ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

৭ মাসেও কারাবন্দীদের টিকার আওতায় আনা যায়নি

প্রকাশিত: ২২:১০, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২১

৭ মাসেও কারাবন্দীদের টিকার আওতায় আনা যায়নি

স্টাফ রিপোর্টার, চট্টগ্রাম অফিস ॥ করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে দেশের নাগরিকদের টিকাকরণে গতি বেড়েছে। সংক্রমণের হারও কমে আসছে। তবে টিকা কর্মসূচীর সাত মাসেও কারাবন্দীদের ভ্যাকসিনের আওতায় আনা যায়নি। এ বিষয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা এখনও আসেনি। সমাজ বিশ্লেষকরা বলছেন, বন্দীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিষয়টি অগ্রাধিকার দেয়া সরকারের অন্যতম কর্তব্য। দেশের ৬৮টি কারাগারে থাকা সাজাপ্রাপ্ত ১৭ হাজার কয়েদিকে ঝুঁকিমুক্ত রাখতে কারা অধিদফতর থেকে ইতোমধ্যেই টিকাকরণের প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে ইতিবাচক বার্তা পাওয়া যাবে, এমনই জানিয়েছেন কারা মহাপরিদর্শক। কারা মহাপরিদর্শক (আইজি প্রিজন) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোঃ মোমিনুর রহমান মামুন এ বিষয়ে বুধবার টেলিফোনে জনকণ্ঠকে বলেন, আমরা টিকাকরণের জন্য প্রথমে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠিয়েছি। এরপর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সে চিঠি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে। এখন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তের জন্য অপেক্ষা করছি। জানতে পেরেছি, তারা এ বিষয়ে পজিটিভ। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে বন্দীদের টিকাদানে ‘হ্যাঁ সূচক’ সিদ্ধান্ত দেবেন শুনেছি। এখন শুধু আমরা সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছি। প্রাথমিকভাবে আমরা কয়েদিদের টিকা দেয়ার চিন্তা করেছি। দ্বিতীয় ধাপে হাজতিদের দেয়ার পরিকল্পনা করেছি। কতসংখ্যক কয়েদিকে প্রথম ধাপে টিকাকরণের আওতায় আনা হবে জানতে চাইলে আইজি প্রিজন বলেন, আমরা যখন প্রস্তাব পাঠিয়েছিলাম তখন ১৭ হাজার কয়েদি ছিল। বর্তমানে এর কমবেশি হবে। তবে দেশের ৬৮টি কারাগারের বন্দীদের সুরক্ষার বিষয়টি মাথায় রেখেই আমরা পরিকল্পনা নিয়েছি। উল্লেখ্য, বাংলাদেশে বর্তমানে ৬৮টি কারাগার রয়েছে। এর মধ্যে ১৩টি কেন্দ্রীয় কারাগার ও ৫৫টি জেলা কারাগার। সাজাপ্রাপ্ত কয়েদি ও হাজতিসহ মোট বন্দী সংখ্যা ৮০ হাজারের অধিক। এর মধ্যে সাজাপ্রাপ্ত ১৭ হাজারকে টিকা প্রদানের বিষয়টি অগ্রাধিকার পাচ্ছে। কারণ তারাই মোটামুটি স্থায়ী বন্দী। প্রসঙ্গত, ধারণক্ষমতার তিন চারগুণ বেশি বন্দী রয়েছে দেশের কারাগারগুলোতে। এর মধ্যে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগার আয়তনের দিকে অনেক ছোট। সেখানে বন্দী ধারণ ক্ষমতা ২ হাজার ২৪৯ জনের, এর মধ্যে পুরুষ ২ হাজার ১১৪ এবং নারী ১৩৫। তবে এখন সেখানে সাড়ে ৭ হাজার বন্দী রয়েছে। এর মধ্যে সাজাপ্রাপ্ত কয়েদির সংখ্যা প্রায় সাড়ে সাতশ’। সঙ্কুচিত জায়গায় এর অবস্থান হওয়ায় গাদাগাদি করেই থাকতে হচ্ছে। দেশের অন্য সব কারাগারগুলোও বন্দীতে ঠাসা। কারাবন্দীদের নাগরিক অধিকার যাতে খর্ব না হয় এজন্য তাদের টিকাকারণের জন্য প্রস্তাব দেয় কারা অধিদফতর। সংক্রমণ শুরু পর থেকে এখনও পর্যন্ত কারাগারে বন্দীদের সঙ্গে স্বজনদের সাক্ষাত বন্ধ রয়েছে। স্বাস্থ্যঝুঁকি হ্রাসে এমন সিদ্ধান্ত প্রতিপালন করছে দেশের প্রতিটি কারাগার। শুধু সপ্তাহে ১০ মিনিট টেলিফোনে কথা বলার ব্যবস্থা রেখেছে কারা কর্তৃপক্ষ। তবে এর মধ্যে আদালতের কার্যক্রম শতভাগ চালু হওয়ায় কারাগার থেকে বন্দীরা বিচারিক মামলা প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে আদালতে যেতে হচ্ছে। যার ফলে নতুন করে আবারও স্বাস্থ্যঝুঁকির বিষয়টি সামনে আসে।
×