ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

নীলফামারীতে ফোন করলেই বিনামূল্যে মিলছে অক্সিজেন সেবা

প্রকাশিত: ১৮:৫১, ৩ আগস্ট ২০২১

নীলফামারীতে ফোন করলেই বিনামূল্যে মিলছে অক্সিজেন সেবা

স্টাফ রিপোর্টার,নীলফামারী॥ উত্তরের জেলা নীলফামারীতে দিন দিন বাড়ছে করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। সেই সঙ্গে মারাও যাচ্ছেন অনেকে। সরকারী হাসপাতালে যারা চিকিৎসাধীন রয়েছে তারা সরকারী ভাবেই অক্সিজেন সেবা পাচ্ছেন। যারা নিজবাড়িতে অবস্থান করে চিকিৎসা নিচ্ছেন তাদের অক্সিজেন প্রয়োজন হলে বিনা মূল্যে তা সহায়তা দিতে কাজ করছে বেশ কয়েকটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। ফোন করলেই বিনামূল্যে অক্সিজেন পৌঁছে দিচ্ছেন তারা। নতুন প্রজন্মের ছাত্রছাত্রীরা সব থেকে বেশী এগিয়ে এসেছে বিনা মূল্যে অক্সিজেন সেবা প্রদানে। দিন রাত ২৪ ঘন্টা এই সকল বিভিন্ন সংগঠনের স্বেচ্ছাসেবিরা ছুটে চলেছেন অক্সিজেন নিয়ে। আজ মঙ্গলবার সংশ্লিষ্ট সুত্র মতে চলতি বছরের জুলাই মাস থেকে নীলফামারী জেলায় করোনায় এক ভয়াবহ রূপ ধারণ করে। করোনা ভাইরাসের শিশু, চিকিৎসক, পুলিশ, চীনা নাগরিক, সাংবাদিক, জনপ্রতিনিধি, শ্রমিক কেউ বাদ পড়ছেনা। সরকারি হিসাবে শুধু জুলাই মাসে নীলফামারী জেলায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় হাসপাতাল ও নিজবাড়িতে মৃত্যুবরন করেছে ৩১ জন ও চলতি আগষ্ট মাসে দুইজনের মৃত্যু হয়। যে সমস্ত আক্রান্ত ব্যাক্তিরা নিজবাড়ীতে রয়েছেন তারা চিকিৎসকের পরামর্শে চিকিৎসাধীন রয়েছে। তাদের অনেকের শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়। প্রয়োজন পরে অক্সিজেনের। তাই জেলার বিভিন্ন সেচ্ছাসেবী সংগঠন খবর পেলেই সেই বাড়িতে বিনামূল্যে অক্সিজেন পৌঁছে দিয়ে প্রাণ রক্ষা করতে সক্ষম হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে চিকিৎসকরা সহায়তা করছেন। নীলফামারীর সৈয়দপুরে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মোখছেদুল মোমিনের উদ্যোগে বিনামূল্যে অক্সিজেন সেবা চলছে। ডোমার উপজেলায় নাজমুল ইসলাম নিশাদের নেতৃত্বে ডোমার অক্সিজেন ব্যাংক, ডিমলা উপজেলা ছাত্রলীগের পক্ষে বিনামূল্যে অক্সিজেন সার্ভিস, নীলফামারী জেলা সদরে সেইফ ফাউন্ডেশন ও সৈয়দপুরে ইকু গ্রুপের সংযোগ। সৈয়দপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোখছেদুল মোমিন জানান, তার ব্যাক্তিগত উদ্যোগে এই জরুরি অক্সিজেন সেবা কার্যক্রমে ২০টি অক্সিজেন সিলিন্ডার, ৬০টি ন্যাজাল ক্যানোলা এবং ১০টি নেবুলাইজার রয়েছে। প্রতিদিন আমরা জেলার বিভিন্ন রোগীর বাড়িতে ফ্রি সেবা প্রদান করছি। যাতে করোনা আক্রান্ত রোগীরা অক্সিজেন সংকটে না ভোগেন। এ সেবা কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য ৪০ জনের একটি স্বেচ্ছাসেবক টিমও কাজ করছে। অপরদিকে সৈয়দপুরের ইকু গ্রুপের সংযোগের পক্ষেও এই ফ্রি অক্সিজেন সেবা প্রদান করা হচ্ছে। ইকু গ্রুপে ৫০জন সদস্য রয়েছে। সংযোগ সৈয়দপুরের মাঠ পর্যায়ের টিম লিডার ১০ম শ্রেণীর শিক্ষার্থী সামিউল আলিমও একজন নির্ভিক করোনাযোদ্ধা। সৈয়দপুরে করোনা পরিস্থিতি ভয়াবহ হচ্ছে। এ অবস্থায় বসে নেই তিনি এবং তার সংগঠনের অন্যান্য কর্মীরাও। এদিকে ডিমলা উপজেলায় ছাত্রলীগের পক্ষে ফ্রী অক্সিজেন সেবা সার্ভিস চলছে। বিশেষ করে গ্রামে গ্রামে যে সকল করোনা আক্রান্ত রোগী নিজবাড়িতে রয়েছে তাদের সেবায় ছুটছে এই সংগঠনের নেতাকর্মীরা। নীলফামারী জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি মনিরুল হাসান শাহ আপেল জানান, ফ্রী অক্সিজেন সেবা সার্ভিসে চালুর ক্ষেত্রে সার্বিক সহযোগিতা করেন জেলা আওয়ামীলীগের অন্যতম সদস্য ও বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সহ-সম্পাদক রুহুল আমিন। তার মাধ্যমে আমরা এটি ডিমলা উপজেলা ছাত্রলীগের মাধ্যমে পরিচালনা করছি। নীলফামারী সেইফ ফাউন্ডেশনের সম্বয়ক রাসেল আমিন জানান, এই ফাউন্ডেশনে শতাধিক তরুন তরুনীরা কাজ করছে। আমরা খাদ্য সহায়তা থেকে বিনামূল্যে অক্সিজেন সেবা ও মাক্স দিয়ে থাকি। নীলফামারী সিভিল সার্জন ডাঃ জাহাঙ্গীর কবির বলেন, এই ক্রান্তিকালীন সময়ে সরকারি সেবার পাশাপাশি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন যে সেবামূলক কাজ করছে তা সত্যিই প্রশংসার দাবি রাখে। করোনা রোগীদের অক্সিজেন দিতে সংগঠনের ছেলে মেয়েরা চিকিৎসকদের পরামর্শ নিয়ে কাজ করছে। এছাড়া সকল স্বেচ্ছাসেবীরই পিপিই, মাস্ক পরে প্রটেকশন নিয়ে করোনা রোগীর সেবা দিচ্ছে।
×