ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

গণটিকা কর্মসূচী সফল করতে ব্যাপক প্রচার চালান

প্রকাশিত: ২১:৫৬, ৫ আগস্ট ২০২১

গণটিকা কর্মসূচী সফল করতে ব্যাপক প্রচার চালান

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা করোনাভাইরাস মোকাবেলায় সরকারের গণটিকা কার্যক্রম সফল করতে সারাদেশের মানুষকে উদ্বুদ্ধ করতে ব্যাপক প্রচার চালাতে দলের নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন। এ তথ্য জানিয়ে দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, দলের সকল পর্যায়ের নেতাকর্মী টিকাগ্রহণ করবেন। পাশাপাশি সবাইকে টিকাগ্রহণে উদ্বুদ্ধ করতে ব্যাপক প্রচার চালাবেন। এটা আমাদের দলের নেত্রীর নির্দেশ। বুধবার আওয়ামী লীগের সম্পাদকম-লীর সঙ্গে ঢাকা মহানগর ও দলের সহযোগী-ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকদের নিয়ে অনুষ্ঠিত বিশেষ সভার সূচনা বক্তব্যে রাখতে গিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি দলীয় নেতাকর্মীদের সরকারের গণটিকা কর্মসূচীতে সহযোগিতা করারও জানান। বৈঠকে শোকের মাসের কর্মসূচী যথাযোগ্য মর্যাদায় স্বাস্থ্য সুরক্ষা বিধি মেনে পালন করার ব্যাপারে বিস্তারিত আলোচনা হয়। বঙ্গবন্ধু এভিনিউর আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এ সভায় ওবায়দুল কাদের সভাপতিত্ব করেন। টিকাগ্রহণে দেশের জনগণকে উদ্বুদ্ধ করতে ব্যাপক প্রচার চালানো এবং শোকাবহ আগস্টে দলীয় কর্মসূচী সমন্বয় করতে এ সভার আয়োজন করা হয়। ওবায়দুল কাদের বলেন, সারাদেশের প্রতিটি ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন পর্যায়ে আগামী ৭-১৪ আগস্ট গণটিকা কার্যক্রম শুরু হচ্ছে। সারাদেশে করোনা মোকাবেলায় গণটিকা কার্যক্রম চালানো হবে। এই টিকা কার্যক্রম সফল করতে আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের দলের সভাপতি শেখ হাসিনা নির্দেশ দিয়েছেন। জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন, ওয়ার্ড পর্যায়ে এই গণটিকা কার্যক্রম চালানো হবে। এই কার্যক্রম সফল করতে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের কর্মীদের দায়িত্ব পালন করতে হবে। নিজে টিকা নিতে হবে, মানুষকে টিকা নেয়ার জন্য উদ্বুদ্ধ করতে প্রচার চালাতে হবে। তিনি বলেন, করোনা মহামারীর এই সময়ে জনগণের জীবন ও জীবিকার সুরক্ষায় জননেত্রী শেখ হাসিনার সরকার একনিষ্ঠভাবে কাজ করে যাচ্ছে। সকল প্রতিবন্ধকতাকে ডিঙ্গিয়ে নির্দিষ্ট বয়সসীমার উপরে সকলের জন্য টিকা নিশ্চিত করেছে। আগামী ৭ আগস্ট থেকে দেশের ১৪ হাজার টিকা কেন্দ্রে এক কোটি মানুষকে টিকা প্রদান করা হবে। আমাদের জীবন জীবিকা সচল রাখতে টিকাগ্রহণের কোন বিকল্প নেই। এই বছরের মধ্যে ১০ কোটি লোককে টিকার আওতায় আনার লক্ষ্যে জননেত্রী শেখ হাসিনা বিভিন্ন দেশ থেকে টিকা আমদানির প্রক্রিয়া অব্যাহত রেখেছেন। সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, করোনা সংক্রমণ বেড়েই চলেছে। সবার প্রতি আহ্বান সরকার ঘোষিত বিধিনিষেধ মেনে চলতে হবে। করোনা মোকাবেলায় এবং মানুষের জীবন-জীবিকা রক্ষায় সরকারের নেয়া পদক্ষেপ সুচারুরূপে সম্পন্ন করা হলেও বিএনপি নেতৃবৃন্দ বরাবরের মতো মিথ্যাচার চালিয়ে যাচ্ছে। তিনি বলেন, আগস্ট মাস এলেই বিএনপির গাত্রদাহ বেড়ে যায়। ইতিহাসকে অস্বীকার করতে চায়, শাক দিয়ে মাছ ঢাকার চেষ্টা করে। ওবায়দুল কাদের বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনীদের স্বীকারোক্তিতেই বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের সঙ্গে জিয়াউর রহমানের জড়িত থাকার কথা বেরিয়ে আসে। খুনীরা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে বাংলাদেশের অগ্রযাত্রাকে থামিয়ে দিতে চেয়েছিল। বঙ্গবন্ধুর অনুপস্থিতিতে তাঁর কন্যা শেখ হাসিনা দেশকে নেতৃত্ব দিয়ে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। আগস্ট মাস আসলে বিবেকের আয়নার বাঙালী হিসেবে নিজেকে অপরাধী মনে হয় মন্তব্য করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ১৫ আগস্ট নরপিশাচ খুনীরা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা করেই ক্ষান্ত হয়নি, বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের চরিত্র হননের পাঁয়তারা করে। হত্যার বিচার প্রক্রিয়া বন্ধ করতে ঘৃণ্য ইমডেমনিটি অধ্যাদেশ জারি করে। জাতি দীর্ঘ ২১ বছর বিচারহীনতার কলঙ্কের বোঝা বহন করতে বাধ্য হয়। আজকে অনেকে গণতন্ত্র মানবাধিকারের কথা বলেন। কিন্তু বঙ্গবন্ধু হত্যার পর দীর্ঘ ২১ বছর আমরা বিচার চাইতে পারিনি। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পরে বেনিফিসিয়ারি একটি চিহ্নিত মহল জঘন্যতম হত্যাকাণ্ডের আলামত দলিল দস্তাবেজ নষ্ট করে ফেলার অপচেষ্টায় লিপ্ত ছিল। বিএনপির প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে করোনা মোকাবেলার সকল ব্যবস্থাপনা সুচারুরূপে সম্পন্ন করা হলেও বিএনপি নেতৃবৃন্দ একের পর এক নির্লজ্জ মিথ্যাচারে লিপ্ত হয়েছে। জনগণের প্রতি আমাদের আহ্বান থাকবে, মিথ্যাবাদী এই গোষ্ঠীকে বরাবরের ন্যায় প্রত্যাখ্যান করতে হবে। বিএনপি ইতিহাস থেকে শিক্ষা নেয়নি। ’৭৫-এর ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের পাশাপাশি এ জাতিকে আবার নেতৃত্বশূন্য করার লক্ষ্যে তারেক রহমানের মদদে রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করে ২১ আগস্ট শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে নারকীয় গ্রেনেড হামলা চালানো হয় অভিযোগ করে ওবাযদুল কাদের বলেন, খুনের রাজনীতি এবং খুনীদের পৃষ্ঠপোষকতা করাই বিএনপির দলীয় আদর্শে পরিণত হয়েছে। সভায় আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী, কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক, আবদুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, হুইপ আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, এস এম কামাল হোসেন, মির্জা আজম, এ্যাডভোকেট আফজাল হোসেন, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক এ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাস, সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, শ্রম সম্পাদক হাবিবুর রহমান সিরাজ, ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক প্রকৌশলী আবদুস সবুর, মহিলা বিষয়ক সম্পাদক মেহের আফরোজ চুমকি, শিক্ষা সম্পাদক সামছুন্নাহার চাঁপা, দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, উপ-প্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, উপ-দফতর সম্পাদক সায়েম খানসহ মহানগর আওয়ামী লীগ এবং সহযোগী সংগঠনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকরা উপস্থিত ছিলেন।
×