ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

চলচ্চিত্র শিল্প কি ঘুরে দাঁড়াবে?

প্রকাশিত: ২১:০২, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২১

চলচ্চিত্র শিল্প কি ঘুরে দাঁড়াবে?

আনন্দকণ্ঠ ডেস্ক ॥ বেশ কয়েক বছর ধরেই দেশের চলচ্চিত্র শিল্প ও ব্যবসা চরম সংকটজনক কাল অতিক্রম করছে। একের পর এক বন্ধ হয়ে মোট প্রেক্ষাগৃহ চালুর সংখ্যা তিন অংকের নিচে এসে নেমেছে। সিনেমা নির্মাণের সংখ্যাও এক চতুর্থাংশে নেমে গেছে। উপরন্তু গত দেড় বছরেও অধিক সময় ধরে কোভিড -১৯’র আগ্রাসনে অন্যান্য যে কোনো শিল্প ও ব্যবসা অঙ্গনের তুলনায় চলচ্চিত্রের সার্বিক অবস্থা শোচনীয় পর্যায়ে পৌঁছিয়েছে, যেটা আদৌ টিকে থাকবে কিনা সেটাই বড় প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে। সব মিলিয়ে দেশীয় চলচ্চিত্রের অবস্থা অনেকদিন ধরেই নাজুক। এরমধ্যে মড়ার উপর খাড়ার ঘা হয়ে চলে আসে করোনা নামের দানব। সেটার আঁচ চলচ্চিত্রাঙ্গনেও পড়েছে। তবে খুশির খবর হচ্ছে, করোনার কারণে প্রায় দেড় বছর স্থবির থাকার পর আবার মুখর হয়ে উঠছে চলচ্চিত্রাঙ্গন। আগামী মাসে মুক্তির জন্য জমা পড়েছে ৫টি সিনেমার আবেদন। ১ অক্টোবর মুক্তির জন্য আবেদন করেছে চলচ্চিত্র ‘কসাই’। পরের সপ্তাহে ‘ঢাকা ড্রিম’ ও ‘পদ্মাপুরাণ’। ১৫ অক্টোবর ‘চন্দ্রাবতী কথা’ ও আমদানির ছবি ‘বাজি’র শিডিউল বুকিং চাওয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের ধারণা, শিডিউল বুকিংয়ের এই ধারাবাহিকতা সামনে আরও বাড়বে। প্রযোজক ও প্রদর্শক সমিতিতে একের পর এক জমা পড়ছে নতুন সব ছবি মুক্তির আবেদন। এ বছর জানুয়ারিতে একটি, ফেব্রুয়ারিতে তিনটি সিনেমা মুক্তি পায়। মার্চের প্রথম সপ্তাহে মুক্তি পায় ‘চল যাই’, ‘শাহেন শাহ’, ‘হলুদবনি’। বুক করা ছিল ‘শ্বশুরবাড়ি জিন্দাবাদ টু’, ‘ঊনপঞ্চাশ বাতাস’সহ মোট ৮টি সিনেমার শিডিউল। কেবল দর্শক বাড়তে শুরু করেছিল হলে। তখনই শুরু হয় করোনা। রাজধানীর মধুমিতা সিনেমা হলের ব্যবস্থাপক ইফতেখার উদ্দিন নওশাদ বলেন, অক্টোবরের ২ তারিখ থেকে সিনেমা হল খুলব। কলকাতার জিৎ-মিমি চক্রবর্তী অভিনীত ‘বাজি’ সিনেমাটি চালাব। এছাড়া নতুন দেশীয় বাংলা সিনেমাগুলো চলবে। সুদিনের জন্য দেশী-বিদেশী সব ধরনের সিনেমা চালাতে হবে। ঢাকার বাইরে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সিনেমা হলের মালিক বলেন, বাংলাদেশের সিনেমা হলের ব্যবসা শেষ। আমরা অনেক লোকসান গুনেছি। আর গুনতে চাই না। ভাল সিনেমা নিয়মিত মুক্তি না দিতে পারলে এই ব্যবসা শেষ হয়ে যাবে। এদিকে গত এক বছরে ৫০টির বেশি সিনেমা মুক্তির জন্য প্রস্তুত ছিল। কিন্তু করোনার কারণে কোন সিনেমাই মুক্তি পাচ্ছে না। এই ফেব্রুয়ারি মাসে সেন্সর পায় ’ঢাকা ড্রিম’ ছবিটি। তারপর মুক্তির জন্য দু’বার শিডিউল বুকিং করেছিলেন পরিচালক প্রসূন রহমান। করোনার কারণে কোনবারই মুক্তি দেয়া যায়নি। তিনি বলেন, আসছে ৮ অক্টোবর ছবিটি রিলিজ দেব। ৮ থেকে ১০টি হল পেলেই আমরা খুশি। সিনেমা নিয়ে আর বসে থাকতে চাই না। এখন ৬০ থেকে ৬৫টি সিনেমা হল চালু রয়েছে। নিয়মিত নতুন সিনেমা মুক্তি পেতে শুরু করলে বন্ধ কিছু হল চালু হবে বলে আশা করছেন সিনেমা হল মালিকরা। এদিকে নতুন সিনেমার কাজও শুরু হয়েছে। সামনে নতুন বেশকিছু সিনেমার শূটিংও শুরু হবে। কলকাতা থেকে অভিনেতা-অভিনেত্রীও আসার কথা শোনা যাচ্ছে। ঢাকাই চলচ্চিত্রের নতুন মুখ শান্ত খান। ‘টুঙ্গিপাড়ার মিয়া ভাই’ ছবিতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শৈশব, কৈশোরের চরিত্রে অভিনয় করে প্রশংসিত হয়েছেন। শান্ত বলেন, শূটিংয়ের আগে একটি অনুষ্ঠানে নতুন ছবি নিয়ে বিস্তারিত বলব। তার আগে এতটুকু বলতে পারি এ্যাকশন-রোমান্টিক ছবি হবে একটি। চরাঞ্চলে ক্ষমতার টানাপোড়েন ও ভালোবাসার গল্প নিয়ে নির্মিত হতে যাচ্ছে এই ছবি। সিনেমার নাম ‘প্রিয়া রে’। এ ছবির পরিচালক পুজন বলেন, শান্তর সঙ্গে কলকাতার কৌশানীর পর্দা রসায়নটা ভাল জমবে বলে মনে হয়েছে। তা ছাড়া শান্ত ও কৌশানীর সঙ্গে আমাদের আগে আলাদা আলাদা কাজের অভিজ্ঞতা আছে। সে জন্যই দুজনকে একসঙ্গে একটি ছবিতে কাস্ট করলাম। একটা ফ্রেশ জুটি পাবে দর্শক। আবার সিনেমা ঘুরে দাঁড়াবে, এটাই আমার প্রত্যাশা।
×