ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

কৃষিপণ্য রফতানি আয়ে ১০০ কোটি ডলারের মাইলফলক

প্রকাশিত: ২২:৩৯, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২১

কৃষিপণ্য রফতানি আয়ে ১০০ কোটি ডলারের মাইলফলক

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ করোনা মহামারীর মধ্যেই গত অর্থবছরে এক বিলিয়ন বা ১০০ কোটি ডলার রফতানি আয়ের মাইলফলক অতিক্রম করেছে দেশের কৃষিপণ্য খাত। চলতি অর্থবছরেও সেই ইতিবাচক ধারা অব্যাহত রয়েছে। চলতি বাজেটে কৃষিপণ্যের ছয় খাতে ১০ বছরের কর অবকাশ সুবিধা দেয়া হয়েছে; তার প্রভাবে রফতানি আরও বাড়বে বলে আশা করছেন রফতানিকারকরা। রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্য ঘেটে দেখা যায়, ১০ বছর আগে ২০১০-১১ অর্থবছরে কৃষিপণ্য রফতানি থেকে ৪০ কোটি ডলার বিদেশী মুদ্রা দেশে এসেছিল। গত ২০২০-২১ অর্থবছরে তা আড়াই গুণের বেশি বেড়ে ১০২ কোটি ৮১ লাখ ডলারে পৌঁছে। বর্তমান বাজারদরে টাকার হিসাবে (প্রতি ডলার ৮৫ টাকা ২০ পয়সা) এই অর্থের পরিমাণ ৮ হাজার ৭৬০ কোটি টাকা। এরমধ্যে প্রক্রিয়াজাত খাদ্যপণ্যের হিস্যাই বেশি। গত চারবছর ধরে খাতটির রফতানি আয় বাড়ছে। অবশ্য করোনার কারণে ২০১৯-২০ অর্থবছরে এ খাতের রফতানি ৫ শতাংশ কমেছিল। সর্বশেষ ২০২০-২১ অর্থবছরে খাতটির রফতানি আয় ১৯ শতাংশ বেড়ে প্রথমবারের মতো ১ বিলিয়ন ডলারের ‘ঘর’ অতিক্রম করে। যদিও পুরো বছরটিই করোনা মহামারীর মধ্যেই কেটেছে। গত অর্থবছরে এ খাত থেকে আশাব্যঞ্জক বিদেশী মুদ্রা আসার পর ১ জুলাই থেকে শুরু হওয়া ২০২১-২২ অর্থবছরে রফতানি আয়ের লক্ষ্য ধরা হয়েছে ১১০ কোটি ৯২ লাখ ডলার। ইপিবির হালনাগাদ তথ্যে দেখা যাচ্ছে, অর্থবছরের শুরুটা বেশ ভালভাবেই হয়েছে। প্রথম দুই মাসে অর্থাৎ জুলাই-আগস্ট সময়ে কৃষিপণ্য রফতানি থেকে ২০ কোটি ৭২ লাখ ৩০ হাজার ডলার আয় হয়েছে। টাকার হিসাবে এই অর্থ ১ হাজার ৭৬৫ কোটি ৫৬ লাখ টাকা। এই দুই মাসে গতবছরের একই সময়ের চেয়ে ১৬ দশমিক ২৫ শতাংশ বেশি বিদেশী মুদ্রা দেশে এসেছে। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে আয় বেড়েছে ৯ দশমিক ২৪ শতাংশ। ইপিবির প্রতিবেদনে দেখা যায়, কৃষি প্রক্রিয়াজাত খাদ্যের মধ্যে বেশি রফতানি হয় রুটি, বিস্কুট ও চানাচুর জাতীয় শুকনা খাবার, ভোজ্যতেল ও সমজাতীয় পণ্য, ফলের রস, বিভিন্ন ধরনের মসলা, পানীয় এবং জ্যাম-জেলির মতো বিভিন্ন সুগার কনফেকশনারি। বিস্কুট, রুটিজাতীয় শুকনা খাবার রফতানি করে বিদায়ী অর্থবছরে দেশীয় কোম্পানিগুলো ২৮ কোটি ৭০ লাখ ডলার আয় করেছে, যা আগের বছরের চেয়ে প্রায় ৪৬ শতাংশ বেশি। এর বাইরে চা, শাকসবজি ও ফলমূলও রফতানি হয়েছে। এক সময় চা রফতানি করে বেশ ভালই আয় করত বাংলাদেশ। কিন্তু এখন তা তলানিতে নেমে এসেছে। গত অর্থবছরে মাত্র ৩৫ লাখ ৬০ হাজার ডলারের চা রফতানি হয়েছে। তবে এখন শাকসবজি রফতানি থেকে বেশ আয় করছে বাংলাদেশ। প্রতিবছরই বাড়ছে এ খাতের রফতানি। গত অর্থবছরে ১১ কোটি ৮৭ লাখ ৩০ হাজার ডলারের বিদেশী মুদ্রা এসেছিল শাকসবজি রফতানি থেকে। এবার লক্ষ্য ধরা হয়েছে ১২ কোটি ডলার। জুলাই-আগস্ট মাসে এসেছে ১ কোটি ৩৭ লাখ ৪০ হাজার ডলার। যা গতবছরের একই সময়ের চেয়ে ১০২ দশমিক ২৬ শতাংশ বেশি। আর লক্ষ্যের চেয়ে বেশি ৩৫ দশমিক ৪৩ শতাংশ। জুলাই-আগস্ট সময়ে শুকনা খাবার রফতানি করে ৫ কোটি ১৩ লাখ ডলার আয় করেছে বাংলাদেশ। তামাক রফতানি করে এসেছে ১ কোটি ৪৬ লাখ ৪০ হাজার ডলার। মসলা রফতানি থেকে আয় হয়েছে প্রায় ১ কোটি ডলার। কৃষিপণ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্প মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ এ্যাগ্রো প্রসেসরস এ্যাসোসিয়েশনের (বাপা) তথ্য অনুযায়ী, কৃষি প্রক্রিয়াজাত খাদ্যপণ্য উৎপাদনের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে পাঁচ শতাধিক প্রতিষ্ঠান। তার মধ্যে বড় ও মাঝারি প্রতিষ্ঠান আছে ২০টি।
×