ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

সপ্তাহে ১ কোটি টিকা

প্রকাশিত: ২০:২৩, ৪ আগস্ট ২০২১

সপ্তাহে ১ কোটি টিকা

করোনার দুঃসহ সংক্রমণে বাংলাদেশ বিপন্ন। প্রাণঘাতী এই কালব্যাধিকে নিয়ন্ত্রণে আনতে স্বাস্থ্য সুরক্ষার সমস্ত বিধিকে আমলে নেয়া জরুরী। আক্রান্ত এবং মৃতের সংখ্যা বেড়ে যাওয়া এবং সারা দেশে করোনা সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ায় আমরা উদ্বিগ্ন। করোনার নৃশংস এই ছোবলে অবরুদ্ধতার জাল ফেলা হলেও ব্যাধিটিকে সমূলে বিনাশ করার পরিবেশ তৈরি করা সময়ের অনিবার্য দাবি। বাংলাদেশও টিকা কার্যক্রম গ্রহণের মাধ্যমে করোনাকে নিরাপদ দূরত্বে রাখার কর্মতৎপরতায় শামিল হয়েছে। ফেব্রুয়ারি মাস থেকেই আমরা টিকা কার্যক্রমে আসতে পারলেও খুব অল্পসংখ্যক মানুষ তার অংশীদার হতে পেরেছে। প্রথমেই ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটে উৎপাদিত অক্সফোর্ড এ্যাস্ট্রাজেনেকার সংগৃহীত টিকাই বাংলাদেশে প্রয়োগ করা সম্ভব হয়েছে। ভারত সরকার আমাদের কিছু টিকা উপহারও পাঠিয়েছে। পরবর্তীতে চুক্তির নিয়মে আরও কিছু টিকা পাওয়ার কথা থাকলেও ভারতে করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়াতে তা আর সম্ভব হয়নি। এরই মধ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ফাইজার ও মডার্না টিকা বাংলাদেশে এসে পৌঁছায়। আবার চীনও সিনোফার্মের টিকা বাংলাদেশে পাঠালে টিকাদান কর্মসূচী পুনরায় গতি ফিরে পায়। স্বাস্থ্যমন্ত্রী ঘোষণা দেন, দেশ এখন পর্যন্ত টিকা সংস্থানের উদ্যোগ নিয়েছে। সুতরাং টিকা সঙ্কট সামনে আর না হওয়ারই সম্ভাবনা। তবে নিবন্ধন করে বার্তা পাওয়ার অপেক্ষায় আর সময় নষ্ট করার কোন প্রয়োজন নেই। জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি নিয়ে সরাসরি নিকটস্থ টিকাদান কেন্দ্রে এসে টিকা নিতে কোন বেগ পেতে হবে না। ব্যাপক সংক্রমক এই ব্যাধিটি নির্মূল করতে প্রতিষেধক টিকাই এখন একমাত্র অবলম্বন। স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরও আশ্বাস দেন, যেখানে আগে সপ্তাহে ৬০ লাখ মানুষকে ভ্যাকসিনের আওতায় আনা গেছে, সেখানে এখন ১ কোটি জনগণকে টিকার অন্তর্ভুক্ত করা সরকারের নিয়মিত কার্যক্রম। এতে মাসে প্রায়ই ৪ কোটি মানুষকে টিকা গ্রহণ করতে সব সুযোগ-সুবিধা অবারিত করা হয়েছে। ভবিষ্যতে পর্যায়ক্রমে তা আরও সম্প্রসারিত করার কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে। টিকা আসতেও তেমন কোন অসুবিধা হবে না বলে সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়। ইতোমধ্যে টিকা দেয়ার বয়সসীমাও শিথিল করা হয়েছে। ৮ আগস্ট থেকে ১৮ বছরের পর থেকে সবাইকে টিকা দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে সরকার। এমনকি যাদের জাতীয় পরিচয়পত্র নেই তাদেরও টিকা দেয়া হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার ফেব্রুয়ারি মাস থেকে যখন টিকাদান কর্মসূচী শুরু করে, সম্মুখ সারির যোদ্ধা এবং ষাটোর্ধ মানুষের জন্য সেটাও ছিল এক ব্যতিক্রমী কার্যক্রম। তখন অবধি উন্নত বিশ্বের অনেক দেশ টিকার আওতায় আসতে পারেনি। টিকার জন্য আর্থিক সহযোগিতা থেকে বহির্বিশ্বের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রেখে যা যা করা দরকার সবই বর্তমান সরকার করছে। বাঁচা-মরার লড়াইয়ে প্রধানমন্ত্রীর এই অবধারিত উদ্যোগ দেশবাসীর জন্য এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। দ্বিধা নেই অচিরেই আমরা করোনা সংক্রমণ থেকে নিরাপদ দূরত্বে স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় ফিরে যাব। তবে স্বাস্থ্যবিধির নিয়মগুলো জীবনভর অনুসরণ করা ছাড়া অন্য কোন পথ থাকবে না।
×