ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

ঝুঁকিমুক্ত রাখতে হবে শিক্ষার্থীদের

প্রকাশিত: ২১:০৭, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২১

ঝুঁকিমুক্ত রাখতে হবে শিক্ষার্থীদের

মহামারী করোনাভাইরাস কোভিড-১৯ এর কারণে দীর্ঘ বিরতির পর দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আবার খুলেছে। এটিই ছিল করোনাভাইরাস পরবর্তী দেশের পরিস্থিতি স্বাভাবিক পর্যায়ে নিয়ে আসার সর্বশেষ পদক্ষেপ। এর আগে খুলে দেয়া হয় দেশের সম্ভাবনাময় পর্যটন খাত। করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় আরোপিত কঠোর লকডাউন তুলে নেয়ার পর এই দুটি খাতই কেবল এতদিন বন্ধ ছিল। পর্যটন খাত খুলে দেয়ারও বেশ কিছু দিন পর ১২ সেপ্টেম্বর ২০২১ খুলে দেয়া হলো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। শিক্ষার সঙ্গে এদেশের প্রায় প্রতিটি পরিবারই জড়িত। ফলে স্কুল-কলেজ খুলে দেয়ার কারণে স্বভাবতই দেশব্যাপী বয়ে গেছে এক আনন্দের বন্যা। পড়ন্ত মহামারীর মধ্যেও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো যেন ফিরে পেয়েছে প্রাণ। শিক্ষার্থীদের ইউনিফর্ম পরে কাঁধে ব্যাগ ঝুলিয়ে আবার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যাওয়ার সেই আমন্দময় চিরচেনা দৃশ্য দেখা গেল দীর্ঘ ১৮ মাস পর। বাংলাদেশে সর্বশেষ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা ছিল ২০২০ সালের ১৬ মার্চ। তার পরদিন ১৭ মার্চ ছিল জাতীয় ছুটি। সেদিন মুজিব জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে বছরব্যাপী আয়োজনের প্রধান অনুষ্ঠানও হওয়ার কথা ছিল। এ উপলক্ষে বাংলাদেশে আসার কথা ছিল ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির। কিন্তু এরই মধ্যে বাংলাদেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণ ধরা পড়লে তার ওই যাত্রা বাতিল করা হয় শেষ মুহূর্তে। ১৮ এপ্রিল থেকে বাংলাদেশে অনির্দিষ্টকালের জন্য সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেয়া হয়। এমনকি পরবর্তীতে যে পাবলিক পরীক্ষাগুলো হওয়ার কথা ছিল সেগুলোও আর অনুষ্ঠিত হয়নি। বছর শেষে শিক্ষার্থীদের পূর্ববর্তী পরীক্ষাগুলোর ফলাফলের ওপর ভিত্তি করে বার্ষিক পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হয়। আবার বার বার পিছিয়েও এইচএসসি পরীক্ষা গ্রহণ সম্ভব না হওয়ায় একই কায়দায় এই পরীক্ষারও ফল প্রদান করা হয়। যাকে সাধারণভাবে ‘অটোপাস’ বলে অভিহিত করা হয়ে থাকে। এর পর গত দেড় বছরেরও বেশি সময় ধরে দফায় দফায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছুটি বাড়ানো হয়। ফলে স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকায় শ্রেণীকক্ষে কোন পাঠদান সম্ভব হয়নি। কয়েকবার স্কুল-কলেজ খোলার উদ্যোগ নেয়া হলেও পরিস্থিতি অনুকূলে না আসায় সেটাও সম্ভব হয়নি। যদিও উন্নত ও উন্নয়নশীল অনেকে দেশে করোনা কমে আসার পর ঝুঁকি নিয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে আবার খোলা হয়েছে। সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় পুনরায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করা হয়েছে। তবে বাংলাদেশে সেই ঝুঁকি না নিয়ে দফায় দফায় ছুটি বাড়িয়েছে সরকার। ফলে শিক্ষার্থীদের স্কুলে ফেরা আর সম্ভব হয়নি। জাতিসংঘের শিশু তহবিল ইউনিসেফ প্রকাশিত এক নিবন্ধ থেকে জানা যায়, গত মার্চ মাস পর্যন্ত টানা এক বছর পৃথিবীজুড়ে প্রায় সতেরো কোটি শিক্ষার্থী শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হয়েছে। এর মধ্যে প্রায় দশ কোটি শিশুই ছিল ১৪টি দেশের, যেগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ একটি। বিশ্বব্যাংকের এক হিসাব থেকে জানা যায়, ২০২০ সাল নাগাদ বাংলাদেশে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল চার কোটির কিছু বেশি। করোনাভাইরাস মহামারীর কারণে শিক্ষা কার্যক্রম পৃথিবীজুড়েই ব্যাহত হলেও টানা দেড় বছর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার নজির খুব কম দেশেই আছে। শেষ পর্যন্ত অবশ্য সব শঙ্কা উড়িয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো আবার প্রাণ ফিরে পেয়েছে। দিনের হিসাব ধরলে, ঠিক ৫৪৪ দিন পর খুলেছে প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। একদিন পরই খুলেছে মেডিক্যাল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। হবু ডাক্তারদের পদচারণায় আবার মুখরিত হয়ে উঠেছে মেডিক্যাল ক্যাম্পাসগুলো। এখন খোলা বাকি বিশ্ববিদ্যালয়। বিশ্ববিদ্যালয় খোলার আগে শেষ বর্সের পরীক্ষাগুলো আগে সেরে ফেলা হচ্ছে। পরীক্ষা শেষ হলেই শুরু হবে বিশ্ববিদ্যালয় পর্বের ক্লাসও। সে প্রস্তুতিও শুরু হয়ে গেছে। ১৪ সেপ্টেম্বর শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ২৭ সেপ্টেম্বরের পর খুলে দেয়া হবে। ২৭ সেপ্টেম্বরের মধ্যে দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের টিকার জন্য রেজিস্ট্রেশন কাজ শেষ করা হবে। এরপর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাদের একাডেমিক কাউন্সিলের অনুমোদন নিয়ে পাঠদান কার্যক্রম শুরু ও আবাসিক হল খুলতে পারবে। যাই হোক, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার পর করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে ছেলেমেয়েদের ক্লাসে ফেরা ছিল একেবারেই নতুনত্বে ঘেরা। পাঠ্য সামগ্রীর সঙ্গে মুখে মাস্ক, হাতে স্যানিটাইজার, আর সামাজিক দূরত্ব রক্ষা করতে হয়েছে জোরালোভাবে। সবকিছু ছাপিয়ে, শিক্ষার্থীদের স্কুলে ফেরার সে দৃশ্যও ছিল অভাবনীয়। দিনের শুরুতে ঢাকা ও ঢাকার বাইরের অনেক এলাকাতেই দেখা গেছে পথে পথে ইউনিফর্ম পরিহিত ছেলে-মেয়েরা হেঁটে যাচ্ছে। কেউ অভিভাবকের সঙ্গে। কেউ সহপাঠীদের সঙ্গে দল বেঁধে। কেউবা একাকী। তাদের পরনে স্কুলপোশাক। পিঠে ব্যাগ। অনেকটা উৎসবমুখর পরিবেশেই স্কুলগুলোতে শিক্ষার্থীরা প্রবেশ করেছে। স্কুলে প্রবেশের সময় মাস্ক আছে কিনা সেটি যাচাই, না থাকলে বিতরণ, হ্যান্ড স্যানিটাইজার দেয়া এবং শরীরের তাপমাত্রা মাপা হয়েছে। এছাড়া শ্রেণীকক্ষের ভেতরেও সামাজিক দূরত্ব রেখে শিক্ষার্থীদের বসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। স্কুলে-স্কুলে ফুল, চকোলেট দিয়ে বরণ করে নেয়া হয়েছে শিক্ষার্থীদের। রঙিন বেলুন আর সতেজ বাহারি ফুলে সেজেছে শ্রেণীকক্ষ আর বিদ্যাঙ্গন। মুখে মাস্ক পরা অবস্থায় প্রিয় প্রতিষ্ঠানে পৌঁছে সাবান দিয়ে হাত ধুয়ে কিংবা স্যানিটাইজার ব্যবহার করে শিক্ষার্থীরা পৌঁছে গেছে যার যার শ্রেণীকক্ষে। শিক্ষার্থীদের বসার ব্যবস্থাও করা হয়েছে শারীরিক দূরত্ব রেখে। প্রথম দিনে স্বাস্থ্যবিধি মানাতে ব্যস্ত ছিলেন শিক্ষকরাও। দেড় বছর বন্ধ থাকায় ইউনিফর্ম ছোট হয়ে গেছে শিশুদের। তাই নতুন করে কিনতে হয়েছে ইউনিফর্ম, একই অবস্থা জুতার ক্ষেত্রেও। অভিভাবকদের গিয়ে কিনে আনতে হয়েছে নতুন জুতা। আর শ্রেণীকক্ষে ফেরার এই আনন্দ শিক্ষকদের সঙ্গে ভাগ করে নিয়েছে কর্তৃপক্ষও। দেড় বছর ধরে অনলাইনে ক্লাস করা শিক্ষার্থীদের অনেকের জন্য ছিল সরাসরি প্রথম ক্লাস। আবার শ্রেণী কার্যক্রমে ফেরা পুরনো শিক্ষার্থীদের অনেকেই সহপাঠীদের দেখে আবেগ আর ধরে রাখতে পারেনি। ফলে ক্ষণে ক্ষণেই শারীরিক দূরত্ব ভুলে যাচ্ছিল শিক্ষার্থীরা। প্রতিষ্ঠানের গেট পেরিয়েই নিয়মের বেড়াজাল ভুলে দৌড়ে একে অন্যকে জড়িয়ে ধরেছে। এমন পরিস্থিতি সামাল দিতে হিমশিম খেতে হয়েছে শিক্ষকদের। তবে শিশু শিক্ষার্থীদের উচ্ছলতা ছিল নয়ন জুড়ানো। স্কুল-কলেজ খুলে দেয়া হলেও এক্ষেত্রে সরকারের শর্ত রয়েছে। মূলত ১৯ দফা শর্তে স্কুল-কলেজ খুলে দেয়া হয়েছে। এসব শর্ত ঠিক মতো পালিত হচ্ছে কিনা বা স্কুল খোলার পর করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতি কেমন হয় তা নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করবে কর্তৃপক্ষ। এসব শর্ত অনুযায়ী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অবস্থানের সময় শিক্ষক, শিক্ষার্থী এবং কর্মকর্তা, কর্মচারী সবাইকে সবসময় মাস্ক পরতে হবে। শিক্ষার্থীদের তিন ফুট শারীরিক দূরত্বে রাখা ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো প্রতিদিন নিয়মিত পরিষ্কার ও জীবাণুমুক্ত করার কথা আছে। নির্দেশনা অনুযায়ী শ্রেণী কক্ষে ৫ ফুটের চেয়ে ছোট আকারের বেঞ্চিতে একজন ও এর চেয়ে বড় আকারের বেঞ্চিতে দুজন শিক্ষার্থী বসানো যাবে। কর্তৃপক্ষের পরিকল্পনা অনুযায়ী প্রথম দিকে পাবলিক পরীক্ষার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট শিক্ষার্থীরাই বেশি আসবে। বাকিদের স্কুলে আসার জন্য রোটেশন সিস্টেম অর্থাৎ আজ যারা আসবে তারা কাল আসবে না-এই নীতি অনুসরণের পরামর্শ দেয়া হয়েছে। স্কুলগুলোকে পরিচ্ছন্ন ও স্বাস্থ্যসম্মত করা ছাড়াও কোভিড সংক্রান্ত ব্যবস্থা অর্থাৎ হাত ধোয়া, তাপমাত্রা পরীক্ষা ও সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করারও শর্ত রয়েছে। স্কুলে প্রবেশের ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের সারিবদ্ধভাবে প্রবেশ করাতে হবে। স্কুলে আপাতত কোন এ্যাসেম্বলি হবে না। তবে ফিজিক্যাল এ্যাক্টিভিটি বা খেলাধুলা চলবে, যাতে শারীরিক ও মানসিকভাবে ভাল অবস্থানে থাকতে পারে শিক্ষার্থীরা। প্রতিটি প্রতিষ্ঠানকে চেকলিস্ট পূরণ করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠাতে হবে। র‌্যান্ডম স্যাম্পলিং করে সংক্রমণের ঝুঁকি থাকলে বন্ধ করার সিদ্ধান্তও নেয়া হতে পারে। বিদ্যালয়ে ফিরে শিক্ষার্থীদের উচ্ছ্বাস নিয়ে যতটা না আশঙ্কার, তার চেয়ে বেশি ‘ভয়ের’ কারণ হচ্ছে অভিভাবকদের জটলায়। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের পৌঁছে দিয়ে অভিভাবকরা গেটের বাইরে জটলা করে দাঁড়িয়ে বা বসে থাকছেন। এটা ঠিক, শিক্ষার্থীদের প্রিয় প্রাঙ্গণে ফেরার এই আনন্দ ছুঁয়ে গেছে অভিভাবকদেরও। তবু করোনাভাইরাসের সংক্রমণের ঝুঁকি নিয়ে সতর্ক থাকতে হবে তাদের। শুরু থেকেই সরকারের পক্ষ থেকেও করোনা সংক্রমণ রোধে সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহ্বান জানানো হয়েছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শ্রেণীপাঠ অব্যাহত রাখা ও শিক্ষার্থীদের নিরাপদ রাখতে সকলের সহযোগিতা জরুরী। মনে রাখতে হবে, দেশের সব কিছু স্বাভাবিক হয়ে এলেও করোনাভাইরাস এখনও নিঃশেষ হয়ে যায়নি। তবে ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা কমতির দিকে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার দিনেও দেশে কোভিড-১৯ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে সারাদেশে ৫১ জনের মৃত্যু হয়েছে। পরীক্ষার বিপরীতে রোগী শনাক্তের হার ৭ দশমিক ৪৬ শতাংশ। নমুনা পরীক্ষায় শনাক্তের হার ১৬ দশমিক ৫৫ শতাংশ। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গাইডলাইন অনুযায়ী, কোন দেশে স্বাভাবিক অবস্থা ধরা হয়ে থাকে আক্রান্তের হার পাঁচ শতাংশের নিচে নেমে এলে। বাংলাদেশে এখনও পাঁচ শতাংশের নিচে ভাইরাসে আক্রান্তের হার নামেনি। তবে এটি ক্রমশ কমার দিকে থাকা ভাল লক্ষণ। খুব শীঘ্রই যে এই হার পাঁচ শতাংশের নিচে নেমে আসবে তা ট্রেন্ড বা ধারা দেখে বুঝা যাচ্ছে। ফলে শঙ্কার কোন কারণ নেই। স্বাস্থ্য অধিদফতর বলছে, করোনা মহামারীতে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার যে কোন দেশের তুলনায় বাংলাদেশ স্বস্তিদায়ক অবস্থানে রয়েছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ায় শিক্ষক-শিক্ষার্থী সবার মাঝে প্রাণ ফিরে এসেছে। তবে স্কুলের সামনে অভিভাবকরা জটলা করেছেন। আর এই জটলা দেশের করোনা সংক্রমণের বর্তমানের নিম্নমুখিতাকে প্রভাবিত করতে পারে। গত কয়েকটি মাস পুরো বিশ্বের মতো দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়াতেও করোনাভাইরাস ভীষণভাবে আক্রমণ করেছিল। এখনও দেখা যাচ্ছে, এ অঞ্চলের মধ্যে ইন্দোনেশিয়ার পরিস্থিতি অন্য যে কোন দেশের চেয়ে একটু বেশি ঝুঁকির মাঝে আছে। এরপরেই রয়েছে ভারতের অবস্থান। এ দুই দেশে গত এক সপ্তাহে মৃত্যুর সংখ্যা অনেক কম, যদিও প্রতিটি প্রাণই অনেক মূল্যবান। সেই সঙ্গে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার যে কোন দেশের চেয়ে তুলনামূলকভাবে বাংলাদেশ স্বস্তিকর অবস্থায় রয়েছে। বর্তমানে দেশে সংক্রমণের হার ১০ শতাংশের নিচেই রয়েছে, এটি এখন নেমে এসেছে সাত শতাংশে। সংক্রমণের এই নিম্নমুখিতায় স্কুল-কলেজ খুলে দেয়া হয়েছে। এই নিম্নমুখী প্রবণতা ধরে রাখতে অভিভাবকদের দায়িত্বপূর্ণ আচরণ দরকার। এখানে শিশু-কিশোরদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিষয়টি মাথায় রাখতে হবে। একে অপরকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে উদ্বুদ্ধ করতে হবে যেন কোন অবস্থাতেই সংক্রমণের আগের চেহারা ফিরে না আসে। অতিমারী পেরিয়ে নতুন সূর্য উঠেছে দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে। শিক্ষার্থীদের নিয়ে প্রতিষ্ঠানগুলো যেন আবারও হাসছে। এখন চলছে ঘরে ঘরে আনন্দ। সে আনন্দ স্কুল-কলেজে যাবার। অনলাইনের বেড়াজাল পেরিয়ে সশরীরে ক্লাস। ঘরবন্দী থাকার হতাশা আর থাকছে না। এই ধারাকে ধরে রাখতে হবে। আমরা চাই না স্কুলে ফেরা কোন একটি শিশু করোনায় আক্রান্ত হোক। এজন্য শিক্ষক-অভিভাবকদের সব সময় সজাগ এবং সতর্ক থাকতে হবে। আবারও আনন্দমুখর হয়ে উঠুক শিক্ষালয়। সকল শঙ্কা কাটিয়ে শ্রেণীপাঠ অব্যাহত থাকুক। শুভ হোক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের করিডরে শিক্ষার্থীদের আগামী দিনগুলো। তবে অবশ্যই স্বাস্থ্যবিধি মেনে। আমাদের একটি সন্তানও যেন ঝুঁকিতে না পড়ে, সে দায়িত্ব আমাদের সবার। ১৫.০৯.২১ লেখক : সাংবাদিক, জনকণ্ঠ
×