ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

মারুফ রায়হান

ঢাকার দিনরাত

প্রকাশিত: ১৯:৪৯, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২১

ঢাকার দিনরাত

রবিবারে ঢাকার দিনরাত কলামটি লিখতে বসার আগে ঢাকার তাপমাত্রা দেখে নিলাম। ৩৪ ডিগ্রী সেলসিয়াস। কিন্তু অনুভূত হচ্ছে ৪০ ডিগ্রী। ভাদ্র মাসের কঠিন গরম। আজ আবার রৌদ্রকরোজ্জ্বল দিন। আকাশের দিকে তাকালে বোঝা যায় এখন সত্যি শরতকাল। সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবস। প্রচন্ড গরমের মধ্যে আবার যানজটও মাত্রাছাড়া। তবু আজ একটি বিশেষ দিন। সে কথাতেই আসছি। ছাত্র-ছাত্রীদের নতুন ‘ঈদ’ বছরে সব দিবসই একবার করে আসে, ব্যতিক্রম শুধু ঈদ। আসে দুইবার। জন্মদিন, ভালবাসা দিবস, বিবাহবার্ষিকী- এসব ফি বছরই আসে, মাত্র একবার করে। রোববারে একটি দিন এলো দেড় বছরেরও বেশি সময় পরে। কেউ কেউ হিসাব করে বলেছেন ৫৪৪ দিন পরে এসেছে এই বিশেষ দিন। দেশে করোনা আসার পরে সেই যে স্কুল-কলেজ বন্ধ হয়েছিল, তা খুলল এতকাল পরে। বেশির ভাগ শ্রেণীর জন্য সপ্তাহে শুধু একটি দিন, তাও মাত্র দুঘণ্টার জন্যে। হোক না, তবু তো সূচনা হলো। তাই স্কুল-কলেজের অল্পবয়সী ছাত্র-ছাত্রীদের কাছে এটি ‘ঈদ’ ছাড়া আর কি। ভাবছিলাম উপমাটি ঠিক হলো কিনা। আমরা কলাম লেখকরা যেমন করে ভাবি কোমলমতি শিক্ষার্থীরা তেমন করে নাও তো ভাবতে পারে। কিন্তু বিস্ময়ের সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দেখি কুড়িগ্রাম সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের এ বছরের এসএসসি পরীক্ষার্থী ইশরাত জাহান ইতি লিখেছে-আজ ১২ সেপ্টেম্বর! কেমন যেন ঈদ ঈদ অনুভূত হচ্ছে! তার ছোট্ট লেখাটি তুলে দেয়া যাক- ‘আজকের সকালটা সত্যি ঈদের মতো। ঠিক ছোটবেলায় যেমন ঈদের দিন ভোরে উঠে অপেক্ষা করতাম কখন দিনের আলো ফুটবে, কখন গোসল করব আর ঈদের নতুন জামাটা গায়ে দিয়ে বের হব। ঈদের আগের দিনের মতোই প্রস্তুতি নিচ্ছি রাত থেকে। এখন আর কিছুক্ষণের অপেক্ষা! ঈদ ঈদ মনে হবে নাইবা কেন বলুন! আমরা যেমন ঈদ উদযাপন করার জন্য ১১ মাস অপেক্ষা করি, তারপর আসে বহুল প্রতীক্ষিত সেই ঈদের দিন। তবে আমাদের আনন্দটাকে ঠিক ঈদের আনন্দ বললে ভুল হবে; এর থেকে অনেক বেশি। কেননা ১১ মাসের থেকেও বেশি মাস অপেক্ষা করার পর আজকের এইদিন। ঈদের দিন আর আজকের দিনের মধ্যে বিশেষ এক পার্থক্য রয়েছে! ঠিক যেমন পার্থক্যটা অপেক্ষা আর প্রতীক্ষার মাঝে! আর কিছুক্ষণের অপেক্ষা প্রতীক্ষা অবসানের। যাই হোক, সকল শিক্ষার্থী বন্ধুদের জানাই ইদের বিশেষ শুভেচ্ছা। আজ ঈদ উদযাপন হবে, তবে ঈদগাহ প্রাঙ্গণে নয়, বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে।’ আমার চাইতেও সিনিয়র একজন ব্যক্তি, যিনি সরকারের উচ্চপর্যায়ের একজন কর্মকর্তা, তিনি তার ঢাকার বাসার জানালা দিয়ে ছাত্রদের আনন্দের দৃশ্য ভিডিও করেছেন। ভিডিওটি শেয়ার করে লিখেছেন- আবার কলকাকলি, কোলাহল, কিচিরমিচির আবার সবুজ প্রান্তে জীবন পাওয়া । সেন্ট জোসেফ স্কুল। আমার বাড়ির বারান্দা থেকে তোলা ছবি। আমার এক বন্ধু স্ট্যাটাস দিলেন- ‘আজকে বাংলাদেশের সবচেয়ে সুন্দর দৃশ্য - বাচ্চারা স্কুলে যাচ্ছে!’ খানিকপরেই এক ভদ্রমহিলা মন্তব্য করলেন- ‘সুন্দর দৃশ্য হলেও আমি ও আমরা আতঙ্কিত। আল্লাহ বাচ্চাগুলোকে হেফাজত করুন।’ একদিকে উচ্ছ্বাস, অন্যদকে শঙ্কা। এটাই বাস্তবতা। ইংরেজী মাধ্যম স্কুলের দ্বাদশ শ্রেণীর এক ছাত্রকে জিজ্ঞেস করেছিলাম, কেমন লাগছে অনেক কাল পরে স্কুলে যেতে? সে জানালো যে, মা-বাবা চাইলেও সে স্কুলে যাচ্ছে না। তার যাওয়ার ইচ্ছা ছিল, কিন্তু কাছের বন্ধু-সহপাঠীদের কেউই যাচ্ছে না। তার কারণ বয়স আঠারো হয়ে গেলেও তারা ভ্যাকসিন নেয়ার সুযোগ পায়নি। টিচাররা টিকা নিয়েছেন। যদি স্কুল টিকা দেয়ার ব্যবস্থা নেয় কিংবা অন্যভাবে তারা টিকা নিতে পারে তবেই ক্লাসে যাবে। তা না হলে অনলাইন ক্লাসই করবে। যা হোক, সকালে অনলাইনেই স্কুল-কলেজ খোলার প্রতিক্রিয়া দেখছিলাম। সংবাদ-ফিচারগুলোয় চোখ রাখছিলাম। এতে অফিসে বসেও শিক্ষাঙ্গনের উচ্ছ্বাসের উত্তাপ ঠিকই নিতে পারছিলাম। আশিকুজ্জামান লিখেছেন- ‘দীর্ঘ ১৮ মাস পর ক্লাস শুরুর ঘণ্টা পড়ল পোগোজ ল্যাবরেটরি স্কুল এ্যান্ড কলেজের। দেশের অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মতো গত বছরের মার্চে পুরান ঢাকার ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ হয়ে যায়। গতকাল রবিবার খুলেছে প্রতিষ্ঠানটি। সকাল সাড়ে ৮টার দিকে ঘণ্টা বাজিয়ে স্কুলের প্রধান শিক্ষক ক্লাস শুরু করেন আবার। ঘণ্টা পড়ার সঙ্গে সঙ্গে ক্লাস শুরু হয়ে যায়। শিক্ষকরা প্রবেশ করেন ক্লাসে। ক্লাসে শিক্ষকরা প্রবেশ করার পর শিক্ষার্থীরা সবাই উঠে দাঁড়ায়। শিক্ষকদের সম্মান প্রদর্শন করে। ক্লাস শুরুর আগে শিক্ষার্থীরা দীর্ঘদিন পর একে অন্যকে দেখে শুভেচ্ছা বিনিময় করে। গল্প করতে দেখা যায় তাদের। শিক্ষার্থীদের চোখেমুখে ছিল উচ্ছ্বাস। অভিভাবকদের হাত ধরে সকাল থেকে স্কুলে আসতে শুরু করে শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের সবার মুখে মাস্ক থাকলেও অনেক অভিভাবকের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার ক্ষেত্রে অসচেতনতা লক্ষ্য করা যায়।’ ‘স্বাস্থ্যবিধিতে ছাড় নেই তিন স্কুলে’ শিরোনামে মোশতাক আহমেদ লিখেছেন- ‘সকাল পৌনে নয়টা। রাজধানীর ইস্কাটনের বিয়াম ল্যাবরেটরি স্কুলে ফটকের সামনে দাঁড়িয়ে আছেন কয়েকজন অভিভাবক। একজন, দুজন করে শিক্ষার্থী আসছে। ফটকে দাঁড়িয়ে থাকা দায়িত্বরত ব্যক্তিরা তখন শিক্ষার্থীদের স্যানিটাইজার দিয়ে ভেতরে ঢোকাচ্ছিলেন। বাইরে অভিভাবকদের উদ্বিগ্ন চোখ। কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, আজ প্রথম ও পঞ্চম শ্রেণীর ক্লাস রাখা হয়েছে। অভিভাবকদের একজন তাহমিদা আফরোজ বলছিলেন, তার মেয়ে আসফিনুর ইসলাম এখানে প্রথম শ্রেণীতে পড়ে। সকাল ৯টায় তার ক্লাস থাকলেও তিনি ৮টা ৪০ মিনিটেই বাচ্চাকে নিয়ে এসেছেন। তাহমিদা আফরোজ বলেন, বাচ্চা স্কুলে আসতে পেরে অনেক খুশি। গতকাল থেকেই সে প্রস্তুত হয়ে ছিল। বিয়াম ল্যাবরেটরি স্কুলের এ চিত্র দেখে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় অবস্থিত উদয়ন উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ে এসে দেখা গেল, স্কুলের সামনের সড়কের এক পাশে বাঁশের ব্যারিকেড দেয়া। বাইরে তখন অভিভাবকরা অপেক্ষা করছিলেন। তখন সেখানে পঞ্চম শ্রেণীর দুটি ক্লাস শেষ হয়ে গেছে। ভেতর থেকে সারিবদ্ধভাবে শিক্ষার্থীরা বের হচ্ছিল। সবার মুখে মাস্ক। সাবিরা সাদেক এই স্কুলে পঞ্চম শ্রেণীতে পড়ে। ক্লাস শেষে বের হয়ে আসার পর জানতে চাইলে বলল, ক্লাসে ঢুকতে পেরে তার অনেক ভাললাগছে। একই ক্লাসের ছাত্র তাজিন আহমেদের মুখেও ভাললাগার অভিব্যক্তি।’ পাঠক, আজ মঙ্গলবার আপনি এ কলাম পড়ছেন। গতকাল, মানে সোমবারের খবরের কাগজগুলোর প্রথম পাতাতেই মাস্ক পরিহিত শিক্ষার্থীদের শ্রেণীকক্ষে পাঠ নেয়ার, কিংবা দল বেঁধে আনন্দ করার ছবি ছাপা হয়েছে বড় করে। প্রধান শিরোনামই হয়েছে এটি। আগামী দিনগুলোয় প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকেই পর্যবেক্ষণ করতে হবে স্কুল-কলেজ খোলার পর কোনো শিক্ষার্থী করোনা সংক্রমিত হয়েছে কিনা। সেটি বিশ্লেষণ করে এবং সংক্রমণের নিম্নগতির ধারাবাহিকতা সাপেক্ষে ক্লাস করার দিবসের সংখ্যা হয়তো বাড়তে পারে বলে আমরা আশাবাদ রাখতে চাই। বলা দরকার, ১৮ মাস বন্ধ থাকার পর গতকাল সোমবার দেশের মেডিকেল কলেজ হাসপাতালগুলোয় ক্লাস শুরু হয়েছে। সকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ক্লাস শুরুর বেশ আগেই শিক্ষার্থীরা চলে আসেন। কারও জন্য প্রথমবার এই প্রাঙ্গণে পা দেওয়া। আবার কারও হয়তো পুরোনো স্মৃতিতে ফিরে যাওয়া। করোনাকালীন ভিন্ন বাস্তবতা শনিবার ঢাকায় একটি কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে হাইকোর্টের বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম কিছু কথা বলেন, যা এড়িয়ে যেতে পারছি না। তিনি বলেছেন, গত দেড় বছর ধরে অতিমারীর কারণে সামাজিক অস্থিরতা বৃদ্ধি পেয়েছে। মানুষের দারিদ্র্য কিছুটা হলেও বেড়েছে। কর্মজীবী মানুষের উপার্জন হ্রাস পেয়েছে। এসব কারণেই পারিবারিক সহিংসতাগুলো বৃদ্ধি পেয়েছে। সমাজের অর্থনৈতিক অবস্থা ও সামাজিক পরিস্থিতির সঙ্গে অপরাধপ্রবণতা বাড়ে-কমে। পত্রিকায় প্রকাশিত একটি রিপোর্টে দেখলাম, কীভাবে ডিভোর্সের সংখ্যা বেড়েছে। পরিসংখ্যানে এসেছে যে, ৭০ শতাংশ ডিভোর্স নারীরা দিয়েছেন। এর কারণও অনুসন্ধান করার প্রয়োজন রয়েছে। হ্যাঁ ঠিক কথা। বাঙালী নারীর ক্ষেত্রে আমরা অতীতকাল থেকে দেখে আসছি তারা নিজে নির্যাতিত হন, সংসারে অনটন থাকে। তবু বিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত তারা সহসা নেন না। করোনাকালের আগে পর্যন্ত দাম্পত্য সম্পর্কের ইতি টানার ক্ষেত্রে নারীদেরই বেশি এগিয়ে থাকার বাস্তবতা পরিলক্ষিত হয়নি। এখন করোনাকালে সেটি প্রকট হয়ে উঠেছে। জরিপে দেখা গেছে, ঢাকায় প্রতি ঘণ্টায় ভাঙছে কমপক্ষে একটি সংসার। দিনে মোট ৩৮টি বিয়েবিচ্ছেদ হচ্ছে। এক্ষেত্রে ৭০ শতাংশ ডিভোর্স দিচ্ছেন নারীরা। করোনাকাল এসে আমাদের এমন অনেক কিছুর সঙ্গে পরিচিত করিয়েছে, বিচিত্র অভিজ্ঞতা দিয়েছে যার নেতিবাচক প্রভাবের কথা আমরা অস্বীকার করতে পরব না। কথিত তিন ফুট (বা ছয় ফুট) শারীরিক দূরত্বকে আমরা সাধারণভাবে সামাজিক দূরত্ব বলে অভিহিত করেছি। মানুষ সামাজিক জীব। তাই দূরত্ব বজায় রাখলেও তারা সামাজিকই থাকে। যদিও করোনাপূর্ব সামাজিকতা এবং করোনাকালীন, বিশেষত সংক্রমণের উচ্চ ঝুঁকির ভেতর সামাজিকতার মধ্যে বিরাট পার্থক্য রয়েছে। যাহোক, করোনাভীতি এবং করোনা-সতর্কতা বহু মানুষকে অনেকটাই গৃহবন্দী করে ফেলেছে। আবার অনেকেরই জীবন ঘর ও কর্মস্থলের মধ্যে সীমাবদ্ধ করে ফেলেছে। তারপরও বহু মানুষ পূর্বেকার জীবনধারার টানে আড্ডা, সামাজিক অনুষ্ঠানসহ নানা আয়োজনে সামাজিক দূরত্ব ঘুচিয়ে জনসমাবেশে অংশ নিচ্ছেন। তবে এটি আমরা কিছুতেই অস্বীকার করতে পারব না যে করোনা এসে আমাদের প্রত্যেকেরই জীবন কিছু না কিছু বদলে দিয়েছে, তাতে কেবল বিধিনিষেধ আর বিচ্ছিন্নতারই অভিজ্ঞতা। এই যে পরিবর্তিত জীবনধারা তাতে কি মানুষ একটু অসহিষ্ণু হয়ে পড়েছে? কাছের মানুষের সঙ্গে তার দূরত্ব তৈরি হচ্ছে? নেতিবাচক সংবাদটি পড়ে আমরা আমাদের দুশ্চিন্তা দূরে রাখতে পারছি না। শুধু ঢাকাতেই নয়, দেশে বাড়ছে বিয়েবিচ্ছেদের প্রবণতা। আগেই বলেছি এর ৭০ শতাংশ ডিভোর্সই দিচ্ছেন নারীরা। দাম্পত্য না টেকার কিছু সাধারণ এবং কিছু অস্বাভাবিক কারণ বিদ্যমান থাকে। অর্থনৈতিক সঙ্কটে সংসারে অশান্তি একটি বহু পরিচিত বিষয়। এ কারণেও ভাঙ্গন ধরে অনেক সংসারে। রাজধানী ঢাকায় গত বছরের চেয়ে এ বছর প্রতি মাসে ৯৯টি বিচ্ছেদ বেড়েছে। স্বার্থের সংঘাত, অর্থের অভাব, পর নরনারীতে আসক্ত ও মাদকাসক্ত হয়ে পড়া, যৌতুক, মতের অমিল আর আত্মসম্মান মোকাবেলায় চূড়ান্ত হচ্ছে বিয়েবিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত। পত্রিকার প্রতিবেদনে এসব কারণই প্রধান। করোনার ধাক্কা যে দাম্পত্য সম্পর্কেও এসে লেগেছে এটি অস্বীকার করলে সত্যকে কবরচাপা দেয়া হবে। পুরুষতান্ত্রিক সমাজে নারীকেই মূল্য দিতে হয় বেশি, বিবিধ পীড়নের শিকার নারীই হন। তবে এটা কেবল শহরের হিসাব। আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) তথ্য অনুযায়ী, এ বছরের জানুয়ারি থেকে এপ্রিল মাস পর্যন্ত ৭১ জন নারী স্বামী কর্তৃক হত্যার শিকার হয়েছেন। সমাজে এমন সঙ্কট সম্ভবত আগে প্রত্যক্ষ করা যায়নি। করোনাভাইরাস মানুষকে নতুন করে নিঃসঙ্গতা ও বিচ্ছিন্নতার স্বাদ দিচ্ছে। তার মানে এই নয় যে অতিনিকটজনকে পরিত্যাগ- এই উদ্বেগজনক নেতিবাচক কর্মকান্ডের জন্য সব দোষ আমরা ভাইরাসের ওপর চাপাব। মানুষ জগতের সবচেয়ে বুদ্ধিমান ও বিশ্লেষণসক্ষম প্রাণী। তাই করোনাভাইরাসজনিত সামাজিক সঙ্কট থেকে মানুষ বের হয়ে আসবে। সহনশীলতা, সামাজিক মূল্যবোধ, মানুষে মানুষে মায়া, শ্রদ্ধা ও বিশ্বাস কখনই উঠে যেতে পারে না। ভাইরাসের কাছে মানবতা কখনই পরাজিত হবে না। সে জন্য মানুষে মানুষে চাই আরও সংযোগ, সম্পর্ক ও সহানুভূতি। [email protected]
×