ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

আগাছা পরিষ্কারে সাধুবাদ

প্রকাশিত: ২০:১৫, ৩ আগস্ট ২০২১

আগাছা পরিষ্কারে সাধুবাদ

ক্ষমতাসীন দলে আগাছার অভাব হয় না। এই আগাছা যুগ যুগ ধরে ঝাড়ে বংশে বাড়ছে। যখন যে দল ক্ষমতায় আসে এরা সেই দলেই ভিড় জমায়। এরা কখনও ব্যক্তির সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়, আবার কখনও সংগঠনের ‘দোকান’ খুলে নিজেদের জাহির করে। নেতাদের অসতর্কতায় এরা ঢুুকে যায় ক্ষমতার বলয়ে। নিজেদের আখের গোছাতে এরাই দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করে। আওয়ামী লীগ এবার ক্ষমতায় রয়েছে এক যুগেরও বেশি সময় ধরে। এ কারণে সুযোগ সন্ধানীরাও মরিয়া এই দলের কোন না কোন জায়গায় স্থান করে নিতে। এই প্রক্রিয়ায় সংগঠনের নামে ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়ে উঠেছে অসংখ্য সংগঠন। ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণকারী এসব ভুঁইফোঁড় সংগঠনের বিরুদ্ধে কঠোর এ্যাকশনে নামার ঘোষণা দিয়েছে দলটি। দলকে বিব্রতকর অবস্থার মুখে ফেলে দেয়া এসব অবৈধ সংগঠনের কাউকেই ছাড় দেবে না বলে জানিয়েছে আওয়ামী লীগ। সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, স্বীকৃত সংগঠনের বাইরে যে কোন নামের সঙ্গে ‘লীগ’ বা ‘আওয়ামী’ শব্দ জুড়ে দিয়ে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত হওয়ার কোন সুযোগ নেই। দলের নাম ভাঙ্গিয়ে ব্যক্তিস্বার্থ হাসিলের অপচেষ্টাকারীদের বিরুদ্ধে নেয়া হবে প্রশাসনিক ব্যবস্থা। দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ বলেন, অবৈধ সংগঠন করে যারা দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণœœ করছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। ২০১৫ সালে এসব ভুঁইফোঁড় সংগঠনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছিল। তখন অনেককেই গ্রেফতার হয়ে কারাগারে যেতে হয়েছে। এরপরে আরও কিছু সংগঠন গজিয়ে উঠেছে। এবার কাউকে আর ছাড় দেয়া হবে না। একই সঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, দলের কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে আলোচনা করে নেপথ্যে মদদদাতাদের বিরুদ্ধেও কঠোর সতর্কবার্তা দেয়া হবে। আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী দলের সহযোগী ও ভাতৃপ্রতিম সংগঠনের সংখ্যা মাত্র ১০টি। আরও কিছু সমমনা সংগঠন রয়েছে যারা দলের চরম দুঃসময়ে রাজপথে সাহসী ভূমিকা পালন করেছে। দলের নীতিনির্ধারকরা তাদের মর্যাদার সঙ্গেই দেখেন। এর বাইরে কেউ ‘আওয়ামী’ বা ‘লীগ’ শব্দ জুড়ে দিয়ে সংগঠন করতে পারে না। শুধু ভুঁইফোঁড় সংগঠনই নয়, দলীয় নেতাদের অসতর্কতায় তথ্য গোপন করে কিছু বিতর্কিত ব্যক্তি আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপ-কমিটিতে ঢুকে পড়েছে। এদের জন্যও বার বার দলকে বিতর্কিত অবস্থায় পড়তে হয়েছে। গত এক যুগের বেশি সময় ধরে দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সরকার নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। দেশবাসী এই কাজের সুফল পেতে শুরু করেছে। দেশের বড় উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে। বিশ্বমানের ঢাকা-মাওয়া-ভাঙ্গা সড়কে চলতে গিয়ে মানুষ আবেগাপ্লুত হয়ে পড়ছে। ধীরে ধীরে বাস্তবায়ন হচ্ছে পদ্মা সেতু, মেট্রো রেল, কর্ণফুলী ট্যানেল, দেশজুড়ে নির্মাণাধীন এক্সপ্রেসওয়ে। মানুষের মৌলিক চাহিদা অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান এখন অনেকটাই নিশ্চিত। এখন তারা স্বপ্ন দেখে উন্নত জীবন ব্যবস্থার। রাষ্ট্র ও সমাজের এই চোখ ধাঁধানো উন্নয়নে দলটির প্রতি মানুষের সমর্থন এখন তুঙ্গে। এই দলের প্রতি মানুষের প্রত্যাশাও বেড়েছে। মানুষ মনে করে, শেখ হাসিনার সরকার ক্ষমতায় থাকলে একদিন বাংলাদেশ কাক্সিক্ষত শীর্ষে পৌঁছবে। এমন একটি উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় দল ও সরকারের ভাবমূর্তি বিনষ্টকারীদের কিছুতেই প্রশ্রয় দেয়া উচিত হবে না। এদের বিরুদ্ধে দ্রæত ব্যবস্থা গ্রহণের তাগিদ দলের শুভানুধ্যায়ীদের।
×