ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

সেবা সুখ দেয়

প্রকাশিত: ২০:৪১, ৫ আগস্ট ২০২১

সেবা সুখ দেয়

সেবা শব্দের মাত্র দুটি বর্ণ হলেও এই শব্দের তাৎপর্য বর্ণনা করতে গেলে হয়ত মহাকাব্য হয়ে যাবে। কারও চোখে অশ্রæ দেখলে মনের মধ্যে তোলপাড় করে-এটা সেবা নয়। সেবা হচ্ছে চোখের অশ্রুর কারণ দূর করা। কারও মুখে হাসি ফোটানোই সেবা। কিছু কাজ, কিছু উপকার যা অন্যকে সুখের পেলব স্পর্শ দেয় তাই সেবা। বিশ্বব্রহ্মাণ্ড মহান আল্লাহ অধিক মমতায় বানিয়েছেন। তাই তাঁর সৃষ্টিকে ভালবাসার সারৎসারে মায়ায় জড়াজড়ি করে মিশে থাকতে হয়। সবকিছুই একদিন কালের গর্ভে শেষ হয় কিন্তু মানুষ তার কর্মের পাল তুলে জেগে থাকে মহাকালের মাঝে। সেবা দিয়ে, কাজ দিয়ে সময়ের সমুদ্রে বয়ে যায় সবাই-ই। ভাল ও মন্দের অবস্থান পাশাপাশি। মানুষই জান্নাত, মানুষই জাহান্নাম। ভাল কাজের ঘ্রাণ তৃপ্তির মাদকতা ছুঁয়ে যায়। আবার খারাপ কাজের দুর্গন্ধ আমাদের তাড়িত করে। গত বছর থেকে বিশ্ব মৃত্যুসম এক অন্ধকারে হারিয়ে যাচ্ছে। করোনা অতিমারীর কারণে আপনজনেরাও পর হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু বন্ধন তো আর ছিন্ন করা যায় না। তাই দেখি পরিবারে কেউ আক্রান্ত হলে আক্রান্ত ব্যক্তির পাশ ছাড়ে না। কেবলমাত্র পারিবারিক এক অদৃশ্য সুতোর বন্ধনে আবদ্ধ থাকতেই আক্রান্ত ব্যক্তির পিছু ছাড়ে না। শক্তি, সাহস আর ভাললাগার পারঙ্গমতায় আপন মানুষরা আরও আপন হয়ে যায়। বিপদে আপনরাই পাশে থাকবেন। অবশ্য এর ব্যতিক্রমও আছে। হাসপাতালে রোগীকে রেখে পলায়ন বা মৃতকে রেখে আত্মীয়-স্বজনদের দায়িত্বহীনতার পরিচয় আমাদের দৃষ্টিকে ঝাঁপসা করে তোলে। হাসপাতালের ডাক্তার বা নার্সরা প্রথমসারির সেবার এক অনন্য দৃষ্টান্ত। তারাও মানুষ, তাদেরও ভয় হয় কিন্তু সেবা পরম ধর্ম। সেবার মোহনীয়তায় মুগ্ধ হয়ে রোগীর সেবা করেন। সম্পর্কের দিক দিয়ে রোগীরা ভাই-বোন, আত্মীয়-স্বজন না হলেও যে আবেগীয় ভাবনায় সেবা করেন তার ব্যাখ্যা বা মূল্যমান করা যাবে না। সেবার কাছে উনারা নিজেদের বিকিয়ে দিয়েছেন। এই মহামারীতে অনেক ডাক্তার ও নার্স মারা গেলেও উনারা পিছিয়ে থাকেননি। তারা সময়ের চাদরে দায়িত্বের জটিল অবয়বে নিজেদেরকে জড়িয়ে রেখেছেন। সবার ক্ষেত্রে এটাই হওয়া উচিত। কাটাখালী, রাজশাহী থেকে
×