ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

প্রণোদনা দাবিতে গ্রুপ থিয়েটারের প্রতিবাদ সমাবেশ কাল

প্রকাশিত: ২২:০৫, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২১

প্রণোদনা দাবিতে গ্রুপ থিয়েটারের প্রতিবাদ সমাবেশ কাল

স্টাফ রিপোর্টার ॥ অনেক কিছুর মতো মহামারীর আগ্রাসন প্রভাব ফেলেছে শিল্প-সংস্কৃতি অঙ্গনে। সেই সুবাদে আর্থিকভাবে চরম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সারাদেশের মঞ্চকে আলোকিত করে রাখা নাট্যদলগুলো। প্রতিটি নাট্যদলের সেট, আলোকসজ্জা থেকে সাউন্ড সিস্টেমসহ অনেক কিছুই নষ্ট হয়েছে। এর বাইরে পেশা হারিয়েছে বিভিন্ন নাট্যদলের নাট্যকর্মীরা। স্বভাবতই নাট্যচর্চায় নেমে এসেছে স্থবিরতা। আর সেই ক্ষতি মোকাবেলা করে নাট্যচর্চা অব্যাহত রাখতে সারাদেশের সরকারী মিলনায়তনগুলোর ভাড়া এক বছরের জন্য মওকুফের দাবি উঠেছে। পাশাপাশি নাট্য মঞ্চায়নসহ প্রতিটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের জন্য পাঁচ হাজার টাকা করে প্রণোদনার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশন। এই দাবি জানিয়ে ফেডারেশনের পক্ষ থেকে শিল্পকলা একাডেমির মাধ্যমে সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী বরাবর চিঠি দেয়া হলেও বুধবার পর্যন্ত কোন সাড়া মেলেনি। এমন বাস্তবতায় দাবি আদায়ে কাল শুক্রবার বিকেল পাঁচটায় শিল্পকলা একাডেমির মূল ফটকের সামনে প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করেছে গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশন। এ বিষয়ে শিল্পকলা একাডেমি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, মিলনায়তন ভাড়া মওকুফ করার এখতিয়ার একাডেমির নয় মন্ত্রণালয়ের। যদিও সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী মৌখিকভাবে ভাড়া মওকুফ করার কথা জানিয়েছেন। কিন্তু এ সংক্রান্ত কোন আদেশ এখন পর্যন্ত মন্ত্রণালয় থেকে একাডেমিতে আসেনি। বিষয়টি নিয়ে কথা হয় গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক কামাল বায়েজীদের সঙ্গে। তিনি জনকণ্ঠকে বলেন, আমরা শুধু ঢাকার দলগুলোর জন্য এ দাবি জানাইনি। সারাদেশের সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোর সংস্কৃতিচর্চা গতিশীল করতেই এই দাবি জানানো হয়েছে। করোনার অভিঘাতে সাংস্কৃতিক আয়োজন বন্ধ হয়ে গেছে। তাকে সচল করতে মানুষের মাঝে সাংস্কৃতিক আবহ ফিরিয়ে আনতে সরকারকেই পাশে এসে দাঁড়াতে হবে। আমরা সংস্কৃতিকর্মীদের প্রণোদনা দেয়ার পরিবর্তে সাংস্কৃতিক দলগুলো কর্মকান্ড পরিচালনার জন্য প্রণোদনার কথা বলছি। এটা মানবিক দাবি। মিলনায়তনের ভাড়া না পেলে সরকারের আয় কমে যাবে না। কিন্তু এটুকু প্রণোদনা না পেলে সাংস্কৃতিক কর্মকা- স্থবিরতা কাটিয়ে সচল হওয়ার শক্তি পাবে না। কারণ মহামারীর কারণে এমনিতেই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সাংস্কৃতিক সংগঠনসমূহ। তার ওপর করোনার কারণে মিলনায়তনের মোট আসনের ৫০ শতাংশ ব্যবহার করে অনুষ্ঠান পরিচালনা করতে হবে। এমন প্রেক্ষাপটে মিলনায়তন ভাড়া নিয়ে দর্শকের কাছ থেকে টিকেটের টাকায় খরচ তুলে আনা অসম্ভব। তাছাড়া নাটকের বাইরে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠন আয়োজিত সঙ্গীতানুষ্ঠান, নৃত্যানুষ্ঠান বা আবৃত্তির আসরগুলো উন্মুক্ত থাকে দর্শকের জন্য। এসব অনুষ্ঠান বিনা দর্শনীতেই উপভোগ করেন শ্রোতা-দর্শকরা। সেক্ষেত্রে বর্তমান দুর্দশায় এ ধরনের আয়োজন করা খুবই কঠিন হবে আয়োজকদের জন্য। তাই বাধ্য হয়েই আমাদের হল ভাড়া মওকুফ এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের জন্য প্রণোদনার দাবি জানাতে হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী বরাবর চিঠি দেয়ার সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও কোন সুরাহা হয়নি। তাই আগামীকাল শুক্রবার প্রতিবাদ সমাবেশের ডাক দেয়া হয়েছে। দাবি আদায় না হলে ওই সমাবেশ থেকে বৃহত্তর কর্মসূচী দেয়া হবে।
×