধিক সময় ধরে উৎপাদন করবে। এরপর কিছু মেরামত কাজ সম্পন্ন করে এই কেন্দ্রের উৎপাদন আয়ুষ্কাল ১০০ বছর বাড়ানো সম্ভব হবে বলেও বিশেষজ্ঞা আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
×