ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

আজাহার ইসলাম

শিক্ষার্থীদের ভাবনায় ‘ভূমি আইন’ বিভাগের পথচলা

প্রকাশিত: ২১:৪০, ৫ সেপ্টেম্বর ২০২১

শিক্ষার্থীদের ভাবনায় ‘ভূমি আইন’ বিভাগের পথচলা

বাংলাদেশে প্রায় ৭৯ শতাংশ মোকদ্দমা ভূমি সম্পর্কিত। এসব জটিলতা নিরসনে দক্ষ জনবল তৈরির লক্ষ্যে ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষে রাবি এবং পবিপ্রবিতে যাত্রা শুরু করে ‘আইন ও ভূমি প্রশাসন’ বিভাগ। পরে ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষে জবিতে ‘ভ‚মি ব্যবস্থাপনা ও আইন’ নামে এবং ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষ থেকে ইবিতে ‘ল এ্যান্ড ল্যান্ড ম্যানেজমেন্ট’ নামে যাত্রা শুরু করে বিভাগটি। চারটি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম ব্যাচের শিক্ষার্থীদের পথচলা কেমন ছিল? হামাগুড়ি দিয়ে শুরু, নিজের পায়ে ঁহাঁটতে শিখেছি ভর্তির পর নানা চড়াই-উৎরাই পার করেছি। বিভাগের শিক্ষকদের সবসময়ই সঙ্গে পেয়েছি। অন্য বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের কটুকথাও শুনতে হয়েছে। শুরুর দিকে ক্লাসরুম ছিল না। ফুডকোর্ট রুমে ক্লাস করতাম। এক বছর পর নিজস্ব ক্লাসরুম পেয়েছিলাম। ওরিয়েন্টেশনের দিন বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি প্রফেসর ড. বিশ্বজিৎ চন্দ স্যার এগিয়ে যাওয়ার অনুপ্রেরণা দেন। বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলেই আজ এই পর্যায়ে এসে দাঁড়িয়েছে বিভাগটি। বর্তমান সভাপতি সহকারী অধ্যাপক শাহরিয়ার পারভেজ স্যার এবং সহকারী অধ্যাপক রাইসুল ইসলাম স্যারের অবদান অনস্বীকার্য। হামাগুড়ি দিয়ে শুরু করেছিলাম, বিভাগের শিক্ষকদের হাত ধরে, সকল প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে, নিজের পায়ে হাঁটতে শিখেছি। সাঈদা আফরিন আইন ও ভূমি প্রশাসন বিভাগ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় পড়াশোনা ও পরীক্ষা পদ্ধতি নিয়ে দ্বিধায় ছিলাম অনুষদের নাম ছিল ‘ভূমি ব্যবস্থাপনা এবং প্রশাসন’। প্রথমে ডিগ্রী বিএসসি থাকলেও পরবর্তীতে এলএলবি তে রূপ নেয়। বাংলাদেশে ভূমি সম্পর্কিত জটিলতা অনেক বেশি এবং দেশে সম্পূর্ণ একটি নতুন বিভাগ খোলার পিছনে হয়তো সরকারের কোন পরিকল্পনা রয়েছে। সেটা ভেবেই পড়ার আগ্রহ তৈরি হয়েছিল। পাশাপাশি মামার অনুপ্রেরণা, মামার সুবাদে ক্যাম্পাসের সিনিয়রদের পরামর্শে এবং পরিবার থেকেও পজিটিভ রেসপন্স পেয়ে ভর্তি হয়ে যাই। ভর্তি হওয়ার পর প্রথম ব্যাচ হিসেবে শঙ্কা ছিল। পড়াশোনার ও পরীক্ষা পদ্ধতি নিয়ে বেশি দ্বিধায় ছিলাম। অনেকেই বলতো স্পেসেফিক জব সেক্টর নেই, ভবিষ্যত অন্ধকার। বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল কাজে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করেছি, যেটা আমাদের প্রধান শক্তি ছিল। তৎকালীন ডিন ও শিক্ষকরা সাপোর্ট দিয়েছেন। পরবর্তীতে অনুষদের নিজস্ব শিক্ষক নিয়োগ হওয়ায় মনের জোর বেড়ে যায়। ক্যাম্পাস আবাসিক হওয়াও অন্যান্য অনুষদের সিনিয়রদের থেকে অনেক সুবিধা পেয়েছি। তরিকুল ইসলাম জয় আইন ও ভূমি প্রশাসন অনুষদ পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ম যাত্রা শুরুর পথ মসৃণ ছিল না নতুন এই বিভাগটির যাত্রা পথের শুরুটা মসৃণ ছিল না। অস্থায়ী অফিস, ছিল না নিজস্ব ক্লাসরুম, সেমিনার বা লাইব্রেরি। বিভাগের চেয়ারম্যান খ্রীষ্টিন রিচার্ডসন ও শিক্ষকদের আন্তরিক প্রচেষ্টায় কিছু দিনের মধ্যেই সকল প্রতিকুলতা অতিক্রম করে স্বয়ংসম্পূর্ণ বিভাগে পরিণত হয়। ভূমি সমস্যা সমাধানে বাস্তবিক ভূমিকা রাখার প্রত্যয়ে গড়ে ওঠে ‘ল্যান্ড ল ক্লাব’। ভবিষ্যতে ভূমি ব্যবস্থাপনা, ভূমি আইনের সংস্কার ও সুষ্ঠু প্রয়োগের ক্ষেত্রে এই বিভাগের শিক্ষার্থীরা অবদান রাখতে বদ্ধপরিকর। প্রথমদিকে নতুন এই বিভাগের ভবিষ্যত নিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে দ্বিধাদ্ব›দ্ব থাকলেও শিক্ষকদের সঠিক দিকনির্দেশনা ও অনুপ্রেরণায় তা কাটিয়ে তারা বিচারক, শিক্ষক, আইনজীবীসহ অন্য যে কোন পেশায় নিয়োজিত হয়ে দেশ সেবার স্বপ্ন দেখে। আরিফুল ইসলাম ভ‚মি ব্যবস্থাপনা ও আইন বিভাগ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় নিজের অজান্তেই অনেক বেশি কিছু পেয়েছি সম্পূর্ণ নতুন বিভাগে ভর্তির পর নানা দুশ্চিন্তা জেঁকে বসেছিল। প্রথম ক্লাসে বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও আইন বিভাগের সিনিয়র প্রফেসর ড. সেলিম তোহা স্যার এই বিভাগ খোলার উদ্দেশ্য ও ভবিষ্যত সম্পর্কে ধারণা দিলে দুশ্চিন্তা দূর হয়। স্যারের থেকে জানতে পারি, এই বিভাগ আইন বিভাগের সকল সুবিধার পাশাপাশি ভূমি বিষয়ে অগ্রাধিকার পাবে। স্যারের কথা শুনে সবার চোখেমুখে নিজের অজান্তেই অনেক বেশি পাওয়ার আনন্দ খেলে যাচ্ছিল। নিজস্ব শ্রেণীকক্ষ না থাকায় একেক সময় একেক কক্ষে ক্লাস করতে হচ্ছে। শ্রদ্ধেয় শিক্ষকগণকেও নানা কষ্টদায়ক মুহূর্ত পার করতে দেখেছি। তবে শিক্ষকরা আন্তরিক সহযোগিতার মাধ্যমে সব বাধা পেরোতে শক্তি যুগিয়ে যাচ্ছে। শুধু ভূমি সংক্রান্ত মামলা জট নিরসন নয়, দেশের ভূমির সঠিক ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে জাতীয় উন্নয়নে ভবিষ্যতে এই বিভাগের শিক্ষার্থীরা গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে। মুনজুরুল ইসমাম নাহিদ ল’ এ্যান্ড ল্যান্ড ম্যানেজমেন্ট ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া
×