ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ফুটবলের ফাইনালে ব্রাজিল

প্রকাশিত: ২২:১৩, ৪ আগস্ট ২০২১

ফুটবলের ফাইনালে ব্রাজিল

জাহিদুল আলম জয় ॥ বিশ্বরেকর্ড গড়ে অলিম্পিক ফুটবলের (পুরুষ) ফাইনালে উঠেছে ব্রাজিল। মঙ্গলবার জাপানের টোকিওর কাশিমা স্টেডিয়ামে প্রথম সেমিফাইনালে ভাগ্যনির্ধারণী টাইব্রেকারে মেক্সিকোকে ৪-১ গোলে হারিয়েছে সেলেসাওদের যুব দল। এর আগে নির্ধারিত ৯০ মিনিট ও অতিরিক্ত ৩০ মিনিটের খেলা গোলশূন্য অমীমাংসিত ছিল। শিরোপা লড়াই অর্থাৎ স্বর্ণপদক নির্ধারণী ম্যাচে আগামী শনিবার বিকেল ৫টা ৩০ মিনিটে স্পেনের মুখোমুখি হবে ব্রাজিল। গত রাতে দ্বিতীয় সেমিফাইনালে অতিরিক্ত সময়ের ১১৫ মিনিটে মার্কো এ্যাসেনসিওর গোলে স্বাগতিক জাপানকে ১-০ ব্যবধানে হারিয়েছে স্পেনের যুবারা। দু’দলের নির্ধারিত ৯০ মিনিটের খেলা গোলশূন্য ড্র থাকার পর ম্যাচ গড়ায় অতিরিক্ত ৩০ মিনিটে। সেখানেও ম্যাচটি অমীমাংসিত থাকার পথে ছিল। কিন্তু খেলা শেষের মাত্র পাঁচ মিনিট আগে রিয়াল মাদ্রিদ তারকা এ্যাসেনসিও চোখ ধাঁধানো গোল করলে কপাল পোড়ে স্বাগতিক জাপানের। এখন শুক্রবার তৃতীয় স্থান নির্ধারণী ম্যাচ অর্থাৎ ব্রোঞ্জপদকের লড়াইয়ে মেক্সিকোর বিরুদ্ধে খেলবে জাপানী যুবারা। মেক্সিকোকে হারিয়ে ইতিহাসের একমাত্র ও প্রথম দেশ হিসেবে টানা তিন বিশ্বকাপ (১৯৯৪, ১৯৯৮, ২০০২) ও অলিম্পিক ফুটবলের (২০১২, ২০১৬, ২০২০/২১) ফাইনালে খেলার বিরল রেকর্ড গড়েছে ব্রাজিল। টানা তিন বিশ্বকাপের মধ্যে ১৯৯৪ ও ২০০২ সালে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হয় বিখ্যাত সাম্বা ছন্দের দেশ। কিন্তু ১৯৯৮ সালের ফাইনালে হেরে যায় ফ্রান্সের কাছে। অন্যদিকে লন্ডনে হওয়া ২০১২ সালের অলিম্পিক ফুটবলের ফাইনালে উঠেছিল ব্রাজিল। কিন্তু স্বর্ণের লড়াইয়ে ২-১ গোলে হেরে গিয়েছিল মেক্সিকোর কাছে। এবার সেই দলটিকে হারিয়েই রেকর্ড টানা তৃতীয়বার ফাইনালে উঠেছে পেলের দেশের যুবারা। এরপর ২০১৬ সালে নিজ দেশের রিও অলিম্পিকের ফাইনালে প্রথমবার শিরোপা জয় করে ব্রাজিলের যুব ফুটবল দল। নেইমারের নেতৃত্বে সেবার জার্মানিকে টাইব্রেকারে হারিয়েছিল বিশ্ব ফুটবলের অন্যতম জনপ্রিয় দলটি। গত দুইবারের ধারাবাহিকতায় এবারও অলিম্পিক ফুটবলের ফাইনালে উঠে এসেছে ব্রাজিল। এবার মুকুট ধরে রাখার লড়াইয়ে ফলাফল কি হয় সেজন্য অপেক্ষা আর তিনদিনের। অবশ্য বিশ্বকাপ ও অলিম্পিক দু’টোতেই না পারলেও ভিন্ন ভিন্ন আসরে টানা তিনবার করে ফাইনালে খেলার রেকর্ড আরও আছে। অর্থাৎ অলিম্পিকে না পারলেও ফিফা বিশ্বকাপে জার্মানি টানা তিনবার ফাইনাল খেলেছে ১৯৮২, ১৯৮৬, ১৯৯০ সালে। আর অলিম্পিকে টানা তিনবার ফাইনাল খেলেছে যুগোসøাভিয়া ১৯৪৮, ১৯৫২, ১৯৫৬ সালে। মেক্সিকো ও ব্রাজিলের সেমির লড়াই হয়েছে সেয়ানে সেয়ানে। শুরু থেকেই আক্রমণ ও পাল্টা আক্রমণে ম্যাচ উপভোগ্য হয়ে ওঠে। কিন্তু গোল মিসের মহড়ার কারণে কোনো দলই প্রতিপক্ষের জাল খুঁজে পায়নি। যে কারণে নির্ধারিত ৯০ মিনিট শেষ হয় গোলশূন্যভাবে। এরপর অতিরিক্ত ৩০ মিনিটের খেলা হয়। সেখানেও দু’দলের ফুটবলাররা জাল খুঁজে পেতে ব্যর্থ হন। অবশেষে ম্যাচের ভাগ্য নির্ধারণ হয় ভাগ্যনির্ধারণী টাইব্রেকার অর্থাৎ পেনাল্টি শূটআউটে। সেখানে ব্রাজিল তাদের প্রথম চার শটেই গোল করে। গোলগুলো করেন যথাক্রমে অধিনায়ক দানিয়েল আলভেজ, গ্যাব্রিয়েল মার্টিনেল্লি, ব্রুনো রড্রিগুয়েজ ও জেসুস রেইনিয়ের। অন্যদিকে মেক্সিকো প্রথম দুই শট থেকে গোল করতে ব্যর্থ হয়। প্রথমে এডুয়ার্ডো এ্যাগুইরের দুর্বল শট ব্রাজিল গোলরক্ষক সান্টোস সহজেই ফিরিয়ে দেন। এরপর জোহান ভাসকুয়েজের দ্বিতীয় শট সাইডপোস্টে লেগে প্রতিহত হয়। এরপর তৃতীয় শটে কার্লোস রড্রিগুয়েজ গোল করলেও ব্রাজিল তাদের চার নম্বর শট মেক্সিকোর জালে পাঠালে ফাইনাল নিশ্চিত হয়ে যায় রেকর্ড সর্বোচ্চ পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন দেশের যুবাদের।
×