ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

বিশ্বকাপের চ্যালেঞ্জ নিতে প্রস্তুত অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ

প্রকাশিত: ২১:৩৯, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২১

বিশ্বকাপের চ্যালেঞ্জ নিতে প্রস্তুত অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ

শাকিল আহমেদ মিরাজ ॥ এগিয়ে আসছে টি২০ বিশ্বকাপ। ১৭ অক্টোবর ওমান ও আরব আমিরাতে বসবে ক্রিকেটে ছোট্ট ফরমেটে শ্রেষ্ঠত্বের আসর। ধুন্ধুমার এ টুর্নামেন্টে অংশ নিতে এরই মধ্যে প্রতিযোগিতামূলক প্রস্তুতি সেরে নিয়েছে বাংলাদেশ। জিম্বাবুইয়ে সফরে সাফল্যের পর ঘরের মাঠে অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড-বধ, টানা তিনটি সিরিজ জয়ী টাইগাররা ৩ অক্টোবর ওমানের উদ্দেশে দেশ ছাড়বে। সেখানেই প্রথম রাউন্ডে বি-গ্রুপে ওমান, স্কটল্যান্ড ও পাপুয়া নিউগিনির মুখোমুখি হবে মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের দল। প্রত্যাশিতভাবে রাউন্ড পর্ব উতড়ে গেলে আমিরাতে সুপার-১২-এর আসল লড়াই। যেখানে প্রতিপক্ষ ভারত, পাকিস্তান, নিউজিল্যান্ড, প্রতিটি দলই শিরোপার দাবিদার। কতটা প্রস্তুত বাংলাদেশ? ঘুরে ফিরে আসছে মিরপুরের স্লো পিচ। সাফল্যের মাঝেও বইছে সমালোচনার ঝড়। আমিরাতের স্পোর্টিং উইকেটেই বা কেমন করবে টাইগাররা? ক্রিকেটের জনপ্রিয় সাইট ক্রিকইনফোকে দেয়া দীর্ঘ সাক্ষাতকারে এ নিয়ে কথা বলেছেন মাহমুদুল্লাহ। চ্যালেঞ্জ, নিজেদের শক্তির জায়গা, খুঁটিনাটি আরো অনেক বিষয়েই বলেছেন টাইগার টি২০ অধিনায়ক। অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে জয়ের পরই মাহমুদুল্লাহ জানিয়েছিলেন, জয়ের অভ্যাসটাই বেশি গুরুত্বপূর্ণ। বিশ্বকাপে এটিকেই দেখছিলেন বিশেষভাবে। সেই তিনি বাস্তবতা মেনে নিয়ে বলেছেন শারজা, দুবাই কিংবা আবুধাবিতে বড় স্কোর তাড়া করার চ্যালেঞ্জ থাকবে, ‘আমার মনে হয় দুবাই এবং আবুধাবির উইকেট ব্যাটিংবান্ধব হবে। সম্প্রতি ১২০-১৩০ রান করেও আমরা প্রতিপক্ষকে আটকে রেখে সফল হয়েছি। এটা ঠিক অনুকূল পরিবেশে বোলাররা দারুণভাবে তাদের দায়িত্ব পালন করেছে। বিশ্বকাপে কিন্তু শক্তিশালী দলগুলোর বিপক্ষে নিয়মিত ১৬০-১৮০ রান চেজ করতে হবে। সুতরাং এই জায়গাটায় বেশি চ্যালেঞ্জ থাকবে। আর আধুনিক টি২০তে চ্যালেঞ্জ জয় করার মানসিকতা নিয়েই আমরা মাঠে নামব। অবশ্যই ভয়-ডরহীন ক্রিকেট খেলব, যেখানে ব্যাটসম্যানদেরই বড় রোল প্লে করতে হবে। সেটা করতে পারলে আমরা সেরা দল হিসেবে আবির্ভূত হতে পারব।’ ২০১৯ সালের শেষের দিকে স্থায়ীভাবে টি২০ দলের অধিনায়কের দায়িত্ব পান মাহমুদুল্লাহ। কতটা গুছিয়ে নিতে পারলেন?, ‘করোনার কারণে তখন বেশ কিছুদিন ক্রিকেট বন্ধ ছিল। আমরা একাধিক সিরিজ ও সফর মিস করেছি। কিন্তু এখন পরিস্থিতির পরিবর্তন হয়েছে। জৈবসুরক্ষার কঠোর বিধির সঙ্গে মানিয়ে নিয়ে আমরা তিন ভার্সনেই মাঠে ফিরেছি। এটা দারুণ ব্যাপর যে টান ম্যাচ এবং সিরিজ জয়ের পর ইতিবাচক মানসিকতা নিয়ে বিশ্বকাপে যেত পারছি।’ মাহমুদুল্লাহ কেবল টি২০ অধিনায়কই নন দরের সবচেয়ে অভিজ্ঞ সদস্যও তিনি। সবার সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা তৈরি হয়েছে তার, ‘ব্যাটিংয়ে সাকিব, মুশফিকের সঙ্গে ক্রিজে থাকলে এখন ইশারাতেই আমরা বুঝতে পারি কী করতে হবে। আবার লিটন, সৌম্য, মুস্তাফিজদেরও অনেকদিন হয়ে গেল। বোলিংয়ে সাকিব-মুস্তাফিজের অভিজ্ঞতা আমাদের শক্তির অন্যতম বড় জায়গা। আবার শরিফুল, নাসুম, সাইফুদ্দিনের মতো তরুণরা যখন বোলিং করতে গিয়ে কি করতে হবে, এটা ভেবে দ্বিধান্বিত হয়, আমি বুঝতে পারি এবং এগিয়ে যাই, ওদের মধ্যে স্বস্তি ফিরে আসে। অধিনায়ক হিসেবে আমি এটা ভালই অনুভব করতে পারি।’ ম্যাচের উত্তেজনাকর মুহূর্তেও মাহমুদুল্লাহর অভিব্যক্তিতে খুব একটা পরিবর্তন আসে না। সেটি চাপ কিংবা সাফল্য উভয় ক্ষেত্রেই। এটা কিভাবে সম্ভব? এমন প্রশ্নের জবাবে টাইগার অধিনায়ক বলেন, ‘সত্যি বলতে আমি যে কোন পরিস্থিতিতে শান্ত থাকার চেষ্টা করি। আমার মনে হয় এটা আমাকে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করে। অধিনায়ক হয়ে আমি যদি কনফিউজড থাকি তবে সেটি সতীর্থদের মধ্যে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। তাই যত দ্রুত সম্ভব ঠান্ডা মাথায় সেরা সিদ্ধান্তটা নেয়ার চেষ্টা করি।’ বিশেষ করে টি২০তে, দীর্ঘ ব্যাটিংয়ে ঠাসা স্কোয়াডে অধিনায়ক তার নিজের ব্যাটিং নিয়ে কি ভাবেন, এমন প্রশ্নের জবাবে মাহমুদুল্লাহ বলেন, ‘প্রথমত শুধু টি২০ নয়, আমি তিন ফরমেট নিয়েই ভাবি। আপনি যখন ৬-৭ নম্বরে ব্যাটিং করবেন তখন আপনার এ্যাপ্রোচ এক রকম হবে, আবার ৪-৫ নম্বরে অন্যরকম। সবসময়েই পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নেয়ার চেষ্টা করি। টি২০তে ১২০ স্ট্রাইক রেট অনেকের জন্য স্বস্তির কিন্তু আমি এটিকে ১৩০-১৩৫-এ উন্নীত করতে চাই। আসলে সবকিছু নির্ভর করে পরিস্থিতির ওপর। আপনি কত নম্বরে নামলেন, কত বল মোকাবেলা করলেন, লক্ষ্য তাড়া করছেন কি না, এ সবের ওপর।’ সাকিব-মুশফিকের মতো সাবেক দুই অধিনায়ক গুরুত্বপূর্ণ সময়ে এগিয়ে এসে সবার সঙ্গে কথা বলেন, এটিকেও ইতিবাচক ভাবে দেখেন মাহমুদুল্লাহ।
×